সৌমেন মজুমদার, তালা: জেঠুয়া গ্রামের রেশমা খাতুন হাতের আঙ্গুলের চোট নিয়ে এসেছিলেন তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। চিকিৎসক চোট দেখে তাকে এক্স-রে করে রিপোর্ট দেখাতে পরামর্শ দেন। তিনি পরামর্শপত্র নিয়ে গেলেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১৪নং রুমে। রুমের সামনে গিয়েই বাধে যত বিপত্তি। রেশমার জানা ছিলো না তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিন দুটি দুই বছর ধরে নষ্ট। টেকনিশিয়ান রেশমা তাকে মেশিন বিকল থাকার বিষয়টি অবগত করে মেরামতের কাজ চলছে পরে আসতে হবে জানান। মলিন মুখ নিয়ে রেশমা বেসরকারি ক্লিনিকের দিকে ধাবিত হন। বাইরে থেকে এক্স-রে করতে তাকে সরকারি খরচের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি গুণতে হয়েছে।
সেবা নিতে আসা গ্রামাঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত রেশমার মতো ভোগান্তি শিকার হচ্ছে।
হাসপাতালে সেবা নিতে আসা একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, প্রায় দুই বছর ধরে তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে মেশিন নষ্ট। তাই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে বাধ্য হয়ে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক থেকে এক্স-রে করাতে হয়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১৪নং কক্ষে থাকা এক্স-রে মেশিন দুটি দুই বছরের বেশি সময় ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। সেবা নিতে আসা রোগীরা এক্স-রে কক্ষের সামনে এসে নষ্ট মেশিন দেখে ফিরে চলে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কুদরত-ই খুদা বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২টা এক্স-রে মেশিন আছে। কিন্তু দুখের বিষয় বর্তমানে দুইটা মেশিনই নষ্ট। এর মধ্যে একটি মেরামত করা সম্ভব না। সেটা পরিবর্তন করে নতুন মেশিনের জন্য বর্তমান এমপি মহোদয় ডিও লেটার দিয়েছেন। কিন্তু ঢাকার স্টকে নতুন কোন মেশিন না থাকায় দিতে বিলম্ব হচ্ছে। আর অন্যটি মেরামতের কাজ চলছে। দ্রুতই এটা চালু হবে। আশা করি আগামি সপ্তাহ থেকে তালাবাসী সেবা পাবেন।
তালা-কলারোয়া আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থা খুবই নাজুক। দ্রুত স্বাস্থ্যখাতকেই চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে। আমি যখন জানতে পেরেছি মানুষ সেবা পাচ্ছে না, তখনই নতুন এক্স-রে মেশিনের জন্য ডিও লেটার দিয়েছি।