Site icon suprovatsatkhira.com

মাগুরার ৩ শহীদের মাজার সংরক্ষণের বিষয়টি আজও উপেক্ষিত

সৌমেন মজুমদার, তালা: তালা উপজেলার মাগুরার ৩ শহীদের মাজার সংরক্ষণ বিষয়টি আজো উপেক্ষিত রয়েছে।
২৮ নভেম্বর সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা যুদ্ধ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনের পড়ন্ত বিকেলে পাক-হানাদার বাহিনীর আকষ্মিক হামলায় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ, ডাঃ আবু বক্কর ও শুশিল সরকার সম্মুখ যুদ্ধে শাহাদাত বরণ করেন।
তালা উপজেলার মাগুরা ও খেশরা ইউনিয়ন তদানীস্ত যোগাযোগের দিক দিয়ে দূর্গম এলাকা ছিল। খেশরার বাতুয়াডাঙ্গা প্রাইমারী স্কুলে মুক্তিযোদ্ধারা স্থানীয়ভাবে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলেন এবং মাগুরা এলাকায় বৃহত্তর খুলনা জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সুবিধার্থে গণযোগাযোগ কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়। ভারত থেকে প্রশিক্ষণ শেষে অস্ত্র-গোলাবারুদ সহকারে সাতক্ষীরার বিভিন্ন সীমান্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অভ্যস্তরে প্রবেশ করে মাঠঘাট তথা আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিয়ে মাগুরার গণযোগাযোগ কেন্দ্র হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গমন করতেন। শত্রুসেনা পাকিস্তান বাহিনী ও তাদের দোসররা মাগুরাতে মুক্তিযোদ্ধাদের আস্তানা সম্পর্কে জানতে পেরে হামলা করে।
সূত্র জানায়, বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বদানকারী কমান্ডারগণ পার্শ্ববর্তী কপিলমুনি রাজাকার ঘাঁটি পতনের জন্য এদিন প্রস্তুতি সভায় মিলিত হন। সু-সজ্জিত পাক-বাহিনীর আকষ্মিক হামলা প্রতিরোধে মাত্র ১৫/১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা সম্মূখ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। দু’ঘন্টা যুদ্ধ স্থায়ীত্ব থাকে এবং এই যুদ্ধে জাতির বরেণ্য সন্তান তালা উপজেলার বারাত গ্রামের আব্দুল আজিজ, বাতুয়াডাঙ্গা গ্রামের সুশিল সরকার ও কলারোয়া উপজেলার কেরালকাতা ইউনিয়নের কাউরিয়া গ্রামের ডাঃ আবু বক্কর বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করে শাহাদাত বরণ করেন। এই যুদ্ধে শত্রু সেনারাও হতাহত হয়েছিল বলে জানা যায়। যুদ্ধ শেষে সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধারা ৩ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ মাগুরা গ্রামের ক্ষঁত্রিয়পাড়ার বাঁশবাগানে একই কবরে পাশাপাশি সমাহিত করেন। এ ঘটনার ১৪ দিন পূর্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একান্ত সহযোগী মাগুরা গ্রামের শেখ আবুল হোসেন মাগুরা বাজারে রাজাকারদের গুলিতে শহীদ হন। শহীদ আবুল হোসেনকে তার পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধা বান্ধব বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় মহান মুক্তিযুদ্ধের আলোচিত ঘটনাবলী ও ইতিহাস সংরক্ষণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তালার মাগুরার ৩ শহীদ মুক্তিযোদ্ধার শাহাদাত বরণের ইতিহাস কিংবা তাদের মাজার সংরক্ষণের বিষয়টি দীর্ঘ ৪৭ বছরেও কার্যকরি কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। মাগুরা ৩ শহীদের মাজার সু-সজ্জিতকরণ ও সংরক্ষিতসহ এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আমলে নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন তালাবাসী।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version