Site icon suprovatsatkhira.com

সাতক্ষীরা-৩: আশাশুনি হাসপাতালের আধুনিকায়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বেকারত্ব দূরীকরণে পদক্ষেপ নেব

গাজী আসাদ:
লে. কর্নেল (অব.) জিএম জামায়েত হোসেন। ১৯৫৪ সালে সাতক্ষীরার আশাশুনির বড়দল গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। বড়দল প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা, আশাশুনি হাই স্কুলে মাধ্যমিক, সাতক্ষীরা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯৭৪ সালে সরকারি দৌলতপুর কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে অধ্যয়নরত অবস্থায় চাকুরিতে যোগদান করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১ নভেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন প্রাপ্ত হন। সুদীর্ঘ ৩০ বছর চাকুরি শেষে ২০০৫ সালের ২৫ জুন অবসর গ্রহণ করেন।
১৯৬৯ সালে হাই স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় রাজনীতিতে হাতেখড়ি তার। ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আশাশুনিতে ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সেসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রমে অংশ নেন। ১৯৭১ সালে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ২০০৫ সালের ২৫ জুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে লে. কর্নেল পদ থেকে অবসর গ্রহণ করার পর অদ্যাবধি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৩ আসনে নির্বাচন করতে চান লে. কর্নেল (অব.) জিএম জামায়েত হোসেন।
দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তি প্রসঙ্গে দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরাকে তিনি বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর ভক্ত এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধাশীল। আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এ ছাড়া ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে অংশ নিয়েছি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছি। ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলাম। সামরিক চাকুরীতে থাকাকালীন সময় এলাকার অনেক বেকার ছেলেদের সেনাবহিনী, পুলিশ ও আনছার বাহিনীতে চাকুরীর ব্যবস্থা করেছি। চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণের পর আবার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছি। এছাড়া নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু মনোনয়ন না পেলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছি। আমি এলাকায় ক্লিন ইমেজের লোক হিসেবে পরিচিত। তাই দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা রাখি।
দলে বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী আছে, এটাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে দূরত্ব বা মতবিরোধ হচ্ছে- এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে দলের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব, রাগ বা মতবিরোধ থাকবে না। আমার সাথে কারো কোন দ্বন্দ্ব নেই। সবার সাথে সুসম্পর্ক আছে। আমি দলীয় মনোনয়ন পেলে সকল নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে কাজ করবো। তবে আমি যদি দলীয় মনোনয়ন নাও পায় তারপরও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন যে পাবে তার পক্ষে কাজ করবো। যেমন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে করেছিলাম। আমি চাই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসুক। জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারও প্রধানমন্ত্রী হোক।
বর্তমানে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের এলাকার একটি বড় সমস্যা হচ্ছে বেকার সমস্যা। প্রচুর যুবক বেকার হয়ে আছে। এই যুবকদের জনশক্তিতে রূপান্তর করতে কাজ করতে চাই। বেকার সমস্যা দূর করতে চাই। আমি চাকুরিতে থাকাকালীন অনেক বেকার যুবকদের চাকরি পেতে সহায়তা করেছি। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারলে বেকারত্ব দূর করতে কাজ করবো।
দলীয় মনোনয়ন পেলে এবং নির্বাচনে জয়লাভ করলে কোন কাজগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এলাকার মানুষের জন্য করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার প্রথম কাজ হবে এলাকা থেকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য নিরসন করা। সকল মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। এ ছাড়া এলাকর যুবকদের বেকারত্ব নিরসনে সকল প্রকার কাজ করবো। আশাশুনি হাসপাতালের আধুনিকায়ন করবো। নির্বাচনী এলাকার স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করবো। শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রাথমিক থেকে কলেজে লেভেলে আধুনিক শিক্ষা, আইসিটি, শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষ সমস্যা দূর করা, নতুন নতুন ভবন নির্মাণে কাজ করবো। আমার এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে রাস্তা নির্মাণ, ব্রিজ-কালভার্ট তৈরী করতে চাই। নদী ভাঙন রোধে বেড়িবাঁধ সংস্কার করাসহ নদীর নাব্যতা ফেরাতে নদী খনন করতে চাই। জলাবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তাই এটা মোকাবেলা করতে সব ধরণের কাজ করতে চাই। সাতক্ষীরার সাংস্কৃতিক অঙ্গণের প্রসারে কাজ করতে চাই। সর্বোপরি এলাকার শাসক নয় সেবক হয়ে মানুষের পাশে থাকতে চাই।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version