বেনাপোল প্রতিনিধি: বেনাপোলে মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় নায়েব আলী নামে এক ব্যক্তির অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৪০)। তিনি বর্তমানে শার্শা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। আহত রোকেয়া বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামের ওসমান গণির মেয়ে এবং নায়েব আলীর স্ত্রী।
কর্তব্যরত চিকিৎসক বলছেন, সময়মত ভালো চিকিৎসা না পাওয়ায় রোকেয়ার চোখ নষ্ট হতে বসেছে। রোববার দুপুরে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রোকেয়ার সাথে কথা হলে বেরিয়ে আসে এই লোমহর্ষক কাহিনী।
সূত্র জানায়, প্রায় দুই মাস পূর্বে বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে নায়েব আলীকে ৫০ পিস ইয়াবাসহ আটক করেন পোর্ট থানা পুলিশের এসআই মনির হোসেন। পরে তাকে মাদক আইনে মামলা দিয়ে যশোর আদালতে পাঠালে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। প্রায় দুই মাস কারাভোগের পর গত এক সপ্তাহ পূর্বে জামিনে বাড়ি ফেরে নায়েব আলী। ২দিন অতিবাহিত হতে না হতে আবারো সে মাদকের ব্যবসা করার চেষ্টা করে। পুঁজি যোগাড় করতে স্ত্রী রোকেয়া খাতুনকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার কথা বলে। এ সময় রোকেয়া খাতুন টাকা আনতে পারবে না এবং মাদকের ব্যবসা করতে দেবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নায়েব তার স্ত্রীর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে পাশে থাকা ইট দিয়ে আঘাত করে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়। তার চিৎকারে প্রতিবেশিরা এসে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মুজিদ ডাক্তারের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা করায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রোববার সকালে তাকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (নাভারণে) ভর্তি করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে অজ্ঞাত কারণে মাদক ব্যবসায়ীর পক্ষ নিয়ে ঘটনাকে ধামা চাপা দেওয়ার জন্য গ্রাম্য সালিশের নামে টালবাহানা শুরু করে নায়েব গংসহ সাদীপুর গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি। অসহায় রোকেয়ার পিতৃকুল তাদের ভয়ে আইনের আশ্রয় নিতেও সাহসও পাচ্ছে না।
রোকেয়ার স্বজনরা জানান, ভয়ে তাকে ভালো চিকিৎসাও করাতে পারেননি। তাই বেনাপোলের হাতুড়ে ডাক্তার আ. মজিদের শরণাপন্ন হই। প্রতিদিন আড়াই হাজার টাকার ওষুধ কিনলেও রোকেয়ার অবস্থা আরো আশঙ্কাজনক হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়েই লুকিয়ে এনে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়েছি।
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মুরসালিন শুভ বলেন, আগেই ভাল চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল।
এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই মনির হোসেন বলেন, নায়েব আলী একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। কিছুদিন পূর্বেও সে ৫০ পিস ইয়াবাসহ আটক হয়। তবে, জেল থেকে ফিরে তার স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করেছে কি না জানা নেই।
স্বামীর নির্যাতনে চোখ হারাতে বসেছে স্ত্রী
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/