Site icon suprovatsatkhira.com

অবহেলিত খলিষখালীর শিব মন্দির

খায়রুল আলম সবুজ, খলিষখালী (পাটকেলঘাটা): অবহেলিতই রয়ে গেছে খলিষখালীর প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিব মন্দির।
খলিষখালী উত্তরপাড়া বাজারের পূর্ব পাশে শৈব বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে অবস্থিত কালের সাক্ষী শিব মন্দির। মন্দিরটি কত আগে নির্মিত হয়েছিল এ বিষয়ে খলিষখালী সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কমল কুমার দাশ বলেন, এ শিব মন্দির তার পরদাদুর কাছে শুনে আসছে এটি প্রায় ৪৫০ বছর আগের স্থাপনা। কিন্তু সংষ্কারের অভাবে এ ঐহ্যিবাহী শিব মন্দির আজও অবহেলিত আছে। এ মন্দিরের ইতিহাস যতদূর জানা যায় ১৫৬৮ খ্রিস্টাব্দের দিকে এ মন্দিরের স্থাপনা দর্পন নারায়ণ বসু প্রথম নির্মাণ কাজ শুরু করেন। বর্তমানে দর্পন নারায়ণ বসুর শেষ বংশধর ননী গোপাল বসুর ২ পুত্র সুশান্ত কুমার বসু ও সলীল কুমার বসুর স্ত্রী, কন্যা, পুত্ররা এটি দেখভাল করেন।
অবকাঠামোর দিক দিয়ে মন্দিরটি ইট, সুড়কি, বালু দ্বারা নির্মিত। এর দেয়ালের পুরুত্ব ৩০ ইঞ্চি, উচ্চতা ত্রিশুলসহ ৬০ ফুট। এ মন্দিরে দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে ২টি কাঠের দরজা আছে, চারি পাশে উন্মুক্ত বারান্দা। মন্দিরের পশ্চিম পাশে নাট্য মন্ডপটি ইটের পিলারের পর টিন দিয়ে ছাওয়া। এটি বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে।
এ মন্দিরে সেই আমল থেকে পূজা প্রার্থনা প্রচলিত হয়ে আসছে। প্রতিদিনের পূজা সকাল ও সন্ধ্যায় পুরোহিত দিয়ে সম্পাদন করা হয়। এ মন্দির ব্যক্তি মালিকানায় থাকলেও সার্বজনীন প্রার্থনা করা হয় এবং যে কোন ব্যক্তি পূজা দিতে পারেন, এতে কোন বিধি নিষেধ নেই। এখানে বাৎসরিক হিসাবে আষাঢ় মাসে রথ যাত্রা, ভাদ্র মাসে মনসা পূজা, চৈত্র মাসে ৫ দিনব্যাপি শিব পূজা ও শিবরাত্রী উদযাপন করা হয়। এ মন্দিরের ভিতরে শিব, নারায়ণ, কৃষ্ণ, ফাড় মূর্তিসহ আছে নানাবিধ উপকরণ।
সূত্র জানায়, এ শিব মন্দিরে একটি কষ্টি পাথরের শিব মূর্তি ছিল যার ওজন ছিল প্রায় ৩ মণ। যার দাম ছিল প্রায় বর্তমান বাজার মূল্য হিসাবে ৩ কোটি টাকা। কিন্তু সে মূর্তি আর নেই।
কমল কুমার দাশ বলেন, মুর্তিটি ১৯৯০-৯২ সালের দিকে কে বা কারা চুরি করে নিয়ে গেছে। তবে বাৎসরিক দূর্গাপূজায় এ মন্দিরে জাকজমকভাবে আনুষ্ঠানিকতা করা হয়। যেটা উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি ভক্তরা আসেন। এ ঐতিহাসিক মন্দির সংষ্কার ও সংরক্ষণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version