যশোর প্রতিনিধি: উত্তম কৃষিচর্চার বৈশ্বিক মানদন্ড নির্ধারণ করে গেদ্বাবাল গ্যাপ (গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসেস)। ইউএসএআইডি ও গেদ্বাবাল গ্যাপের সহযোগিতায় দেশের চার শতাধিক চাষীকে উত্তম কৃষিচর্চার প্রশিক্ষণ দিয়েছে স্বপ্ন। গেদ্বাবাল গ্যাপের মানদন্ড মেনে সবজি উৎপাদন করছেন এসব চাষী। তাদের একজন যশোরের তোরাব আলী।
যশোর সদরের তীরেরহাট গ্রামের কৃষক তোরাব আলী। পৈতৃক পেশা সূত্রে কৃষিকাজে জড়িত তোরাব বিভিন্ন ধরনের সবজির পাশাপাশি এবার পেঁপে আবাদ করেছেন এক বিঘা জমিতে। আগে সবজিক্ষেতে অপরিকল্পিতভাবে কীটনাশক প্রয়োগ করলেও চেইনশপ স্বপ্নের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতিতে সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছেন তিনি। এতে তিনি যেমন ভালো ফলন পাচ্ছেন, তেমনি নিরাপদ সবজি পেঁপের সরবরাহ পাচ্ছেন ভোক্তারা।
সবজি চাষি তোরাব আলী জানান, এবার এক বিঘা জমিতে পেঁপের আবাদ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা। ক্ষেতে পেঁপের ফলনও ভালো হয়েছে। আগে এখানকার চাষীরা পেঁপে বিক্রি করতেন ঝুড়ি হিসেবে, চার ঝুড়ি ১ হাজার টাকায়। কিন্তু স্বপ্নের সঙ্গে চুক্তির পর কেজি মাপে পেঁপে বিক্রি করছেন। এতে চার ঝুড়ি পেঁপে বিক্রি করে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা আয় হচ্ছে তাদের। স্বপ্নের সঙ্গে চুক্তির ফলে কেজিতে ২-৪ টাকা বেশি দাম পাচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, যশোর সদরের সাহাবাজপুর ও তীরেরহাট গ্রামের ১২ জন কৃষকের সঙ্গে নিরাপদ সবজি উৎপাদনে চুক্তি করেছে স্বপ্ন। এসব কৃষকের ক্ষেতে নির্দেশিকা লেখা সাইনবোর্ড টানানো রয়েছে। ক্ষেতে কোন সময়ে কী পরিমাণ কীটনাশক দিতে হবে, তা সাইনবোর্ডে লেখা আছে। আবার স্বপ্নের মাঠকর্মীদের উপস্থিতিতে সবজিক্ষেতে পরিমাণমতো কীটনাশক ছিটিয়ে দিতেও দেখা গেছে কোনো কোনো কৃষককে।
সবজির জন্য বিখ্যাত যশোর সদর উপজেলার হৈবতপুর ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নে মোট তিনজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কর্মরত রয়েছেন। খাতা-কলমে হৈবতপুর বকে শামীম হোসেন, মথুরাপুর বকে শিরিনা খাতুন ও বড় হৈবতপুর বকে হাসান আক্তার দায়িত্বে রয়েছেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী তারা মাঠে গিয়ে চাষীদের ফসল উৎপাদনে পরামর্শ দেবেন। পাশাপাশি একে অন্যের সঙ্গে নিয়মিত মতবিনিময় করবেন; কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। কৃষকরা তাদের কাছ থেকে কোনো পরামর্শ পান না বলে অভিযোগ রয়েছে।
এখানকার চাষীরা জানিয়েছেন, এখানে বারো মাস সবজির আবাদ হয়। কিন্তু সবজি উৎপাদনে স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ পান না বললেই চলে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খালিদ সাইফুল্লাহ জানান, যশোরে শুদ্ধ নামে এক সংস্থা আছে, যারা চাষীদের নিরাপদ সবজি উৎপাদনে উৎসাহী করছে। এসব কৃষকের কাছ থেকে স্বপ্ন তাদের পণ্য কিনছে।
নিরাপদ পেঁপে উৎপাদনে যশোরের তোরাব আলী
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/