এস.এম নাহিদ হাসান:
লায়লা পারভীন সেঁজুতি। সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৭৬ সালের ২ অক্টোবর তালা উপজেলার নগরঘাটা ইউনিয়নের মিঠাবাড়ি গ্রামে রাজনৈতিক পরিবারেই তার জন্ম। তার বাবা স ম আলাউদ্দিন ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন। প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের মধ্যে যেকয়জন অস্ত্র হাতে সরাসরি রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছিলেন তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম।
তার তৃতীয় কন্যা লায়লা পারভীন সেঁজুতি ১৯৯১ সালে সাতক্ষীরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৯৩ সালে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৯৯৫ সালে বিএ শেষ করেন। ১৯৯৯ সালে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স পাশ করে বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।
বাবার রাজনৈতিক দর্শন বুকে ধারণ করেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নাম লেখান তিনি। ২০১৩ সালে নগরঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এবং ২০১৬ সালে জেলা মহিলা রীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন লায়লা পারভীন সেঁজুতি।
২০১৩-১৪ সালে যুদ্ধাপারাধীদের বিচারের রায়কে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবিরের সহিংসতা প্রতিরোধে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী হিসেবে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন, দায়িত্ব পালন করছেন জেলা স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সহ-সভাপতি, সাতক্ষীরা পাবলিক লাইব্রেরির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবেও। আওয়ামী পরিবারের এই কর্মী ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের জন্য তৃণমূলে কাজ করে মানুষের আস্থা অর্জনে সমর্থ হয়েছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইবেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরার সাথে। তিনি বলেন, আমার বাবা স.ম আলাউদ্দিনের বৃহৎ রাজনৈতিক কর্মকান্ডই আমাকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে রাজনীতিতে আসতে। বাবা সব সময় একটি জিনিস বোঝানোর চেষ্টা করতেন- একমাত্র রাজনীতির মাধ্যমেই সবচেয়ে বেশি মানুষকে সেবা দেওয়া সম্ভব।
তিনি সাতক্ষীরার সামগ্রিক উন্নয়ন, নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, কৃষি ও শিল্প সম্প্রসারণে জন্য কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা করে তিনি দেখিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার ভালবাসা ও দর্শন। এ অঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য আলাউদ্দিন ফুড অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামক একটি বিস্কুট ফ্যাক্টরী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মানুষের অধিকারের কথা বলতে ১৯৯৫ সালের ২৩ জানুয়ারি দৈনিক পত্রদূত পত্রিকা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সাতক্ষীরাকে বাণিজ্য নগরীতে পরিণত করার লক্ষ্যে তিনি চেম্বার অব কমার্স, ভোমরা স্থল বন্দর প্রতিষ্ঠা করেছেন। সাতক্ষীরার মানুষের উন্নয়নে যে চিন্তা ভাবনা- তা তিনি নিজ কর্মকান্ডের মধ্য দিয়েই রেখে গেছেন। আমিও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি হতে পারলে সাতক্ষীরার উন্নয়নে প্রাণপণ কাজ করবো। আমার সমগ্র কার্মকান্ডের মাধ্যমে আমি মনোনয়নের জোর দাবি করতেই পারি। বাবার মত বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সমগ্র সাতক্ষীরারবাসীর মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। এখান থেকে আমার মত অনেকেই মনোনয়ন চাইবেন। নেত্রী যদি আমাকে যোগ্য মনে করে মনোনীত করেন তাহলে এ অঞ্চলের নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মসংস্থান, শিক্ষা, তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের দোর গোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া, নারীদের কুসংস্কার থেকে বের করে এনে সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে তাদের সমাজের মূল ধারায় আনতে চাই। এছাড়া এ প্রজন্মের যুবকদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বন্ধুবন্ধুর স্বপ্নের বীজ বপন করাই আমার আসল চ্যালেঞ্জ। সাতক্ষীরাবাসী আমার পাশে থাকলে ইনশাল্লাহ আমি সকলের জন্য কাজ করতে পারবো।