বেনাপোল থেকে এম ওসমান: যশোরের বেনাপোলে পিকনিকের বাস দুর্ঘটনা পতিত হয়ে নিহত ৯ শিশু শিক্ষার্থীর স্মরণে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টার সময় বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আয়োজনে বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বিশাল শোক র্যালি বের হয়। র্যালিটি নিহতদের স্মরণে বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে। এ সময় যশোর-১ শার্শা আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন ও সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে নিহত শিশুদের স্মরণ করেন। এছাড়া সকালে বেনাপোলের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
যশোর-১ আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের নেতৃত্বে উক্ত র্যালিতে অংশ নেন বীরমুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল হক মঞ্জু, শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান, শার্শা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রব, শার্শা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল, বেনাপোল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক মুকুল, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন, বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান বজলুর রহমান, শার্শা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অহিদুজ্জামান অহিদ, শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সরদার, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন রাসেল প্রমুখ।
এ উপলক্ষ্যে বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোরআন খতম ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন ম্যানেজিং কমিটি’র সভাপতি মজনুর রহমান।
প্রসঙ্গত, পাঁচ বছর আগে ২০১৪ সালের এই দিনে বেনাপোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরে মেহেরপুরের মুজিবনগরে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে চৌগাছার ঝাউতলা কাঁদবিলা পুকুর পাড়ে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৭ জন শিক্ষার্থী, আহত হয় আরো ৭০ জন শিশু শিক্ষার্থী ও ৩-৪ জন শিক্ষক। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ২ জন শিক্ষার্থী মারা যান।
ঘটনাস্থলে নিহতরা হলো, বেনাপোল পৌরসভার ছোটআঁচড়া গ্রামের সৈয়দ আলীর দুই মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া (১০) ও তার বোন তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী জেবা আক্তার (৮), একই গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মিথিলা আক্তার (১০), রফিকুল ইসলামের মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী রুনা আক্তার মীম (৯), লোকমান হোসেনের ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শান্ত (৯), গাজিপুর গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেন (১০) ও নামাজ গ্রামের হাসান আলীর মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী আঁখি (১১)।
১৩ দিন পর ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ছোট আঁচড়া গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ইকরামুল (১১), দুর্ঘটনার ৩২ দিন পর ১৯ মার্চ ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় একই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়ানুর রহমান (১১)।
দিন মাস পার হয়ে ফিরে এসেছে ৫ বছরের ঠিক এই দিনটি। কিন্তু ফিরে আসেনি হারিয়ে যাওয়া ৯ শিশু শিক্ষার্থী। আজো কাঁন্না থামেনি হারিয়ে যাওয়া এ সব শিশুদের পরিবারের। পথ চেয়ে বসে আছে এই বুঝি ফিরে আসছে তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তানেরা।
বেনাপোলে পিকনিকের বাস দুর্ঘটনায় নিহত ৯ শিক্ষার্থীর স্মরণে দোয়া
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/