যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে র্যাগিং ও যৌন নিপীড়নের দায়ে দুজনকে আজীবনসহ ৯ ছাত্রকে বহিষ্কার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ন্যূনতম ১২ জন শিক্ষার্থীকে র্যাগিং, যৌন নিপীড়ন ও বিকৃত যৌনচারে বাধ্য করে। এঘটনায় দুইজনকে আজীবন, একজনকে দুই বছর এবং অপর ছয়জনকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের অপরাধের বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ও ভুক্তভোগী সকলেই যবিপ্রবির পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের ছাত্র।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রকৌশলী আহসান হাবীবের সই করা এক অফিসে আদেশে তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হয়। এর আগে র্যাগিং, যৌন নিপীড়ন এবং বিকৃত যৌনাচারে বাধ্যকরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগী ১২ জনসহ মোট ৪০ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পান। একই সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সঙ্গেও তদন্ত কমিটি কথা বলেন। এ ঘটনায় জড়িত ছাত্ররা তদন্ত কমিটির সাথে অসংলগ্ন, ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণ আচরণ করেন এবং তদন্ত কমিটি দেখেন যে, র্যাগিংয়ে জড়িত ছাত্ররা যে অপরাধ করেছে এ বিষয়ে তারা যথাযথ অনুতাপ বা দুঃখ প্রকাশ করেনি। একই সাথে প্রক্টর অফিসে অভিযোগ করায় র্যাগিংয়ের শিকার ছাত্রদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহারে বাধ্য করানো হয়। এ সংক্রান্ত ফোনকলের রেকর্ডও তদন্ত কমিটির হাতে রয়েছে। এ ছাড়া র্যাগিংয়ের শিকার হওয়া একজন ছাত্র ঘটনার পর থেকে চিকিৎসাধীন। ভুক্তভোগী অন্যরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং স্বাভাবিক হতে পারছেন না। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে র্যাগিং রোধ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাসহ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের বহিষ্কারের সুপারিশ করে। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আচরণবিধির ৩ এর (এ ও বি) অনুযায়ী বহিষ্কারের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
আজীবন বহিষ্কৃত হওয়া ছাত্ররা হলেন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র অলি উল্লাহ ও মাহমুদুল হাসান। দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র রজিবুল হক রজব। এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছেন চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবদুল কাদের, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আল মুজাহিদ আফ্রিদি, শহিদুল ইসলাম, রোকনুজ্জামান রোকন, অনুপ মালাকার এবং শামীম বিশ্বাস।
একইসঙ্গে এ ঘটনায় পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আবু বক্কর সিদ্দিকী, দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শতদল পাল ও ইমরান হোসেনকে চূড়ান্তভাবে সতর্ক করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন র্যাগিংসহ শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কর্মকা- জড়িত থাকবে না মর্মে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তাদের আইনানুগ অভিভাবকগণ এবং তিনি নিজে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার না দিলে ওই তিন ছাত্রকেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। (প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
র্যাগিংয়ের দায়ে ২ জনকে আজীবনসহ ৯ ছাত্র বহিষ্কার
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/