Site icon suprovatsatkhira.com

কুচক্রিমহলের ষড়যন্ত্রে খলিষখালীর দুধ ব্যবসায়ীরা হতাশায়

খায়রুল আলম সবুজ, খলিষখালী (পাকেলঘাটা) প্রতিনিধি: কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে খলিশখালীর দুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে।
পাটকেলঘাটার খলিষখালী উত্তরপাড়া বাজারে অনেক আগে থেকে একটি উন্মুক্ত দুধের বাজার চলে আসছে। সূত্র জানায়, ব্রিটিশ আমল থেকে এ দুধের বাজার তালা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ঘোষ সম্প্রদায়ের পৈত্রিক ব্যবসা হিসাবে খ্যাত। খলিষখালী বটতলাখ্যাত উত্তরপাড়া বাজারে রাস্তার উপর বিক্রেতারা সারি সারি দুধের পাত্র নিয়ে বিক্রি করতে বসেন। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এ বাজারে দুধ বেচাকেনা করতে আসেন। কাকডাকা ভোর থেকে এ বাজারে মানুষ ভীড় জমান।
দুধ বিক্রেতা তারক দাশ এ প্রতিবেদককে জানান, এ বাজারে প্রতিদিন ২-৩ হাজার কেজি দুধ বেচাকেনা হয়। কিন্তু এ বাজারে চলে অনেক অনিয়ম। এ বাজারের নেই কোন নির্দিষ্ট জায়গা। ফলে নানান অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয় দুধ বিক্রেতাদের। তাছাড়া স্থানীয় অসাধু দুধের ব্যাপারিদের কারসাজিতে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রামের হতদরিদ্র গোয়লীরা।
স্থানীয় এই চক্র বহুদিন ধরে সক্রিয়। এরা দূরদুরান্ত থেকে আসা ব্যাপারিদের জোগসাজসে এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় দুধ পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদেরকে সশরীরে বাজারে আসা থেকে বিরত রেখে স্থানীয় হতদরিদ্র গোয়ালীদের দুধের দাম নিম্ন মুখি করে রাখে। বর্তমানে এ বাজারে প্রতি কেজি দুধের দাম ২০-২৫ টাকা। গোয়ালীরা সর্বোচ্চ কেজি প্রতি দুধের দাম ২৮-৩০ টাকা পেয়ে থাকেন। স্থানীয় কুচক্রীদের কারসাজির হাত থেকে রক্ষা করতে পারলে অথবা দুরদুরান্তের ব্যবসায়ীদের এ বাজারে অবাধে দুধ ক্রয়ের জন্য আনা গেলে গোয়ালীরা প্রতি কেজি দুধের দাম ২-৩ টাকা (কেজি প্রতি) বেশি পাবেন বলে এই প্রতিনিধিকে ভুক্তভোগীরা জানান।
এমনই একজন দুধ বিক্রেতা খলিষখালী টিকারামপুর গ্রামের নূরালী সরদার (৪৫) জানান, প্রতিবার ঈদ ও পূঁজার সময় এ বাজারে দূরদূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে দুধ ক্রয় করে নিয়ে যান। সে কারণে ঈদ ও পুঁজার মৌসুমে ২০-২৫ টাকার দুধ ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। সরেজমিনে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। একজন ব্যবসায়ী বাড়ি বাড়ি গিয়ে গোয়ালীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা দরে দুধ ক্রয় করে দাম নিম্ন মুখি হওয়ায় ২৫ টাকা দরে বাধ্য হয়ে বিক্রি করছেন। এমনই একজন ব্যবসায়ী মাগুরা গ্রামের ধর্মদাশ মন্ডল।
এ বিষয়ে বয়ারডাঙ্গা গ্রামের বিক্রেতা অনাথ মন্ডল এ প্রতিনিধিকে বলেন, সনজয় দাশ, বিষ্ণু দাশ, মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ এ বাজার থেকে নিয়মিত বাকিতে দুধ ক্রয় করে সময়মত টাকা দেন না। এদের মত অনেক অসাধু ব্যবসায়ী এই চক্রের সাথে সক্রিয়।
এ বিষয়ে সঞ্জয় দাশ গং এর কাছে জানতে চাইলে তারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেন। কাশিয়াডাঙ্গার গীতা মন্ডল বলেন, উচ্চমূল্যে বিচালি কিনে দুধের দাম কেজি ২০-২৫ পেলে গোয়ালীরা গাভী পালনে আগ্রহ হারাবেন। এভাবে চলতে থাকলে ঐতিহ্যবাহি এ দুধের বাজার অদূর ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হওযার আশংকা রয়েছে। তবে উন্মুক্ত এ দুধের বাজার বাজার কমিটি দ্বারা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করতে পারলে গোয়ালীরা তাদের ন্যায্য মূল্য থেকে আর বঞ্চিত হবেন না বলে তারা উল্লেখ করেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version