কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: কেশবপুর উপজেলার সাতবাড়িয়া বাজারের পাশে উচ্চ ফলনশীল কৃষি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সুপার ব্রিকস ইট ভাটা মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন বন্ধ করে দেয়ার পর থেকে ভাটা মালিক ফারুকুল ইসলাম এলাকার কৃষকদের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা ও পুলিশ দিয়ে হয়রানি করায়। বুধবার নির্যাতিত কৃষক ও কৃষাণীরা কেশবপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্য পাঠকালে হয়রানিমূলক মামলায় অভিযুক্ত মেহেদী হাসানের স্ত্রী পারভিনা বেগম উল্লেখ করেন, উপজেলার সাতাবাড়িয়া বাজারের ১শ’ গজ দূরে অবস্থিত সুপার ব্রিকস নামে ইটভাটা। এ ভাটার চারিপাশে উচ্চ ফলনশীল কৃষি জমি। ওই স্থানে ভাটা স্থাপন হলে রাস্তাঘাট, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া, শস্যহানিসহ পরিবেশ হুমকির মুখে পড়বে। এ কারণে ভাটা স্থাপনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দেয়াসহ আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিলেন। এতেও কাজ না হওয়ায় অবশেষে গ্রামবাসী গত বছর ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দ্বারস্ত হয়। বেলা কর্তৃপক্ষ ভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধের জন্যে ওই ভাটার মালিক ফারুকুল ইসলামকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন। কিন্তু ভাটা মালিক এ নোটিশের কোন তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ওই বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে ভাটার চারিপাশে কাঁটা তারের বেড়ায় বিদ্যুতায়িত করে ইট উৎপাদন শুরু করের। একপর্যায়ে বেলা এলাকাবাসীর পক্ষে ওই ভাটার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করে। যার নং- ৪৭৯৩/১৭। গত বছর ২৩ এপ্রিল হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও আশরাফুল কামাল বিচার বিশ্লেষণ করে সুপার ব্রিকস ইট ভাটার সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করে রায় ঘোষণা করেন।
সম্মেলনে দাবি করা হয়, চলতি বছর ওই ভাটা মালিক হাইকোর্টকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তার অবৈধ ভাটায় ইট উৎপাদন শুরু করেন। এরপর উপজেলা প্রশাসন নিষেধ করলেও ভাটা মালিক কর্ণপাত না করেই ইট উৎপাদন অব্যাহত রাখেন। অবশেষে গত ১৫ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা অভিযান চালিয়ে সুপার ব্রিকসসহ ৩ ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়। এরপর থেকে ওই ভাটা মালিক একটি বাঁশের চাটাই দিয়ে ঘেরা ঘরে আগুন দিয়ে ইট ভাটার বিরুদ্ধে রীটকারী কৃষক শেখ সাইফুল্যাহ, আবুল বাশার, আব্দুর রহমান ও মেহেদী হাসানের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা ও জিডি করে পুলিশি হয়রানি অব্যাহত রেখেছেন। গত ৩ নভেম্বর দুপুরে থানা পুলিশ গ্রামের ৭/৮ জন কৃষকের বাড়ি গিয়ে তল্লাশী করেন। পরে না পেয়ে তাদেরকে নাশকতা মামলায় ঢোকানোর হুমকি দেয়া হয়।
কেশবপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে: ভাটা মালিকের মামলা ও পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/