এস.এম নাহিদ হাসান:
শ্যামনগরের দ্বীপবেষ্টিত ইউনিয়ন গাবুরার সন্তান জি.এম শফিউল আযম (লেনিন)। বর্তমানে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছোট থেকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ও সংগ্রামমুখর ছিলেন। এলাকায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভের পর ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। কলেজে ভর্তি হয়েই সক্রিয়ভাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। দীর্ঘদিন তিনি ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজপথে বিভিন্ন আন্দোলন, সংগ্রামে নিজেকে সব সময় ব্যস্ত রাখতেন। নিজের এলাকার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য ঢাকার শিক্ষাজীবন শেষ করে নিজ এলাকায় সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। ছিলেন গাবুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতি। ২০০৩ সালে ১২নং গাবুরা ইউপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী জি.এম শফিউল আযম (লেনিন) কথা বলেছেন দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরা’র সাথে।
মনোনয়ন নিয়ে দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে বিরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বড় রাজনৈতিক দল। এ দলে অনেক মনোনয়ন প্রার্থী থাকতেই পারে। আর মতবিরোধ নিয়ে একটা কথা বলতেই হবে- সেটা হলো আমার নির্বাচনী এলাকা শ্যামনগরের ১২টি এবং কালিগঞ্জের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক এবং কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকের মধ্যে মতবিরোধ এবং বিভক্তি রয়েছে। যে কারণে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হলেও তারা পূর্ণাঙ্গ উপজেলা কমিটি করতে ব্যর্থ। কথা ছিল কমিটিগুলো ১ মাসের মধ্যে করতে হবে। তবে আমি মনে করি আমি যেহেতু জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক সেক্ষেত্রে আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে একযোগে নৌকাকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে কাজ করতে পারবো। আমার সাথে কারও গ্রুপিং নেই। যাদের ভিতরে গ্রুপিং রয়েছে, আমি সকলকে সমঝোতার মাধ্যকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নৌকাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করতে কাজ করবো।
মানুষের বর্তমান দুর্ভোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার পরিচালনায় সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও আমাদের স্থানীয় সাংসদের অযোগ্যতা ও অদক্ষতার কারণে সরকারের অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ বঞ্চিত। এই নির্বাচনী এলাকার মানুষ মনে করে, আমি উপকূলের সন্তান, উপকূলেই আমার বেড়ে ওঠা। আমি যদি সাংসদ নির্বাচিত হই, তবে এই এলাকার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করতে পারবো। তাছাড়া বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অনুযায়ী জামায়াত-বিএনপিকে কঠোর হস্তে দমন করতে আমি দ্বিধাবোধ করবো না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস জননেত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা-৪ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে আমাকেই মনোনীত করবেন। তাছাড়া শ্যামনগর-কালিগঞ্জে বিভিন্ন দলীয় প্রোগ্রামে একমাত্র আমার ডাকে হাজার হাজার মানুষ বাঁধভাঙা জোয়ার তুলে সাড়া দেয়। এই আসনের জামায়াত-বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতোমধ্যে মনোবল হারিয়ে ফেলেছেন, আমি যদি দলীয় মনোনয়ন পাই তবে তারা এ আসনে খুব বেশী সুবিধা করতে পারবে না। অন্য প্রার্থীদের তুলনায় আমার জনবল এবং নির্বাচনী কৌশল ভিন্ন, যা একাদশ নির্বাচনে আমাকে জয়ী করতে ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলের বেঁড়িবাধগুলোর নাজুক অবস্থা। ইউনিয়নের জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোর কাজ এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। তাছাড়া সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই এলাকায় এখনো ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর কথা থাকলেও স্থানীয় সাংসদের নিস্ক্রীয়তার কারণে এখনো ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পারেনি। এখানে আমাদের বর্তমান সংসদ একেবারে ব্যর্থ বলে আমি মনে করি।
দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে কোন কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করতে চান- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে প্রথমেই আমার উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধগুলো সংস্কার করে দীর্ঘমেয়াদি এবং টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করবো। যাতায়াতের জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, এলজিইডির রাস্তাগুলো কার্পেটিং করে সড়কের উন্নয়ন করবো। প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রত্যকটা ঘরে ঘরে বৈদ্যুতিক সেবা পৌঁছে দেবো। সর্বোপরি দেশরতœ শেখ হাসিনার প্রত্যকটা জনকল্যাণ মুখী সুবিধা আমার নির্বাচনী এলাকার জনসাধারণ নিরবচ্ছিন্ন ভাবে পাবে। জনসাধারণ বুক ফুলিয়ে চলতে পারবে। প্রত্যকেই নিজ নিজ ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে।