Site icon suprovatsatkhira.com

শার্শা-বেনাপোলে ৮২ ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই

শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের শার্শা-বেনাপোলের ৮২ শতাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহিদ মিনার। অথচ সরকারিভাবে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস ও মাতৃভাষা দিবস পালন করার নির্দেশ রয়েছে। তবে এই নির্দেশ মানতে গিয়ে কলাগাছ আর কাঠের শহিদ মিনার বানিয়েই দায়সারা কাজ সারছেন এসব স্কুল কর্তৃপক্ষ।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শার্শা ও বেনাপোলে ২শ’ ৬৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া ১শ’ ২৬টি প্রাথমিক ও প্রি-ক্যাডেট এবং কমিউনিটি মিলিয়ে আরো রয়েছে ৫৪টি বিদ্যালয়। এদের মধ্যে শহিদ মিনার আছে মাত্র ১৮ টিতে। ৩৮টি হাইস্কুলের মধ্যে ২৬টিতে শহিদ মিনার আছে। ১২টি কলেজের মধ্যে মাত্র ৩টিতে শহিদ মিনার আছে। ৩৩টি মাদরাসার মধ্যে একটিতেও কোনো শহিদ মিনার নেই। সব মিলিয়ে অর্ধ-শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার আছে।
নাভারণ ফজিলাতুনন্নেছা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী শারমীন নাহার জানান, আমাদের কলেজে শহিদ মিনার না থাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বুরুজবাগান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হয়। অথচ আমাদের কলেজের পরিচালনা পরিষদে নামী দামী ব্যক্তিরা রয়েছেন। তারা ইচ্ছা করলেই ৭ দিনের মধ্যে একটি শহিদ মিনার নির্মাণ করে দিতে পারেন।
নাভারণ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল জানান, আমাদের কলেজের পাশেই হাইস্কুলের শহিদ মিনার থাকায় এখানে শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও শার্শা-বেনাপোলের অনেক প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নেই। উপজেলার ১২টি কলেজ, ৩৮টি হাইস্কুল, ৩৩টি মাদরাসা ও বহু কিন্ডারগার্টেনের মধ্যে মাত্র ২৯টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার আছে। ৩৩টি মাদরাসার একটিতেও শহিদ মিনার গড়ে ওঠেনি। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণে পত্র দেওয়ার পরও তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। তৃণমূল পর্যায়ে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে বা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা ভালবাসা জানাতে সব প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণ করা প্রয়োজন। শহিদ মিনার নির্মাণে সরকারের পাশাপাশি বিত্তশালীদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, ১৮০টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬২ টিতে কোনো শহিদ মিনার নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণ দরকার বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। তিনি আরো বলেন, সরকারের কাছে শহিদ মিনার নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ চেয়ে একটি পত্র দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক, মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা ও কলেজে শহিদ মিনার না থাকার কথা স্বীকার করে জানান, উপজেলার প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার থাকা উচিত। শহিদ মিনার নির্মাণে সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। এটা বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ স্থানীয়ভাবে নির্মাণ করতে পারে। তবে উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার নির্মাণের জন্য বিষয়টি উত্থাপন করা যেতে পারে। পাশাপাশি সরকারি বেসরকারিভাবে ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য শহিদ মিনার নির্মাণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version