Site icon suprovatsatkhira.com

ফের শুরু রামপালে খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ

খুলনা প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবার বাগেরহাটের রামপালে খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ শেষ হওয়ায় এখন পুরোদমে চলছে বিমানবন্দরের চারপাশের নিরাপত্তাবেষ্টনী ও রানওয়ের নির্মাণকাজ। দেরিতে হলেও বিমানবন্দরের কাজ শুরু হওয়ায় খুশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাদের আশা, এ বিমানবন্দরকে ঘিরে খুলনাঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে রামপাল উপজেলার ফয়লা এলাকায় বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য ৯৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। খুলনা মহানগরী থেকে প্রস্তাবিত বিমানবন্দরের দূরত্ব মাত্র ২২ কিলোমিটার। তবে মাটি ভরাট শেষে এ কাজ আটকে যায়। প্রায় দেড় যুগ কাজ বন্ধ থাকার পর ২০১৫ সালের জুলাইয়ে সরকার নতুন করে ওই স্থানে ‘খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্প’ গ্রহণ করে। এজন্য গত বছরের আগস্টে ওই এলাকায় আরো ৫২৯ দশমিক ৮৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প হিসেবে খানজাহান আলী স্টলপোর্টকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ ১ হাজার ৭১ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের মতামত চাওয়া হয়। এরই ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের সাত সদস্যের একটি কমিটি প্রস্তাবিত জমি সরেজমিনে পরিদর্শন করে বাজার, স্কুল, মাদ্রাসাসহ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত না করে ‘খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য ন্যূনতম জমি অধিগ্রহণের সুপারিশ করে। কমিটি এ ব্যাপারে ২০১৬ সালের ১২ মে প্রতিবেদন দাখিল এবং ১৫ মে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) চিঠি দেয়। পরে সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ওই বছরের ১৮ অক্টোবর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
সূত্র আরো জানায়, মূল বিমানবন্দরের নকশা তৈরির জন্য এরই মধ্যে একটি বিদেশী প্রতিষ্ঠানকে কনসালট্যান্ট হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। বিমানবন্দর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৪৫ কোটি টাকা। তবে বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য থোক বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ৪৩ কোটি টাকা। সরকার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় এ বিমানবন্দর নির্মাণের চেষ্টা করছে। এজন্য কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগকারী খোঁজা হচ্ছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২০ সালের জুনে। সম্প্রতি বিমানবন্দরের চারপাশে নিরাপত্তাবেষ্টনী ও রানওয়ে নির্মাণ শুরু হয়েছে। শিগগিরই ফিজিক্যাল (ভৌত) কাজও শুরু হবে।
এদিকে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নির্মাণাধীন বিমানবন্দরটি পরিদর্শন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। এ সময় তিনি বলেন, খানজাহান আলী বিমানবন্দরের পাশে মোংলা বন্দর, রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ও মোংলা শিল্পাঞ্চল রয়েছে। তাই এ বিমানবন্দর বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক হবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, রামপালে বিমানবন্দর চালু হলে রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত সহজ হবে। এতে পুরো খুলনাঞ্চলেই ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা হবে।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিমানবন্দরটি নির্মাণ হলে খুলনা ও মোংলায় নতুন নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপনে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী হবেন। এতে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে আবার গতি আসবে।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) খুলনার সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, বিমানবন্দর না থাকায় শিল্পনগরী খুলনা, মোংলা বন্দর ও মোংলা ইপিজেডে অনেক ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী আসতে আগ্রহী হন না। এছাড়া অনেক পর্যটক সুন্দরবন ভ্রমণে আসতে চান না। সে কারণে দ্রুত বিমানবন্দর নির্মাণ শেষ করা প্রয়োজন। এতে পুরো দেশের অর্থনীতিতেই গতি আসবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version