শার্শা প্রতিনিধি: সরিষা ক্ষেতচলতি মৌসুমে যশোরের শার্শা উপজেলায় উন্নত জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে। বেড়ে উঠা গাছ আর ফুল দেখে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। গত বছর স্থানীয় বাজারে উন্নত জাতের সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় এবারও সরিষা চাষে আগ্রহী হয়েছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছরও অধিক মুনাফা লাভ করা যাবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এ বছর আরও ৬০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হচ্ছে সরিষা। আর কৃষকরা তাদের অধিকাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) বারি-১৪, বারি-৯, বিনা-৯/১০ ও স্থানীয়ভাবে বারি-৭ হাইল্যান্ড ও সম্পদ জাতের সরিষা চাষ করেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছরের পর বছর স্থানীয় জাত চাষ করে ফলন কম হওয়া ও উৎপাদনে সময় বেশি লাগার কারণে কৃষকরা সরিষা চাষ অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। তবে চলতি মৌসুমের শুরুতে উপজেলা কৃষি বিভাগ ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট’ উদ্ভাবিত অধিক ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে। এ জাতের সরিষা মাত্র ৭৫-৮০ দিনে ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় হাজার কেজি। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে কৃষি জমির সর্বাধিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।
উপজেলার বড় আঁচড়া গ্রামের সরিষা চাষি হোসেন আলী বলেন, ‘এ বছর দুই বিঘা জমিতে বারি-১৪ ও বিনা-৯/১০ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। বিঘা প্রতি প্রায় ৩-৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে।’
উপজেলার ঘিবা গ্রামের কৃষক সাহেব আলী বলেন, ‘কৃষি অফিসের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে উন্নত জাতের সরিষার আবাদ করেছি। সরিষার জমিতে ধানের আবাদ ভালো হয় এবং বোরো চাষে খরচ কম হয়। আশা করছি গত বছরের তুলনায় এবারও ভাল ফলন পাওয়া যাবে।’
স্বরূপদাহ গ্রামের কৃষক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় এবারও সরিষা চাষ করেছি। এবারও ফলন ভাল হচ্ছে। দাম পেলে আগামী বছর সরিষা চাষে আরও অনেকেই ঝুঁকবে।’
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সৌতম কুমার শীল বলেন, ‘কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। বারি-১৪ সহ অন্যান্য সরিষা বপনের মাত্র ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। বারি-১৪ সরিষার গাছ লম্বা হওয়ায় এর পাতা মাটিতে ঝরে পড়ে জৈব সারের কাজ করে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ে। এ জাতের সরিষা আবাদের পর ওই জমিতে বোরো আবাদে সারের পরিমাণ কম লাগে। তাই এ জাতের সরিষা চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়। এবারের ফলন ভাল হলে কৃষকদের আগ্রহ আরও বাড়বে।’
শার্শায় সরিষার বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/