Site icon suprovatsatkhira.com

বিলুপ্তির পথে গুইসাপ, নষ্ট হচ্ছে প্রকৃতির ভারসাম্য

মনজুরুল হাসান বাবুল, খেশরা (তালা): সাতক্ষীরার তালা এলাকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে গুইসাপ। এতে করে এখানকার প্রকৃতির ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়ার আশংকা রয়েছে।
খেশরা ইউনিয়নের কৃষি কর্মকর্তা গাজী মহিউদ্দিন জানান, গুইসাপ অতি উপকারী প্রাণী। পরিবেশ বন্ধুও বলা হয়। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায়ও অতুলনীয়। এক সময় তালা উপজেলার বনজঙ্গল, ঝোপঝাড়, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা, কৃষি জমিতে খুব বেশিই দেখা যেত সরীসৃপ জাতীয় প্রাণী গুইসাপ। কিন্তু এখন তেমন একটা দেখা যায় না।
দেশের অনেক প্রাণী গবেষক এবং প্রাণী বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্ক রয়েছে এমন বেশিরভাগ ব্যক্তিই মনে করছেন মানুষের কারণেই এই প্রাণীটি বিলুপ্তির পথে।
মাত্র বিশ বছর আগেও ইউনিয়নের বিভন্ন ঝোপঝাড়, খালবিল ও পুকুর-ডোবায় অসংখ্য গুইসাপ দেখা যেত, কিন্তু এখন এদের খুঁজে পাওয়া খুবই মুশকিল।
তিনি আরো বলেন, অতিমূল্যবান চামড়ার জন্যেই কিছু অসাধুলোক এদের নিধন করেছে। তাছাড়া পরিবেশ বিপর্যয়, নিরাপদ বাসস্থানের অভাব, খাদ্য সংকট এবং সর্বোপরি মানুষের অবহেলা কারণে এই উপকারী প্রাণীটি আজ বিলুপ্তির পথে।
কৃষিবিদ মুর্শিদা পারভীন পাপড়ি বলেন, বিষধর সাপ ও ক্ষতিকর পোকামাকড় এদের প্রিয় খাদ্য। এগুলো খেয়ে তারা আমাদের উপকার করে। ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফেলার কারণে ফসলের ফলন বৃদ্ধি পায়। এরা খাদ্যশৃঙ্খলে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এদের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকায় পোকামাকড় ও ইঁদুরের উৎপাত বেড়ে গেছে। যা পরিবেশ ও মানুষের জন্য মোটেও সুখকর হবে না।
তিনি আরো বলেন, গুইসাপ নিরীহ প্রকৃতির প্রাণী হওয়ায় মানুষ দেখলেই পালিয়ে যায়। তারা আমাদের কোনো ক্ষতি করে না। বরং উচ্ছিষ্ট ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপের ডিম খেয়ে তারা সেই সাপগুলোর সংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করে। গুইসাপ পরিবেশের জন্যে একটি উপকারী প্রাণী। তাদেরকে বিষাক্ত মনে করে নিধন করা ঠিক নয়।
প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় গুইসাপ সংরক্ষণ করা জরুরি। না হয় পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। এ নিরীহ প্রাণীকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার দায়িত্ব শুধু প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয় কিংবা সরকারের একার নয়, আমাদের সকলের বলে মনে করেন স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version