ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরার তালা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের যোগসাজশে ৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ব্যক্তিকে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও তালা উপজেলা নির্বাচনের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী এমএম ফজলুল হক এই অভিযোগ করেন। তালা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ও খেশরা ইউপির দুই বারের চেয়ারম্যান ফজলুল হক বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য।
সংবাদ সম্মেলনে ফজলুল হক তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, তিনি দীর্ঘ ৫০ বছর যাবত রাজনীতি করে আসছেন। মুক্তিযুদ্ধের একজন সৈনিক হিসাবে তিনি তালা উপজেলাকে দুর্নীতিমুক্ত করার লক্ষ্যে আগামী ২৪ মার্চ অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন।
তিনি জানান, উপজেলার ৯৩টি কেন্দ্রের ৭৩টিতে যাদের প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে তাদের ৭৩ জনই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। বাকি ২০ জন ঘোষ সনৎ কুমার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ দলীয় নেতা-কর্মী। এ ছাড়া সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রেও পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে।
অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, উপজেলা নির্বাচন অফিসার অপূর্ব কুমার বিশ^াস ও সমবায় পরিদর্শক অজয় কুমার ঘোষ চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষ সনৎ কুমারের সাথে যোগসাজশ করে এই তালিকা তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, তালা সদরের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা কলেজ ও মহিলা কলেজ থেকে কোনো শিক্ষক প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ না পেলেও ঘোষ সনৎ কুমারের নিজস্ব লোক শালিকা কলেজের অধ্যক্ষ বিধান চন্দ্র সাধুসহ একই কলেজের ৯ জন শিক্ষককে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভোটে কারচুপি করার লক্ষ্যে এই কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে বলে দাবি করেন এমএম ফজলুল হক।
তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, যেখানে ৮০ শতাংশ মুসলিম কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের বাদ দেওয়া হলো কেনো। ফজলুল হক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকা যাচাই বাছাই করে নতুন করে প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বেসরকারি সংস্থা রূপালি পরিচালক শফিকুল ইসলাম, সাবেক এলজিইডি কর্মকর্তা আবদুল আজিজ, ঠিকাদার রেজাউল ইসলাম ও মাছ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনের এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজেদা আফরীন বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ তালিকা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বচ্ছতার ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। এর সাথে চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের কোনো সম্পর্ক নেই। কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী আগে যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের বাদ রেখে উপজেলার সকল সরকারি কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া যাদের দক্ষতা আছে তারা অগ্রাধিকার পেয়েছেন।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগে কোনো ধরনের অস্বচ্ছতার প্রশ্নই ওঠে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করলে তার তদন্ত হতেই পারে।