Site icon suprovatsatkhira.com

‘উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সরকারি আইনি সেবার ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনার: দরিদ্র ও অসহায় মানুষকে মামলার খরচ দিচ্ছে সরকার

ডেস্ক রিপোর্ট: সবার জন্য আইন, আর আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন উল্লেখ করে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার বলেছেন, “আইনে আবেগের কোনো স্থান নেই। আইন তার গ-ির মধ্যেই থাকে। সেখানে অশ্রু বিসর্জনেরও মূল্য নেই”। যে কেউ আইনের সেবা নিতে পারেন জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার দেশের নির্যাতিত অথচ দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া মানুষকে আইন সহায়তা দিয়ে আসছে। এজন্য আইনসেবা গ্রহীতার কোনো ব্যয় নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার বিকালে সাতক্ষীরা জেলা জজ আদালতের সম্মেলন কক্ষে ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ এর জেলা কমিটি আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সাতক্ষীরার প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে সেমিনারে বলা হয়, জেলায় ১৯৯৪ সাল থেকে এ যাবত আইনগত সহায়তা প্রদান কমিটির মাধ্যমে ৪২৫৮টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দৃশ্যমানভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৩১৫টি মামলা। প্রতি বছর গড়ে তিনশ’ মামলা হলেও চলতি বছর এমন মামলার সংখ্যা দুই হাজারের কাছাকাছি। এই মামলার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে সেমিনারে আরও বলা হয়, গ্রামে গ্রামে এই বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। গরিব মানুষের মামলার ব্যয় সরকার বহন করবে বলে জানিয়ে দিতে হবে। এ জন্য আইনগত সহায়তার লক্ষ্যে জেলা উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্যানেল আইনজীবীরা এসব মামলা পরিচালনা করছেন। যে কোনো বিচারপ্রার্থী এই কমিটির সাথে যোগাযোগ করে তার আরজি পেশ করতে পারেন। সরকার সব খরচ বহন করবে।
সেমিনারের সভাপতি সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সাদিকুল ইসলাম তালুকদার আরও বলেন, আইনে আপোস করা যাবে না। তবে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে আদালতের বাইরে আইনজীবীরা যদি কোনো আপোস করেন আদালত সেটি আইনি গণ্ডির মধ্যে বিবেচনা করতে পারে। আপোস করার দায়িত্ব আদালতের নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সেমিনারে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আইন সহায়তা দানে আরও প্রাকটিক্যাল হতে হবে। সর্বস্তরের মানুষকে এ ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে হবে। সাতক্ষীরায় এই সেবা দিন দিন বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
সেমিনারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অনিন্দিতা রায় বলেন, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের কমিটিগুলোর কার্যক্রম মনিটর করতে হবে। তাদেরকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে সব সহায়তা দিয়ে যাবে।
‘উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সরকারি আইনি সেবার ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক সেমিনারে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার যুগ্ম জেলা জজ মো. কেরামত আলি।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. আবুল হোসেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপী, প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম সরোয়ার, দৈনিক দৃষ্টিপাতের আবু তালেব মোল্লা, প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অসীম চক্রবর্তী, জেলা তথ্য অফিসার ম্জোাম্মেল হক প্রমুখ।
তারা বলেন, আইন সহায়তা কমিটি সম্পর্কে সাধারণের ধারণা পরিষ্কার করতে গ্রাম পর্যায়ে যেয়ে আলোচনা করতে হবে। বিনা খরচে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানান দিতে হবে। এমনকি আইন সেবা গ্রহীতারা যাতে ন্যায় বিচার পান এবং তারা যাতে কারও প্রতারণার মুখে না পড়েন সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে আদালত চত্বরে এ ধরনের প্রতারকদের খপ্পর থেকে তাদের দূরে থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেন তারা।
সেমিনারে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তফা পাভেল রহমান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version