ডেস্ক রিপোর্ট: ফের গ্রেফতার হলেন দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের এমপিপুত্র রাশেদ সরোয়ার রুমন।
রোববার (১৩ জানুয়ারি) পুলিশ তাকে শহরের বিনেরপোতা এলাকা থেকে মোটর যান আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার করে।
তিনি ওই এলাকায় মা সংসদ সদস্য মিসেস রিফাত আমিনের ব্যবহৃত সংসদের স্টিকারযুক্ত গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রুমন মোটর যান আইনের একটি মামলায় পলাতক ছিল। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, রুমনের মা মিসেস রিফাত আমিন দশম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য।
রুমন, পেছনের কথা: দীর্ঘদিন সৌদি প্রবাসে থাকার পর রাশেদ সরোয়ার রুমন দেশে ফিরে জড়িয়ে পড়েন নানা অপরাধে। ২০১৪ এর সংসদ নির্বাচনের পর তার মা রিফাত আমিন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে তার দাপট আরও বেড়ে যায়। একের পর এক ঘটনা ঘটাতে থাকেন তিনি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৬ এর ১৯ মে রুমন তার সাংসদ মায়ের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ও গুলি নিয়ে সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ড্রাইভ করে পৌঁছে যান শ্যামনগরের একটি রিসোর্টে। রাতে সেখানে তিনি তিন তরুণীকে নিয়ে টালমাটাল অবস্থায় ছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে আটক করে। এ ঘটনায় তাকে কয়েকদিনের জন্য কারাবাস করতে হয়। যানবাহন আইনে তার বিরুদ্ধে একটি নামমাত্র মামলা হয়। ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি রুমন সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা চায়। পরে ভোমরায় নিয়ে তার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয় ২৫ হাজার টাকা। সে বছরের ৭ জুলাই রুমন তার সহযোগী গোল্ড মিলনের সাথে একজোট হয়ে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ী সাহেব আলিকে মারধর করে জিম্মি করে নগদ টাকা ও একটি স্বাক্ষরিত চেক কেড়ে নেয়। ১৩ আগস্ট তার মাদকাসক্ত স্ত্রী টুম্পাকে সিরাজুল ইসলাম বুলেট নামের এক যুবকের পাশে বসিয়ে ছবি তুলে ব্লাক মেইলিং করার চেষ্টা করে রুমন। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় রুমন জেলা যুবলীগ নেতা জুলফিকার আলি উজ্জ্বলকে রড দিয়ে মারপিট করে আহত করে। এরপরই নেশা করে গণরোষের মুখে প্রাইভেট কার ড্রাইভ করে ভোমরার দিকে পালিয়ে যাবার পথে একটি কালভার্টে আঘাত করে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন রুমন। এ সময় পালিয়ে যান রুমন। ১১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরার গোল্ড মিলন স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় আটক হলে রুমন তার সঙ্গীদের নিয়ে তার বাগানবাড়ি দখল করতে যান। এ সময় স্থানীয়রা তাকে গণপিটুনি দেয়। এদিন ওই বাড়িতে থাকা সোনা টাকা ও ১৩টি ভারতীয় জাতের গরু লুট করে নিয়ে যাবার অভিযোগ ওঠে রুমন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় দুটি মামলা হলেও কেউ তাকে আটকে রাখতে পারেনি।