Site icon suprovatsatkhira.com

কপিলমুনি ভূমি নায়েবের দুর্নীতির তথ্য ফাঁসঃ তদন্ত শুরু

প্রবীর জয়, কপিলমুনি (খুলনা): কপিলমুনি ভূমি অফিসের তহশীলদার জাকির হোসেনের দুর্নীতির বিষয় বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা। দীর্ঘদিন ধরে ভুক্তভোগীরা মুখ বুঝে সহ্য করলেও বর্তমানে নায়েবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি এলাকাবাসী তার বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে তদন্ত কর্মকর্তাদের নিকট লিখিতভাবে অভিযোগ প্রেরণ করেছেন।
জানা যায়, গত ৫ ডিসেম্বর সকালে খুলনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সরোয়ার আহমেদ সালেহীন কপিলমুনি ভূমি অফিসে আসেন। এ খবর বাজারের চাউর হলে একে একে সেখানে উপস্থিত হয়ে নায়েবের দুর্নীতির নানান বিষয় তুলে ধরেন এলাকায় নায়েব কর্তৃক হয়রানীর শিকার ও ভুক্তভোগীরা। এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সকলের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন এবং অভিযোগ লিখিতভাবে দেওয়ার জন্য বলেন।
অপরদিকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন দপ্তরসহ দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা অফিসে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। তবে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান ভুক্তভোগীরা। উল্লেখ্য, কপোতাক্ষ তীরবর্তী নাছিরপুর, নগর শ্রীরামপুর ও কপিলমুনি মৌজার সন্ধিস্থলে অবস্থিত দক্ষিণ খুলনার অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র কপিলমুনি। ১৯৮৬-৮৭ সালে বিআরএস জরিপ কালীণ জরিপ কর্তারা তীব্র ¯্রােতের দরুণ মালিকানাধীন অনেক সম্পত্তি সরকারের ১নং খাস খতিয়ানে রেকর্ড করেন। এরপর কপোতাক্ষের নাব্যতা হ্রাসে সেখানে চরভরাটি জমির প্রসারতা বৃদ্ধি হলে শুরু হয় দখল প্রতিযোগিতা। সরকারের তেমন মনিটরিং না থাকায় বাজারের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত গোলাবাটি মোড় থেকে অসমাপ্ত কপোতাক্ষ ব্রিজ হয়ে কালীবাড়ী খেয়াঘাট পর্যন্ত সরকারের কোটি কোটি টাকা মূল্যের খাস সম্পত্তি যে যার মত দখল করে রেখেছে। অনেকে আবার স্থায়ী পাকা ইমারত নির্মাণ করেছে। এর প্রেক্ষিতে সরকারি সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে কপিলমুনি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জাকির হোসেন দখলদারদের বিরুদ্ধে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর সার্ভেয়ার দ্বারা সরকারি জমির সীমাণা নির্ধারণের জন্য একটি লিখিত আবেদন করেন। যার স্মারক নং-৩৮১। এরপর সহকারী কমিশনার ভূমির নির্দেশে সরকারি সার্ভেয়ার সাকিরুল ইসলামসহ স্থানীয় সার্ভেয়ারদের সাথে নিয়ে নায়েব জাকির হোসেন জরিপ কাজ সম্পন্ন করেন। কিন্তু অদ্যাবধি সরকারি খাস সম্পত্তি উদ্ধারে সংশ্লিষ্টদের কোন তৎপরতা লক্ষ্যে করা যায়নি।
সূত্রমতে জানা যায়, এখানেও নায়েব জাকির হোসেন লোক দেখানো খাস জমি জরিপ পূর্বক দখলদারদের পক্ষ অবলম্বন করে তাদের দখল বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান করেছেন। যার কারণে সরকারি খাস সম্পত্তি উদ্ধারের বিষয়টি ধামাচাপা পড়েছে। এছাড়াও বাজার অভ্যন্তরে টিনের চাঁদনী দখল, খাস সম্পত্তিতে ইমারত নির্মাণ, চলাচলের রাস্তা দখল ও খোলা জায়গায় দোকান বসিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা বাণিজ্যের ঘটনা নায়েবের দুর্নীতির অন্তরায় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। পাশাপাশি বিগতদিনে কোন তহশীলদার কপিলমুনি ভূমি অফিসে থাকা কালীন বাজার কেন্দ্রিক খাস সম্পাত্তি এমনভাবে দখল হয়নি বলে অভিমত ব্যক্ত করেন সচেতন মহল। সর্বশেষ উপরোক্ত বিষয়সহ এলাকার ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন দপ্তরে দাখিলকৃত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানাযায়। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত এলাকাবাসী নায়েব জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক পরিসরে আন্দোলনে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
এদিকে তদন্তকালে খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সরোয়ার আহমেদ সালেহীন কপিলমুনি ভূমি অফিসে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, কপিলমুনি ভূমি অফিসের নায়েব জাকির হোসেন কর্তৃক যারা হয়রানির শিকার তারা লিখিতভাবে আমার দপ্তরে অভিযোগ করুন। সেক্ষেত্রে আমি তদন্ত পুর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version