মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে কৌশলে কক্সবাজার থেকে অপহরণ করে আনা এক তরুণীকে জনতার সহযোগিতায় মণিরামপুর থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় মানব পাচারকারী চক্রের মূল হোতা একাধিক বিয়ের নায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং তার ৩ স্ত্রীসহ ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে মণিরামপুর থানায় মামলা হয়েছে।
থানা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, পাচারকারী চক্রের কবল থেকে উদ্ধার হওয়া ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষাসহ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট জবানবন্দির জন্য বুধবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার এজাহার নামীয় আসামিরা হলো মণিরামপুর পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামের মৃত এনায়েত মোড়লের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক, তার তিন স্ত্রী ফতেমা খাতুন, রেক্সনা ও রোজিনা খাতুন, কক্সবাজার চকোরিয়ার ইসলামনগর এলাকার বশির ড্রাইভারের স্ত্রী নিলুফা বেগম ও বেনাপোল পোর্ট থানার বালুন্ডা গ্রামের মৃত মকছেদের ছেলে আরব আলী ওরফে জুজি। গত মঙ্গলবার থানায় দায়ের করা এ মামলার বাদী হয়েছেন থানার এসআই প্রশান্ত কুমার ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই খান আব্দুর রহমান।
এদিকে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামের রুবেল ও আব্দুর রহমানের পর গত সোমবার রাতে বেনাপোল এলাকা থেকে আরো একজনকে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঘটনার সাথে তারা জড়িত না থাকলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হতে পারে।
মামলার বিবরণ দিয়ে পুলিশ জানায় মোটা টাকার কাজ দেয়ার কথা বলে কক্সবাজার জেলার বানিয়াছড়া এলাকার অসহায় বাদশা মিয়ার মেয়ে শারমিনকে একই এলাকার পাঁচারকারী চক্রের সদস্য নিলুফা বেগম কৌশলে যশোরে নিয়ে আসে। এরপর তাকে বিক্রি করে তুলে দেয়া হয় মণিরামপুর পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামের পাঁচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা মোস্তাকের হাতে।
এদিকে ভারতে নারী পাঁচারের জন্য মোস্তাকের যোগাযোগ রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত এলাকার একই চক্রের সদস্যদের সাথে। দীর্ঘদিন ধরে মোস্তাক এবং তার তিন স্ত্রীসহ তাদের চক্রের সদস্যরা নারী পাঁচারের সাথে জড়িত। তবে স্থানীয়দের তথ্য ও পুলিশের তদন্তে মোস্তাকের প্রথম স্ত্রী জড়িত না থাকায় তাকে এ মামলায় আসামি করা হয়নি। মোস্তাক দীর্ঘদিন যাবৎ নারী পাঁচারের সাথে জড়িয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক বিয়ে করেছে। মোস্তাক কোন ব্যবসা অথবা চাকরি না করলেও নারী পাচার করে অঢেল টাকার মালিক বনে যাওয়ার বিষয়টি স্থানীয়দের মুখে মুখে থাকলেও হাতে-নাতে না ধরে তাকে কেউ কিছু বলতে পারেনি।
উল্লেখ্য, ৬ দিন আগে ভারতে পাঁচারের জন্য কক্সবাজার থেকে কৌশলে অপহরণ করে আনার পর ওই তরুণীকে রাখা হয় মণিরামপুর পৌর এলাকার তাহেরপুর গ্রামের পাচারকারী মোস্তাকের বাড়িতে। তার বড় ক্ষতি হতে যাচ্ছে এমনটা আঁচ করতে পেরে মোস্তাকের বাড়ি থেকে গত রবিবার রাতে সে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় স্কুল শিক্ষক ডলি পারভীনসহ স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। এরপর মণিরামপুর থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।
ভারতে পাচারকালে তরুণী মণিরামপুর থেকে উদ্ধার, আটক ৩
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/