সৌমেন মজুমদার, তালা: বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইদ। তালা উপজেলার শ্রীমন্তকাঠি গ্রামের (বর্তমানে খাজরা গ্রামে থাকেন) মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইদ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ শুনে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ঝাপিয়ে পড়েন মহান মুক্তিযুদ্ধে। পরে তার বড় ভাই, মেঝ ভাই ও এক চাচাতো ভাইও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
১৯৭১ সালের মে মাসে বিহার প্রদেশের সিংভুম জেলার চাকুলিয়ায় এক মাস গেরিলা ট্রেনিং শেষে ৯নং সেক্টরে মেজর এমএ জলিলের তত্ত্বাবধানে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন আবু সাইদ। দীর্ঘ ৬ মাস যুদ্ধজীবনে পাইকগাছা ইউনিয়ন পরিষদের রাজাকার ক্যাম্পের হামলার কথা মনে করতেই শিউরে ওঠে তার শরীর।
তিনি জানান, বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সর্বমোট ১৬০ জন রাড়ুলি ইউনিয়নের কাঠিপাড়া গ্রামের একটি পোড় বাড়িতে একত্রিত করা হয়। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রাত ১টার দিকে পাইকগাছা ইউনিয়ন পরিষদ রাজাকার ক্যাম্পে প্রথম রকেট লান্সার দিয়ে শুরু হয় আক্রমণ। এরপর প্রায় এক ঘণ্টা গোলাগুলির এক পর্যায়ে যখন নির্দেশ হয় পরিষদের বিল্ডিং উড়িয়ে দেওয়ার তখন আবু সাইদ এর প্রধান সহযোগী সাহস করে এগুতে পারেননি। কিন্তু পিছপা হননি তিনি। দুই জন সতীর্থকে সাথে নিয়ে বিল্ডিংয়ের চারপাশে এক্সপ্লোসিভ স্থাপন করতে এগিয়ে যান আবু সাইদ। এক পর্যায়ে তিনি রাজাকারদের বন্দুকের নিশানা হলেও সতীর্থদের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। পরিশেষে তিনি সক্ষম হন এবং রাজাকারদের ঘাটি উড়িয়ে দেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এ যুদ্ধ তার ছয়মাসের যুদ্ধজীবনের স্মরণীয় ঘটনা।
যুদ্ধের পরে ৪ সালের দুর্ভিক্ষ তাকে কষ্ট দিয়েছিলো। মেনে নিতে পারতেন না তিনি।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশকে তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও রাজনৈতিক হানাহানিমুক্ত এবং শিল্প, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলাধূলায় সমৃদ্ধ দেখতে চান।
রণাঙ্গনের গল্প: ৩ ঘণ্টা চেষ্টা করে রাজাকারদের ঘাটি উড়িয়ে দেই
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/