বাপ্পী সরকার, চাম্পাফুল: রস সংগ্রহের লক্ষ্যে খেজুর গাছ কাটার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কালিগঞ্জের চাম্পাফুল ইউনিয়নের গাছিরা।
কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলে উল্লেখযোগ্য খেজুর গাছ রয়েছে। শীত মৌসুমে সৃষ্টির এ অনন্য রসের স্বাদকে সবার মাঝে বিলিয়ে দিতে ইতোমধ্যে রস সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় খেজুর গাছ পরিচর্যা শুরু হয়েছে ইউনিয়নের বালাপোতা, থালনা, চাম্পাফুল, চাঁদখালী, ঘুশুড়ী, মঠবাড়ী, চান্দুলিয়া, মাঠসহ পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়।
গাছিরা জানান, খেজুর রস সংগ্রহের জন্য কয়েকটি ধাপ অবলম্বন করতে হয়। সেই প্রক্রিয়া প্রথম দফায় গাছের উপরিভাগে পাতা কেটে ঝোড়া বা গাছ উঠানো হয়। কিছুদিন পর দ্বিতীয় দফায় গাছের উপরিভাগের একপাশে চাচ দেয়া হয়। তৃতীয় দফায় কিছুদিন পর সেখানে সামান্য চোখের মতো কেটে খিলিন দেয়া হয়। মূলত: চাচ ও খিলিন দেয়ার পর থেকেই ভাড়ে রস আহরণ করা হয়। পরবর্তীতে ২/৩ দিন পরপর খিলিনের উপরের ওই স্থানে সামান্য সামান্য কাটার অর্থাৎ, গ্রাম্য ভাষায় বলে থাকে চোখ উঠানোর ফলে সেখান থেকে রস গড়িয়ে ভাড়ে পড়ে। এভাবেই খেজুর রস সংগ্রহ করা হয়।
খেজুরের রস যেমন সুস্বাদু তেমনি সেই রস থেকে গুড় ও পাটালিও। শীতের ভরা মৌসুমে রস সংগ্রহে জন্য প্রতিযোগিতা করেন গাছিরা। ধানের কাজ শেষ করতেই এমনকি, এখনো শীতের তীব্রতা দেখা না মিললেও এরই মধ্যে খেজুর রস সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছেন ইউনিয়ানের গাছিরা। তবে চাম্পাফুল ইউনিয়নে খেজুর গাছ অনেকটা বিলুপ্তির পথে। কয়েক বছর আগেও বাড়ির আঙ্গিনায়, ক্ষেতের আইলের পাশে কিংবা রাস্তার দুই ধারে খেজুর গাছের আধিক্য থাকলেও এখন আর তেমনটা দেখা যায় না। যদিও সরকার বর্তমানে তাল ও খেজুর গাছ রোপণের উদ্যোগ নিয়েছে দেশব্যাপী। তাছাড়া জমি লবণাক্ত দেখা দেওয়ায় অনেক খেজুর গাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। যত বেশি শীত পড়বে তত বেশি মিষ্টি রস দেবে খেজুর গাছ। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস, গুড়, পিঠা, পুলি, পায়েশ ও অন্যান্য মিষ্টি সুস্বাদু খাদ্য খাওয়ার পালা।
এছাড়া খেজুরের পাতা দিয়ে আর্কষণীয় ও মজবুত পাটি এবং এমনকি জ্বালানি কাজেও ব্যবহার করা হয়। আবার খেজুর গাছের খাদি বা ডাটা দিয়েও রস ও ধান সিদ্ধের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় ।
এছাড়া খেজুর গাছ দিয়ে বসতি ঘরের মজবুত আড়াও তৈরি করা হয়ে থাকে।
খেজুরের রস আহরণে ব্যস্ত চাম্পাফুলের গাছিরা
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/