যশোর প্রতিনিধি: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম। হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডে রয়েছে স্থান সংকট। নেই পর্যাপ্ত ইনকিউবেটর, ফটোথেরাপি মেশিন, নেবুলাইজার, বেবি ট্রলি, এমনকি স্যালাইন স্ট্যান্ডও। ফলে ওয়ার্ডটিতে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
হাসপাতালের প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয় যশোর জেনারেল হাসপাতাল। এ সময় হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের জন্য পাঁচটি ইনকিউবেটর, ছয়টি ফটোথেরাপি মেশিন ও বিভিন্ন সময় কয়েকটি সাকার মেশিন এবং দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার বরাদ্দ দেয়া হয়। নবজাতকদের জন্য ২০১১ সালে ওয়ার্ডটিতে স্থাপন করা হয় নিওনেটাল ব্লক। তখন এসব সরঞ্জাম ওই ব্লকে স্থানান্তর করা হয়। যার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হয় হাসপাতালে শিশু ও নবজাতকদের উন্নত চিকিৎসা। কিন্তু বর্তমানে নেবুলাইজার ও ইনকিউবেটরের মতো চিকিৎসা সরঞ্জাম পর্যাপ্ত সংখ্যক না থাকায় নিওনেটাল ব্লকটির কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, বর্তমানে শিশু রোগীদের জন্য নেবুলাইজার রয়েছে মাত্র একটি। একটি করে রয়েছে ইনকিউবেটর ও সাকার মেশিন। এছাড়া তিনটি ফটোথেরাপি মেশিন, স্যালাইন ঝোলানোর চারটি স্ট্যান্ড ও দুটি অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে, যা ভর্তি হওয়া শিশু রোগীর সংখ্যার তুলনায় অনেক কম।
শিশু ওয়ার্ডের রেজিস্টার অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে শ্বাসকষ্টসহ ঠা-াজনিত রোগে ৭৫ নবজাতক ও শিশু ভর্তি হয়। এর মধ্যে ওয়ার্ডে অবস্থান করছে ৬৫ শিশু ও নবজাতক। এর মধ্যে ২২টি রয়েছে নিওনেটাল ব্লকে। ফলে নিওনেটাল ব্লকের মাত্র পাঁচটি বেবি ট্রলিতে চাপাচাপি করে চার-পাঁচটি শিশু রাখতে হচ্ছে। জায়গা না থাকায় অনেক শিশুকে ঠা-ার মধ্যে ফ্লোরে রাখতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সেবিকা রাজিয়া সুলতানা জানান, যে পরিমাণ শিশু ভর্তি হয়, সে তুলনায় চিকিৎসাসামগ্রী ও মেশিনারিজের সংখ্যা ওয়ার্ডে নেই। প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাবে জরুরি ভিত্তিতে শিশুদের চিকিৎসা করতে সমস্যা হচ্ছে।
বসুন্দিয়া সিঙ্গিয়া গ্রামের বাসিন্দা বৃষ্টি বলেন, তার দুদিনের নবজাতক নিওনেটাল ব্লকে চিকিৎসাধীন। শ্বাসকষ্টের কারণে ভর্তি করা হলেও নিয়মিত নেবুলাইজার দেয়া যাচ্ছে না। ইনকিউবেটর মাত্র একটি হওয়ায় সেটিতেও শিশুকে বেশিক্ষণ রাখতে পারছেন না।
হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মাহাবুবুর রহমান জানান, বর্তমানে শিশু ওয়ার্ডে উন্নত চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসা সরঞ্জামের ঘাটতি থাকায় সেবাদান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। এমনকি শিশু ওয়ার্ডের একটি চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য সচিবের হাতেও দেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, শিগগিরই এ সংকটের সমাধান হবে।
নানামুখী সংকটে যশোর জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিভাগ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/