Site icon suprovatsatkhira.com

মিথ্যা মামলায় চার্জশিট দিলো পুলিশ

রমজাননগর প্রতিনিধি : শ্যামনগর থানার বহুল আলোচিত এসআই আকরাম তিনটি অসহয় পরিবারের নিকট থেকে মিথ্যা মামলায় ফাইনাল দেয়ার নাম করে ঘুষের টাকা নিয়ে আবার ও চার্জশিট দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরার এসপির কাছে মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে বেশ কিছু দিন আগে আন্ত:জেলা মোটর সাইকেল চোর সিন্ডিকেটের হোতা ক্রসফায়ারে নিহত হয়। এ ঘটনায় শ্যামনগর থানায় হত্যা মামলা হয়। এই মামলায় উপজেলার মানিকখালী গ্রামের আঃ খালেকের পুত্র রফিকুল ইসলাম, ভেটখালী গ্রামের মিজানুর ও টেংরাখালী গ্রামের নাছেরকে আসামি শ্রেণিভুক্ত করা হয়। এ তিনজনই মোটর সাইকেল চালিয়ে জিবিকা নির্বাহ করে থাকেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। তারা কোনভাবেই মোটর সাইকেল চুরির সাথে জড়িত নন বলে দাবি তাদের।
২০১৩ সালে জিবিকার তাগিদে এফিডেভিট মূলে এই তিনজন তিনটি পুরাতন মটর সাইকেলে ক্রয় করে ভাড়ায় চালাতে থাকেন। এই মোটর সাইকেলগুলো চোরাই ছিলো তা তারা জানতেন না। হটাৎ একদিন সাতক্ষীরার ডিবি পুলিশ মোটর সাইকেল চুরির দায়ে তাদের গ্রেফতার করে। তদন্তের পরে এই তিন জনের নিকটে ডিবি পুলিশ পঞ্চাশ হাজার হারে টাকা ঘুষ দাবি কওে বলে ভুক্তভোগীদেও অভিযোগ। তারা ঘুষের টাকা না দিতে পারায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট এবং আন্তজেলা মোটর সাইকেল চোর সিন্ডিকেটের তালিকায় তাদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। আর তাতেই যেখানেই মোটর সাইকেল চুরি হয় সেখানেই তাদের নামে মামলা হয়। এ সব মামলা থেকে বাচতে এই তিনজন তাদের ভিটেমাটি সহয় সম্বল সব বিক্রি করে পথে উঠেছে। বর্তমানে এই তিন জন তাদের স্ত্রীরা মাঠে কাজ করে সংসার চালান।
সম্প্রতি রেজাউল ক্রস ফায়ারে নিহত হলে শ্যামনগর থানায় একটি হত্যা ও একটি চুরি মামলা দায়ের হয়। এ দুটি মামলায় ও এই তিনজনকে আসামি করা হয়। এদিকে আইজি সাতক্ষীরা সফরে এসে ঘোষণা দেন কেউ হয়রানীর শিকার হলে অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেবেন। তাই এই তিন জন তাদের জীবনে ঘটে যাওয়া পুলিশি হয়রানী সংক্রান্ত সকল ঘটনা উল্লেখ করে আইজি, পুলিশ সুপার, ওসিসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেন। তাদের এই আবেদনে স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যান এমনকি জাতীয় সংসদ সদস্য পর্যন্ত সুপারিশ করেন। এই আবেদনের উপর সে সময় কালিগঞ্জ সার্কেল তদন্ত করে এই তিন জনের হয়রানী বন্ধ হবে বলে আশ্বাস দেন।
এ দিকে শ্যামনগর থানায় দায়ের হওয়া দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সে সময়ের শ্যামনগর থানায় এবং বর্তমানে আশাশুনি থানায় কর্মরত এসআই আকরাম ফাইনাল দেয়ার নাম করে এই তিন জনের নিকট থেকে বিশ হাজার করে মোট ষাট হাজার টাকা নেন বলে অভিযোগ। কিন্তু ঘুষের টাকা নেয়ার পরে ও আইজির নির্দেশ উপেক্ষা করে এস আই আকরাম এই তিন জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেন। এবং যাদেররেক মামলা থেকে বাদ দিয়েছেন তাদের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার থেকে একলাখ টাকা হারে ঘুষ নিয়েছেন। এই তিনজনের কাছেও বিশ হাজার হারে নেয়ার পরে পুনরায় পঞ্চাশ হাজার টাকা হারে ঘুষ দাবি করেন এস আই আকরাম।
ভুক্তভোগী তিনজন বলেন, আমরা সমিতি থেকে লোন নিয়ে টাকা দিয়েছি। তার পরেও আমাদেরকে তিনি মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন। ভুক্তভোগী রফিকুল ও নাছের বলেন, মিথ্যা চার্জশিট দেয়ার পরে আমরা ঘটনাটি সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছি জানতে পেরে এসআই আকরাম আমাদের কাছে ফোন করে ভুল স্বীকার করছেন এবং ঘুষের টাকা ফেরত দিতে চাচ্ছেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version