ডেস্ক রিপোর্ট: খুলনার উপজেলা পর্যায়ে মনোনয়নপত্র, আচরণবিধিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে। শনিবার খুলনা জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে নির্বাচন সংক্রান্ত কাগজপত্র পাঠানো হয়।
এদিকে গত সিটি করপোরেশ নির্বাচনে বির্তকিত ৫৭ জন কর্মকর্তা এবার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। এসব কর্মকর্তার এক বছরের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ, পদোন্নতি স্থগিত ও পরবর্তিতে ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, মনোনয়নপত্র, নির্বাচনী আচরণবিধিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। প্রার্থীরা আজ রোববার থেকে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। নির্বাচনে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ভোট কেন্দ্র, কক্ষ, ভোটার চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তালিকাও প্রস্তুত করা হয়েছে, যা নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। খুলনার ৬টি সংসদীয় আসনের রিটার্নিং অফিসার হয়েছেন জেলা প্রশাসক হেলাল হোসেন। এছাড়া আসনভিত্তিক ১৫ জন সহকারি রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসনে ৭৮৫টি কেন্দ্র এবং ৩ হাজার ৮০৫টি ভোটকক্ষ চূড়ান্ত করা হয়েছে। সেই সাথে রিজার্ভ রাখা হয়েছে আরো ৫ শতাংশ ভোট কেন্দ্র। এসব ভোট কেন্দ্র ও কক্ষের জন্য মোট ১২ হাজার ২০০ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকবেন। এর মধ্যে ৭৮৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩ হাজার ৮০৫ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, ৭ হাজার ৬১০ জন পোলিং অফিসার রয়েছে। এর সাথে আরো ১০ শতাংশ ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাকে রিজার্ভ রাখা হবে। সব মিলিয়ে ১৩ হাজার ৪২১ কর্মকর্তার তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে খুলনায় ভোটার সংখ্যা ১৮ লাখ ৮৩০ জন। এর মধ্যে খুলনা-১ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৯ হাজার ৩৫৬ জন, খুলনা-২ আসনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৬২ জন, খুলনা-৩ আসনে ২ লাখ ২৬ হাজার ৩০২ জন, খুলনা-৪ আসনে ৩ লাখ ১০ হাজার ৪৪৬জন, খুলনা-৫ আসনে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪৭২জন ও খুলনা-৬ আসনে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ১৯২ জন ভোটার রয়েছে।
অপরদিকে, নগরীসহ খুলনার ৬টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণায় ব্যবহৃত সব ধরণের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণসহ আলোকসজ্জা অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। আগামী ১৫ নভেম্বর রাত ১২টার মধ্যে এ আদেশ কার্যকর করতে খুলনা সিটি করপোরেশন, সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মহানগর-জেলার সকল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
খুলনার জেলা প্রশাসক হেলাল হোসেন জানান, খুলনার ছয়টি আসনে অংশগ্রহণকারী সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচারণায় ব্যবহৃত সব ধরণের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণসহ আলোকসজ্জা অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, খুলনার সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কেএমপি এবং জেলা পুলিশের সকল থানার ওসিদের চিঠির মাধ্যমে আদেশ কার্যকরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনটি কেন্দ্রে অনিয়মের দায়ে অভিযুক্ত ৫৭জন কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের জন্য খুলনা বিভাগে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
তালিকায় খুলনা বিভাগে ৪ হাজার ৮৩৪ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ২৪ হাজার ২০২ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৪৮ হাজার ৪০৪ জন পোলিং অফিসারের নাম স্থান পেয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কেসিসি নির্বাচনে ২৪ নং ওয়ার্ডের ইকবাল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, ৩১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিল কার্যালয় ও একই ওয়ার্ডের লবনচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শতভাগ ভোট কাস্ট হওয়ায় রিটার্নিং অফিসার এসব কেন্দ্রের ফলাফল স্থগিত করেন। এ নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় এই তিন কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রিটার্নিং অফিসার নির্বাচন কমিশনকে জানান। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় উল্লেখিত কেন্দ্র সমূহের ভোট কর্মকর্তাদের এক বছরের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ, পদোন্নতি স্থগিত ও পরবর্তিতে ভোট কেন্দ্রের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে পরামর্শ দেয়। সে আলোকে জেলা নির্বাচন অফিস কেসিসি নির্বাচনে বিতর্কিত ৫৭ জন ভোট কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকা প্রস্তুত করেছে।
খুলনা রিটার্নিং অফিসারের গণ-বিজ্ঞপ্তি ঃ নির্বাচন কমিশন ৮ নভেম্বর, প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকার ভোটারগণকে স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকা হতে একজন করে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচত করার জন্য নিম্নলিখিত সয়মসূচি ঘোষণা করেছে।
ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ি রিটার্নিং অফিসার অথবা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৯ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের তারিখ ২২ নভেম্বর, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর এবং ভোট গ্রহণের তারিখ ২৩ ডিসেম্বর।
খুলনার জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার হেলাল হোসেন জানান, আগামী ১৯ নভেম্বর অথবা ওই তারিখের পূর্ববর্তী যেকোন দিন সকাল নয়টা হতে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকা হতে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য ইচ্ছুক প্রার্থীদের নিকট হতে রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে।
খুলনায় ভোটার ১৮ লাখ ৮৩০
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/