Site icon suprovatsatkhira.com

সাতক্ষীরা-৪ আসনে চমক

আহসানুর রহমান রাজীব: সাতক্ষীরা-৪ আসনের নির্বাচনী সমীকরণে শেষ পর্যন্ত নাটকীয় মোড় নিতে যাচ্ছে। প্রথমে এই আসনে মহাজোট একক প্রার্থী নির্ধারণে ব্যর্থ হলেও শেষ পর্যন্ত অনানুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে যাচ্ছে তারা। আর এই সিদ্ধান্ত হতে পারে চমকপ্রদ। আজ যখন পাঠক এই খবর পড়বে- তখন হয়তো সাতক্ষীরা-৪ আসনের নির্বাচনী এলাকার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কুলা প্রতীকের সমর্থনে দলীয় কর্মীদের কাছে বার্তা ছুড়তে ব্যস্ত থাকবেন।
রাজনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে, সাতক্ষীরা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য স ম জগলুল হায়দার, ধানের শীষ নিয়ে সাবেক এমপি জামায়াত নেতা গাজী নজরুল ইসলাম, বিকল্পধারার কুলা প্রতীক নিয়ে সাবেক এমপি এইচএম গোলাম রেজা, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে আব্দুস সাত্তার মোড়ল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাত পাখা প্রতীক নিয়ে আব্দুল করিম ও বাঘ প্রতীক নিয়ে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের রবিউল ইসলাম জোয়ারদার ভোটের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন।
এর মধ্যে মহাজোট একক প্রার্থী মনোনয়নে ব্যর্থ হওয়ায় বিব্রত হয় দলীয় নেতা-কর্মীরা। প্রথমেই ঘরে উঠে যান মহাজোটের শরীক জাতীয় পার্টির আব্দুস সাত্তার মোড়ল। এরপর শুরু হয় বিকল্প ধারার কুলা প্রতীক ও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের লড়াই। নিজেদের মধ্যে প্রতিনিয়ত বাধতে থাকে সংঘর্ষ, হামলা, মামলা। এসবের মধ্যে যতই নির্বাচন কাছে আসতে থাকে, কুলা প্রতীকের এইচএম গোলাম রেজার সমর্থন যেন ততই বাড়তে থাকে। শুক্রবার রাতে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী সাতক্ষীরা-৪ আসনের শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ শনিবার সকাল থেকেই কুলা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার জন্য নেতা-কর্মীদের বার্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আর শুক্রবার রাতেই বরণ করে নিয়েছেন গোলাম রেজাকে।
স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে, স ম জগলুল হায়দারের সাজানো বাগান ঘুটে দিয়েছে শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি একরামুল হক লায়েছ, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সুজন, সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান, বাদাঘাটা কিং স্টার ক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সদস্য নাছিম, সাবেক ইউপি সদস্য হাসিম, হেলাল, সাদিকসহ কয়েকজন।
তারা জগলুল হায়দারের আশ্রয়ে থেকে এহেন অপকর্ম নেই, যা করেনি। মাদক, ইভটিজিং, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, শ্লীলতাহানি, ঘের দখল, নিরীহ মানুষকে মারধর, চুরিসহ সব ঘটনাই তারা ঘটাতো নির্দিধায়। সাধারণ মানুষ তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। স ম জগলুল হায়দার সবকিছুই দেখে না দেখার ভান করে ফেসবুকে ছবি দিতে ব্যস্ত থাকতেন। তার কাজ ছিল মানুষকে লোক দেখানো ডাব খাইয়ে, রাত ১২টায় যে কোন বাড়ি গিয়ে মুরগি নিয়ে ঠেলে ওঠা ও এসব ছবি ফেসবুকে দিয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা। মানুষ এসব নিয়েও বিরক্ত ছিল।
একই সাথে নির্বাচনী এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষও শেষ সময়ে এসে তার বিরুদ্ধে ফুসে ওঠে।
শুক্রবার রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শ্যামনগরে এইচএম গোলাম রেজার বাড়িতে তাকে সমর্থন দিয়ে বৈঠকে মিলিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাফরুল আলম বাবু, শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আতাউল হক দোলন, সহ-সভাপতি আনিছুজ্জামান, শফিউল আযম লেলিনসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
অন্যদিকে, চেষ্টা করেও স ম জগলুল হায়দারের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে, ফেসবুকে তার পেজ গুলোতে তাকেই মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আতাউল হক দোলন বলেন, ধানের শীষের প্রার্থীকে পরাজিত করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে সাতক্ষীরা-৪ আসন উপহার দিতে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের চাপের মুখে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখানে সবাই কুলা প্রতীকের পক্ষে কাজ করবে এবং কুলা প্রতীকেই ভোট দেবে।
এই কথার সাথে এক মত পোষণ করে কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, কিচ্ছু করার নেই। যার পাল্লা ভারী তাকে জিতিয়েই এই আসন থেকে ধানের শীষের প্রার্থী জামায়াত নেতা গাজী নজরুলকে বিতাড়িত করা হবে। দলের সবাই কুলা প্রতীকে ভোট দেবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version