ডেস্ক রিপোর্ট: নির্বাচন নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে সাতক্ষীরা। প্রার্থী মনোনয়নের ধাধায় পড়ে ঘুম হারাম হয়ে গেছে মহাজোট কিংবা ঐক্যফ্রন্টের কর্মী-সমর্থক এমনকি সাধারণ মানুষের। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন খবরে যেমন রাজনীতির মোড় পাল্টাচ্ছে, তেমনি মানুষের কৌতূহলেরও শেষ নেই।
এ পর্যন্ত এককভাবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও ওয়ার্কার্স পার্টি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ায় নেতা-কর্মীরা অস্থির হয়ে উঠেছেন। আর এ অস্থিরতা সাতক্ষীরার আসনগুলোকে ঘিরে যেন একটু বেশিই।
রাজনৈতিক সূত্র জানাচ্ছে, সাতক্ষীরার চারটি আসনের মধ্যে তিনটি আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্তরা হলেন- সাতক্ষীরা-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, সাতক্ষীরা-৩ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ডা. আ ফ ম রুহুল হক ও সাতক্ষীরা-৪ আসনে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম জগলুল হায়দার।
আবার, আওয়ামী লীগ যেখানে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়নি, অর্থাৎ সাতক্ষীরা-১ আসনে দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। এ আসনে দলটির প্রার্থী অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
অন্যদিকে, সাতক্ষীরার চারটি আসনের মধ্যে তিনটি আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে জাতীয় পার্টি।
জাতীয় পার্টির মনোনয়নপ্রাপ্তরা হলেন- সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের তথ্য উপদেষ্টা সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত, সাতক্ষীরা-২ আসনে জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শেখ আজহার হোসেন ও সাতক্ষীরা-৪ আসনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সাত্তার মোড়ল।
অন্যদিকে, সাতক্ষীরা-৪ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হতে মুখিয়ে আছেন বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য এইচএম গোলাম রেজা।
এদিকে, সাতক্ষীরার চারটি আসনেই প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। এদের মধ্যে সাতক্ষীরা-১ আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সাতক্ষীরা-আসনে রহমতউল্লাহ পলাশ, সাতক্ষীরা-৩ আসনে ডা. শহীদুল আলম ও সাতক্ষীরা-৪ আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী সদস্য কাজী আলাউদ্দিনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, সাতক্ষীরার চারটি আসনের মধ্যে তিনটি আসনে জামায়াতের প্রার্থী তালিকা পাওয়া গেছে। এরা হলেন- সাতক্ষীরা-২ আসনে মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ আসনে মুফতি রবিউল বাসার ও সাতক্ষীরা-৪ আসনে গাজী নজরুল ইসলাম।
এটা নিয়েও তাদের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে কৌতূহলের কমতি নেই। সাতক্ষীরার কয়টি আসন নিবন্ধন বাতিল হওয়া শরীক জামায়াতের জন্য ছাড়বে বিএনপি তা জানতে উন্মুখ হয়ে আছে কর্মী-সমর্থকরা।
এদিকে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তালিকা দেখে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষসহ রাজনৈতিক কর্মীদের মধ্যে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, আওয়ামী লীগ সাতক্ষীরা-১ আসন যে শরীকদের জন্য ছাড় দিচ্ছে তা অনেকটা নিশ্চিত। কিন্তু এই আসনে শরীক জাতীয় পার্টির দিদার বখত না ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহ মহাজোটের প্রার্থী হচ্ছেন- তা নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, সাতক্ষীরা-১ আসনে মহাজোটের প্রার্থী চূড়ান্ত হচ্ছেন ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহ।
তবে, পরিস্থিতি বলছে ৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত এ আসন নিয়ে আশাবাদী জাতীয় পার্টি।
এদিকে, সম্প্রতি কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে মহাজোটগতভাবে আওয়ামী লীগের সাথে জাতীয়পার্টির ৪৫টি আসন নিয়ে সমঝোতা শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হওয়ায় বিতর্ক নতুন মাত্রা ধারণ করেছে। ওই খবরে সাতক্ষীরা-২ আসনটিও মহাজোটগতভাবে জাতীয় পার্টিকে ছাড়া হচ্ছে বলে দাবি করা হলেও আওয়ামী লীগ থেকে তা সরাসরি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে, সাতক্ষীরা-৪ আসন নিয়েও মহাজোটের কর্মী-সমর্থকরা রয়েছে ধন্ধে। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হলেও আসনটি জাতীয় পার্টি এমনকি শেষ পর্যন্ত বিকল্পধারার দখলে চলে যেতে পারে বলে আশংকা করছে সকলেই।
এদিকে, সাতক্ষীরা-১ আসন বিএনপির দখলে থাকলেও তাদের শরীক জামায়াত বাকী তিনটি আসনে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। সেক্ষেত্রে সাতক্ষীরার অন্যান্য আসনে বিএনপিরও প্রার্থী থাকায় নেতা-কর্মীরা রয়েছেন দ্বিধায়। সাতক্ষীরায় শেষ পর্যন্ত জোটগতভাবে জামায়াতকে কয়টি আসনে ছাড় দেবে বিএনপি তা জানতেও হয়তো অপেক্ষা করতে হবে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সবমিলিয়ে স্বস্তিতে নেই কোনপক্ষই।
জোটগত প্রার্থী মনোনয়ন: সাতক্ষীরায় স্বস্তিতে নেই কোনপক্ষই
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/