সমীর রায়, আশাশুনি: আশাশুনির আনুলিয়া ইউনিয়নের মধ্যম একসরা দাখিল মাদরাসার সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে জাহাঙ্গীর হোসেন (২৪) নামে এক মটরসাইকেল চালকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত চার জনকে আটকসহ নিহতের মটর সাইকেলটি উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
জাহাঙ্গীর হোসেন রাজাপুর গ্রামের খোকন গাজীর ছেলে।
জানাযায়, গত বুধবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে মধ্যম একসরা গ্রামের বশির সানার ছেলে আব্দুল আজিজ (৫০), সালামুদ্দিন (খোকন) কারিকরের ছেলে আল আমিন (২৫) ও আব্দুল্লাহ কারিকরের ছেলে রবিউল ইসলাম (৩০) একসরা লঞ্চঘাটে যাওয়ার কথা বলে জাহাঙ্গীরের মটর সাইকলে ভাড়া করে। রাজাপুর গ্রাম থেকে তার মটর সাইকেলে উঠে রওয়ানা দিয়ে ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে রাত ১১টার দিকে মধ্যম একসরা দাখিল মাদ্রাসার কাছে ইটের সোলিংয়ের রাস্তায় পৌঁছলে পিছন দিক থেকে যাত্রিবেশী ওই ছিনতাইকারীরা তার গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর জাহাঙ্গীরের লাশ মাদ্রাসার সেফটি ট্যাংকের মধ্যে ফেলে রেখে মটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এদিকে স্বামী বাড়ি ফিরে না আসায় পরদিন বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তার স্ত্রী সাথী খাতুন স্থানীয় গ্রামপুলিশ আব্দুস সাত্তারকে জানালে তিনি যাত্রী রবিউলকে ডেকে ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটনের কাছে নিয়ে যান। চেয়ারম্যান জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন।
খবর পেয়ে থানা অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে রবিউল কে আটক করেন। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ঘটনার সাথে জড়িত আব্দুল আজিজ, আল-আমিন ও শফিকুল ইসলামকেও আটক করা হয় এবং তাদের দেওয়া তথ্য মতে সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরে ছিনতাই ও হত্যার সাথে জড়িত দেবহাটা থানার বাদল গাজীর ছেলে শফিকুল ইসলামের বাড়ি থেকে খোয়া যাওয়া মটরসাইকেল উদ্ধার করে পুলিশ।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার নাথ জানান, নিহতের ভাই আলমগীর হোসেন থানায় নিখোঁজের একটি ডায়েরি করেন। অনুসন্ধানকালে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহভাজন রবিউল ইসলাম, আব্দুল আজিজ সানা ও আল আমিন কারিকরকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা মোটর সাইকেল ছিনতাই ও হত্যার কথা স্বীকার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাদেরকে নিয়ে আনুলিয়া দাখিল মাদ্রাসার উত্তর পাশে টয়লেটের সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে নিহত জাহাঙ্গীরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, লাশ উদ্ধারের সময় আটককৃত রবিউল ইসলাম শতাধিক জনতার সম্মুখে তাদের ছিনতাই ও হত্যার ঘটনা স্বীকার করেন।