নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টাচার্চে এমন হামলার ঘটনা সত্যিই অবিশ্বাসযোগ্য। কেউই মেনে নিতে পারছে না যে, শান্তিপ্রিয় দেশের তালিকার শীর্ষে থাকা নিউজিল্যান্ডের মতো দেশে সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে, এই ঘটনা ঘটার পরপরই সারা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মুসলিম কলোনিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এই হামলা কেবল জনগণের ওপর হয়নি, হয়েছে ক্রিকেটারদের ওপরও। নিরাপত্তার ত্রুটিতে এখন কোন দল নিউজিল্যান্ডে সফর করতে না চাইলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে ক্রিকেটের ওপর। এখন প্রশ্ন উঠছে যে, বাংলাদেশে যদি এমন কোন ঘটনা ঘটতো তাহলে বিদেশি দলগুলো এর প্রতিক্রিয়ায় কি করত? এর উত্তর হিসেবে আমি মনে করি বাংলাদেশে যথেষ্ট নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও এমন হামলা হলে বিদেশিরা বাংলাদেশকে কোন সুযোগ দিত না। কিন্তু বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা এমনটা করেননি। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের কথামতো তারা ঘণ্টা দুয়েক ওই স্টেডিয়ামেই অবস্থান করেছেন এবং পরে নিরাপত্তায় হোটেলে ফিরে গেছেন। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় টেস্ট বাতিল করা হলে এটা ক্রিকেট জগতের সবচেয়ে কলঙ্কজনক ঘটনা বলে বিবেচিত হয়। যে অস্ট্রেলিয়া নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশে খেলতে আসতে রাজি হয়নি, সেই অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক দ্বারা বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ওপর হামলার ঘটনাও কলঙ্কজনক। আর এমন মানবতাবিরোধী ঘটনায় হতবিহ্বল পুরো বিশ্ববাসী। জঙ্গী সন্ত্রাসী বাহিনীর ছয়জন সদস্য মিলে তাদের একজনের নেতৃত্বে তারা বর্বরতম হামলা চালিয়েছে পরপর দুটি মসজিদে। খুনিরা তাদের নৃশংসতার এই ভিডিও অনলাইনে প্রকাশ করেছে। তারা বিশ্বনেতাদের চোখ খুলে দেখিয়ে দিচ্ছে তাদের মানসিক উৎকর্ষের চরম পরিণতি কেমন। বিশ্ব নেতাদের চরম লজ্জায় ফেলে দিয়ে জঙ্গীরা তাদের বুঝিয়ে দিয়েছে তাদের শ্বেতাঙ্গ জঙ্গী গ্রুপকে দমন করা সম্ভব নয়। এর মদদদাতাদের খুঁজে বের করতে সবাইকে নজর দিতে হবে। আমরা বিংশ শতকের প্রারম্ভিক সময়ে এসে দেখছি অভিভাবকহীন ছন্নছড়া মুসলিম বিশ্ব, ভারসাম্যহীন বিশ্বব্যবস্থা। এটি ব্রেন্টন ট্যারান্টের ব্যক্তিগত হামলা নয়। এটা ভয়ঙ্কর বিদ্বেষী গোষ্ঠীর হামলা পুরো মুসলিম কওমের ওপর। হাস্যকর হলেও বলতে হয়, আজ আমরা কি সেই কওমের সক্রিয় চেতনায় বৈশ্বিক পরিম-লে অবস্থান করছি। সরাসরি উত্তর আসবে ‘না’। আজ যাদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে তারা কি আসলে যোদ্ধা ছিল? না। কিন্তু কেন এই হত্যাকা-? ধর্মীয় উপসানালয়ে প্রবেশ করে দিন দুপুরে নিরস্ত্র, ইবাদাতরত মানুষের উপর গুলি চালিয়ে হত্যা করার ফলাফল কি, কি হতে পারে খুনিদের উদ্দেশ্য? আমরা এসবকিছু বিবেচনায় নেই বা না নেই আমরা এসব নির্মমতার অবসান ও বিচার চাই। কারণ এটা কোন গেম শো নয়। তাহলে কিভাবে আমরা এসব ভয়াবহ সন্ত্রাসীর মোকাবেলা করবো? অন্যান্য সকলের সহযোগিতা নিয়ে যতোটা পারা যায় সাধ্যমত চেষ্টা করে যাবো- এটা সময়ের জন্য বলছি। হাকাবাকা কিংবা গরম পংক্তি উচ্চারণ করে তো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। আগে সন্ত্রাসীদের জনবিছিন্ন করতে হবে, এদের উন্মাদ উলঙ্গ বেহায়া সংস্কৃতিকে একঘরে করে দিতে হবে। অনেকেই কিংবা সবাই আবেগের কারণে নিজ ধর্মের পক্ষে সোচ্চার হবেন এটাই স্বাভাবিক। আমাদের সকলের একসাথে হয়ে নিউজিল্যান্ড ট্রাজেডির মতো সকল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হবে। লেখক: এসএসসি পরীক্ষার্থী ২০১৯
মুক্তমত: একসাথে কলঙ্কিত নিউজিল্যান্ড! ক্রিকেট জগৎ! মানবতা!
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/