১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন, বৃহস্পতিবার
এক আষাঢ়ের দিন
ঝর ঝর ঝর ঝরেছে বাংলার বরষা
পূর্ব দিগন্তের লাল সূর্যটা ঢাকা ছিল মেঘে
সিরাজের যুদ্ধ সরণজাম ভিজেছিল
সেই বরষার বেগে।
যুদ্ধবিরতির ষড়যন্ত্রে মীরজাফর
বিজয়ী যুদ্ধের আনন্দ উচ্ছ্বাস কে
করল পদদলি
বাংলার স্বাধীনতা তুলে দিল
ইংরেজদের হাতে।
বীরযোদ্ধা মীরমদন মোহন লালসহ
হাজারও বীর
জীবন উৎসর্গ করলো সেই রাতে।
সেদিন কেঁদেছিল সিরাজ কেঁদেছিল বাংলাভাষী
সে যুদ্ধে হারেনি বাঙালি
হারায়েছিল অবিশ্বাসী মীরজাফর
রাঁতের আঁধারে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে
ভাগিরথীর তীরে মুর্শিদাবাদ নগরে।
মোগল হেরেমের শাহজাদীর
আগুনেপোড়া শরীরের চিকিৎসা করে
ডাক্তার গেব্রিয়েল বাউটন
পেয়েছিল সম্রাটের কাছ থেকে
অবাধ বাণিজ্য করার ফরমান।
বণিক ইংরেজ সেদিন যুদ্ধ নয়
শঠতার মাধ্যমে ফিরিয়ে দিয়েছিল
সেই অবদান
বেঈমান ইংরেজ হলো ভারতের ভগবান।
বৃহ¯পতিবার ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১
দুইশত সাড়ে চৌদ্দ বছর পর
বাঁধভাঙ্গা আনন্দ উচ্ছ্বাসে
জনতা সারা পৃথিবীকে জানাচ্ছে বারবার
য়ঁড়ঃ;ওরা এসে গেছে য়ঁড়ঃ;।
মানুষ ছুটেছে রেসকোর্সের দিকে
তাদের প্রাণপ্রিয় মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাগত জানাতে
পথের ধারে উচ্ছ্বসিত জনতা
যৌথবাহিনী আর মুক্তিযোদ্ধাদের জানাচ্ছে
প্রাণঢালা অভিনন্দন
বিজয়ী বীরদের সাথে করছে আলিঙ্গন।
২৬৫ দিনের যুদ্ধশেষে
মুক্তহলো হাজার বছরের সংগ্রমের এইদেশ
মৃত্যু তাদের তাড়া করতে পারবে না আর
তারা ঘুমোতে পারবে শান্তিতে
থাকবে না বিভীষিকাময় যন্ত্রণার রেশ।
আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে ধ্বনি উঠে
জয়বাংলা জয়বাংলা
৪-৩১ মিনিটে নিয়াজি স্বাক্ষর করলেন
আত্মসমর্পণের দলিলে
শেষ হলো এক করুন উপাখ্যান
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে
মুক্তহলো আমাদের জন্মস্থান
এখন মুক্ত বাংলা স্বাধীন বাংলা।
বেদনা বিমূঢ় মানবহৃদয়ে তখন দুঃখের স্মৃতি
নুতন বাংলাদেশের মানুষের চোখে তখন
পৌষের শিশিরের মত শুভ্র অশ্রু
সে অশ্রু স্বজন হারানোর
সে অশ্রু বিজয়ের আনন্দের
সে অশ্রু ধ্বংসস্তুপ থেকে
নূতন দেশ গড়ার আনন্দাশ্রু।
কবিতা: আরেক বৃহস্পতি
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/