Site icon suprovatsatkhira.com

কেশবপুরে অবৈধ ৩ ইটভাটা বন্ধ করে দিল প্রশাসন

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরে যত্রতত্র কৃষি জমি দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৩টি ইটভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ করে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোর থেকে আসা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ কে এম নওশেদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এ অভিযানে অংশ নেয়। এ সময় হাইকোর্টের নির্দেশে সুপার ব্রিকস ও রোমান ব্রিকস এবং জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জামান ব্রিকসের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
জানা গেছে, ২০১৪/১৫ সালে উপজেলার পৌর এলাকার ভোগতীনরেন্দ্রপুর গ্রামে সরকারের নিয়ম-নীতিমালা উপেক্ষা করে কৃষি জমিতে জামান ব্রিকস, সাতবাড়িয়া বাজারের ১০০ গজের ভেতর সুপার ব্রিকস ও কাস্তাবারুইহাটি মোড়ে জনবসতিপূর্ণ এলকায় রোমান ব্রিকস নামে অবৈধ ইটভাটা গড়ে ওঠে। এসব ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ, নষ্ট করা হচ্ছে কৃষি জমি। এর প্রভাবে একদিকে যেমন উজাড় হচ্ছে বনভূমি অন্যদিকে মারাতœকভাবে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ, রাস্তাঘাট। সে সময় ভাটা ৩ টির কার্যক্রম বন্ধে এলাকাবাসি সভা, সমাবেশসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে চললেও ভাটা মালিকরা ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে জোরপূর্বক ভাটায় আগুন দিয়ে ইট উৎপাদন শুরু করে। এমনকি ভাটার বিরোধিতাকরী শতাধিক কৃষককে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হয়।
ওই সময় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা প্রশাসনের সহযোগিতা না পেয়ে গত বছর ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দ্বারস্ত হয়। বেলা কর্তৃপক্ষ ভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধের জন্যে ভাটা মালিকদের লিগ্যাল নোটিস প্রদান করেন। কিন্তু ভাটা মালিকরা এ নোটিসের কোন তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে গত বছর ৪ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে ভাটায় আগুন দিয়ে ইট উৎপাদন শুরু করে। একপর্যায়ে বেলা এলাকাবাসির পক্ষে ভাটার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করলে রোমান ব্রিকস ও সুপার ব্রিকসের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। এরপরও ভাটা দুটি ইট উৎপাদন অব্যাহত রাখলে গত বছরের ১৪ জানুয়ারি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বৈধ কাগজপত্র জমা না দেয়ার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে রোমান ব্রিকসের মালিক সিদ্দিকুর রহমান, সুপার ব্রিকসের মালিক ফারুকুল ইসলাম ও ভোগতীনরেন্দ্রপুর গ্রামের জামান ব্রিকসের মালিক মমতাজ বেগমকে ৬ মাসের জেলসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। চলতি বছরও এ ভাটা ৩টি গত ২ সপ্তাহ ধরে ইট উৎপাদন ও বিকিকিনি শুরু করে।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, যশোরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একেএম নওশাদ আলী, র‌্যাবের ডিএডি কাওসার আজম, ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার হুমায়ুন কবির ও থানার উপপরিদর্শক দীপক দত্তের যৌথ অভিযানে র‌্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা অভিযান চালিয়ে জামান ব্রিকস, সুপার ব্রিকস ও রোমান ব্রিকসের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পানি দিয়ে ভাটা ৩টির আগুন নিভিয়ে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানূর রহমান বলেন, ভাটার কার্যক্রম শুরু করলে তাদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু ওই ৩ ভাটা মালিক অবৈধভাবে ইট উৎপাদন করছিলেন। বৃহস্পিতিবার যৌথ অভিযানে হাইকোর্টের নির্দেশে সুপার ব্রিকস ও রোমান ব্রিকস এবং জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জামান ব্রিকসের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version