যশোর অফিস: কাজী নাবিল আহমেদ প্রায় ত্রিশ কোটি টাকার সম্পদের মালিক। আর তার স্ত্রীর ৯ কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। পাঁচ বছরে এমপি দম্পতির প্রায় ১৫ কোটি টাকার সম্পদ বেড়েছে। নিজের ১২ কোটি ও স্ত্রীর ৩ কোটি টাকার সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এমপির দায় রয়েছে ৪ কোটি টাকা। তবে আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি সম্পদ বাড়লেও গত পাঁচ বছরে কোন ইলেকট্রনিক সামগ্রি ও আসবাবপত্র ক্রয় করেননি এমপি নাবিল। দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
পাঁচ বছর আগে বার্ষিক আয় ছিল ৯০ লাখ টাকা। এর মধ্যে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৮ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৩ টাকা ও কোম্পানির পরিচালক হিসেবে সম্মানী বাবদ ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে বাৎসরিক আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে শেয়ার সঞ্চয়পত্র ও ব্যাংক আমানত থেকে আয় ৩৮ লাখ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকা ও পরিচালক হিসেবে সম্মানি বাবদ ৮৮ লাখ ২ হাজার ৩২ টাকা।
২০১৮ সালের হফনামায় অনুযায়ী কাজী নাবিল আহমেদের অস্থাবর সম্পদের তালিকায় ২০ কোটি ৩৪ লাখ ৯৪ হাজার ৮৩৯ টাকা সম্পদ বিবরণী দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নগদ ৮২ লাখ ৫৯ হাজার ৭২৮ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১ কোটি ৮৮ লাখ ৬ হাজার ২৪৭ টাকা, বন্ড/ঋণপত্র/ স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার ৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা, সঞ্চয়পত্র/স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৬ কোটি ৫৩ লাখ ১৬ হাজার ৮৪১ টাকা, গাড়ি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ১৭৩ টাকা, ৬৮.২০ তোলা স্বর্ণ, ৯ লাখ ১২ হাজার ৬৫০ টাকা মূল্যের ইলেকট্রনিক সামগ্রি, আসবাবপত্র ৫ লাখ ১৫ হাজার ২০০ টাকা ও অন্যান্য ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে।
যদিও দশম সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় কাজী নাবিল আহমেদ উল্লেখ করেন তার ১৩ কোটি টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদ ছিল। এর মধ্যে নগদ ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২৮ টাকা, ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৩৭ লাখ ২ হাজার ৫৮১ টাকা, বন্ড/ ঋণপত্রে ৭কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৪০৯ টাকা ছিল। সঞ্চয়পত্র/ স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার ৬৩১ টাকা। ৬৮ দশমিক ২০ তোলা স্বর্ণ ছিল। তবে তার মূল্য দেওয়া হয়নি। ইলেকট্রনিক সামগ্রি ৯ লাখ ১২ হাজার ৬৫০ টাকা, আসবাবপত্র ৫ লাখ ১৫ হাজার ২০০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য ১ কোটি ৪৩ লাখ ২৪ হাজার ৫০৫ টাকা ছিল।
পাঁচ বছরের ব্যবধানে কাজী নাবিল আহমেদের স্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৭ কোটি টাকার বেশি। আর পাঁচ বছরে তিনি নতুন কোন ইলেকট্রনিক সামগ্রি কিংবা আসবাবপত্র ক্রয় করেননি। কারণ পাঁচ বছর আগের হিসাবই এবারও একই রয়েছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় কাজী নাবিল আহমেদ স্থাবর সম্পদের তালিকায় ৯ কোটি ৪১ লাখ ৭৩ হাজার ৯ টাকার সম্পদ বিবরণী দিয়েছেন। এর মধ্যে ২ কোটি ২৩ লাখ ৩৭ হাজার ১০৪ টাকা মূল্যের অকৃষি জমি, ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫৬ টাকা ও অন্যান্য ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ৪৯ টাকা। এছাড়াও যৌথমালিনার একটি বাড়ির রয়েছে। যার মূল্য ২ কোটি ২৯ লাখ ২৪ হাজার টাকা।
তবে দশম সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় কাজী নাবিল আহমেদ উল্লে¬খ করেন ৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ বিবরণী। এর মধ্যে অকৃষি জমি ১ কোটি ২০ লাখ ১৮ হাজার ৯৭১ টাকা, দালান, আবাসিক/ বাণিজ্যিক ৭৬ লাখ ৫৪ হাজার ১৩৩ টাকা, বাড়ি ২ কোটি ২৯ লাখ ২৪ হাজার টাকা ও অন্যান্য ৬০ লাখ টাকা ছিল। এমপির স্থাবর সম্পদ প্রায় ৫ কোটি টাকা বেড়েছে।
এদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় কাজী নাবিল আহমেদের স্ত্রীর নামে ৬ কোটি ৯৭ লাখ ১৮ হাজার ৮৭০ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে নগদ ১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৭২ লাখ ৫৯ হাজার ৯১৬ টাকা, বন্ড/ঋণপত্র/স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার ২ কোটি ৬৫ লাখ ৪ হাজার ৬৩৫ টাকা। সঞ্চয়পত্র/স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৩ কোটি ৫৭ লাখ ৬৪ হাজার ৮২৭ টাকা। এছাড়াও ২০ তোলা স্বর্ণ রয়েছে। তবে তার মূল্য দেওয়া হয়নি।
পাঁচ বছর আগের হলফনামায় কাজী নাবিল আহমেদের স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ বিবরণী ৫ কোটি ২১ লাখ ২৪ হাজার ১১৭ টাকা। এর মধ্যে নগদ ১৮ লাখ ৪১ হাজার ৫১৯ টাকা, ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৬১৯ টাকা, বন্ড/ঋণপত্রে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৬৬ হাজার ২২৪ টাকা, সঞ্চয়পত্রে ২ কোটি ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৫১১ টাকা, অন্যান্য ১ কোটি ১০ লাখ ৬০ হাজার ২৪৪ টাকা। ২০ তোলা স্বর্ণের দাম উল্লে¬খ করা হয়নি। পাঁচ বছরে ১ কোটি টাকার বেশি অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে।
কাজী নাবিল আহমেদের স্ত্রীর ২ কোটি ১০ হাজার ৭৬৩ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ রয়েছে। পাঁচ বছর আগে স্থাবর সম্পদ ছিল ৯ লাখ ৭ হাজার দুইশত টাকা।
এমপির নির্ভরশীলদের নামে ১৭ লাখ ৬৬ হাজার ৯৬৪ টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। পাঁচ বছর আগে ছিল ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
কাজী নাবিল আহমেদের ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকার দায় রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান, পরিচালক হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৬’শ ২৬ কোটি ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ২৯৬ টাকার ঋণ রয়েছে।
সম্পদ বেড়েছে এমপি কাজী নাবিল দম্পতির
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/