জানালার ধারে ক্যালেন্ডারটা
উকি মেরে বসন্তের আগমনের
কথা বলে দিচ্ছে,
আশাতীত জীবনের কল্পভাবনায়
আচমকা নিয়ে যাচ্ছে।
বে- খেয়ালি মন,
নিজেকে প্রশ্ন করে
এ কেমন ফাগুন?
শুষ্ক হৃদয়ে জ্বলে-জ্বলে শুধুই দিচ্ছে আগুন!
কোনখানে পড়ে থাকে
পাগল করা শিমুলের রং?
প্রজাপতি ডানা মেলে ফুলে- ফুলে
যেথায় সারাক্ষণ করিতো ঢং।
কই গেল
শালিক পাখিগুলো?
কোথায় বা গেল
ঐ মায়াবী সুরের কোকিল?
কে জানে,
এখন তারা কার কাছে,
কে জানে,
আমি তাদের কে হই!
কে গড়েছে
আমার আম- কাঠালের বাগানে বাড়ি?
যেথায় বসে
কোকিলের কুহুতানে আমার স্বপ্নরা দিতো আড়ি।
বসন্তের প্রখর বোদ্দুরে
রাস্তায় ঠাই দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খাওয়া,
হা, হা,
সে তো আজ
কাঁচের রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়াটাই ফ্যাশন,
অথচ,
এই আইক্রিম খাওয়াটা ছিল একদিন
বসন্তের দুপুরে ক্লান্ত চরণে অবশ হয়ে আসা তৃষ্ণার্থ শরীরের তৃপ্তিময় আসন।
কে কেটে নিয়ে গেল
সেই ইয়া বড় বটবৃক্ষটা?
আহা! কী ছায়া, সে-সে দখিনা হাওয়া,
কোথাও দেখতে পাইনা আর।
স্কুল-কলেজ কিংবা অফিস ছুটি হলেই
বিকেলের গোধূলি রঙ্গে,
পাঁচ-দশ বন্ধু একসঙ্গে
আসে ঐ সবুজ ঘাসের মাঠে?
কোন সময় বরিদা, কখনো কখনো মান্নাদার গানে
হাতে তালি বাজায়?
কেউ কি আনমনা হয়ে নাচে,
নাচে এখনও?
সবি যদি আজ, ব্যতিক্রম
ক্যালেন্ডারের ভাষা কেন করোনি অতিক্রম?
বুঝতেই পারি না
এ কেমন ফাগুন!
প্রয়োজন নেই
নেই আমার প্রয়োজন
এতটা বিরহের আগুন,
ডিজিটালে গড়ে ওঠা
এই বিচিত্র আয়োজন।
ওহে বসন্ত
কি দিয়ে তোমায় বরণ করি,
সেই পূর্বের দিনাতিপাতের কথা
আদৌ মনে প্রাণে স্মরণ করি।
কে? সে, কে?
তোমার গায়ে দিলো এমন রূপ,
কারো প্রতি কোন অভিযোগ নেই,
নেই কোন অনুযোগ,
তাইতো, ডায়েরি পাতায় আমার রঙিন কলমটাও নিশ্চুপ।