মাহবুব আলম, শার্শা (যশোর): শার্শায় পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো আবাদ। ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার চাষীরা। তবে ধানের চারা আর সেচের কাজে কিছু সংকট থাকলেও তা কাটিয়ে চাষাবাদে বেশ সাড়া পড়েছে উপজেলার কৃষকের মাঝে। আর তাই শার্শায় চলতি মৌসুমে বোরো আবাদে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
এদিকে চাষীরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিকমতো হলে ফসল তুলতে কোনো বেগ পেতে হবে না কৃষকদের।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে শার্শা উপজেলায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৫শ’ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে ব্রি-ধান ২৮, ব্রি-ধান ৫০, ব্রি-ধান ৬৫, ব্রি-ধান ৬৭, ব্রি-ধান ৮১ সহ হাইব্রিড মিনিকেট ধান চাষ হচ্ছে।
কৃষকরা জানান, এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। শীত এবং কুয়াশার প্রকোপ অনেক কম থাকায় বোরো ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কম এবং চারাও সুস্থ সবল হয়েছে। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে তাহলে এবছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।
শার্শা উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, গভীর নলকূপ দিয়ে আমাদের চাষাবাদ করতে হয়। সবাই একসাথে জমি তৈরি করতে নলকূপের উপর কিছুটা চাপ পড়ছে।
অপরদিকে বিদ্যুতের মাঝে মাঝে ভেলকিবাজি চলছে। দিনে কয়েকবার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করে। সাথে রয়েছে লো-ভোল্টেজ। গভীর নলকূপ থেকে ঠিকমতো পানি না পাওয়ায় জমি প্রস্তুত করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।
কৃষক মজিবুর রহমান বলেন, ডিএপি ১বস্তা ১৩শ’ টাকা, এমওপি ১ বস্তা ৮শ’ টাকা, ইউরিয়া ১বস্তা ৮শ’ টাকা, কীটনাশক ১১শ’ টাকা, জমি চাষ ও রোপণ ২ হাজার টাকা, পানি সেচ ১ হাজার ৫শ’ টাকা এবং কাটা-মাড়াই প্রায় ২ হাজার টাকাসহ প্রায় ১০ হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা বিঘা প্রতি খরচ হয়ে থাকে। বিঘা প্রতি ফলন হয় বিঘা প্রতি ২০-২২ মন। বর্তমান বাজারে ধানের দাম মণ প্রতি ৬৫০ টাকা করে।
তিনি আরও বলেন, যাদের নিজস্ব জমি তাদের কিছু থাকে। কিন্তু যারা বর্গাচাষী তাদের কিছুই থাকেনা। এতে করে প্রতিবছর আমাদের লোকসান গুণতে হয়। সরকার যদি সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনে তাহলে ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে। উপজেলায় চলতি মৌসুমে চাষিদের মধ্যে বোরো চাষের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকায় কৃষকরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছে।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৌতম কুমার শীল জানান, চলতি বছরের বোরো মৌসুমে ৪শ’ কৃষককে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ১ বিঘা জমি প্রতি সার, বীজ সহায়তা প্রদান এবং ৯৩ জন কৃষক-কৃষাণীকে এনএডিবির আওতায় সার, বীজ বিতরণসহ বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
শার্শায় চলতি মৌসুমে বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/