Site icon suprovatsatkhira.com

মণিরামপুরে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে পাবলিক পরীক্ষার কেন্দ্র

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের মণিরামপুরে আসন্ন জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ১৩টি কেন্দ্র ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আহসান উল্লাহ শরিফী এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গত সোমবার বিকেলে ইউএনও’র কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় কেন্দ্র পরিচালনা কমিটিকে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে কেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। স্ব-স্ব কেন্দ্রে অংশ নেওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে যৌথভাবে নিজেদের অর্থায়নে আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই ক্যামেরা স্থাপনের জন্য বলা হয়েছে। পরীক্ষার কেন্দ্রের পরিবেশ বজায় রাখতে ইউএনও এমন উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে ইউএনওর এমন নির্দেশনা নিয়ে শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আগামী ১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে জেএসসি, জেডিসি ও সমমানের পরীক্ষা।
জানা যায়, উপজেলার মণিরামপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মণিরামপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রাজগঞ্জ শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, খেদাপাড়া পল্লীমঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পলাশী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নেহালপুর স্কুল এন্ড কলেজ, মণিরামপুর ফাজিল মাদরাসা, রাজগঞ্জ সিদ্দিকিয়া মডেল ফাজিল মাদরাসা, নেংগুড়াহাট ফাজিল মাদরাসা, খেদাপাড়া ফাজিল মাদরাসা, রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় (কারিগরি) ও মশিয়াহাটী অক্ষয় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (কারিগরি) কেন্দ্রে ২০১১ সাল থেকে জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এর আগে মণিরামপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মণিরামপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মণিরামপুর ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো।
মণিরামপুর উপজেলায় ২০১১ সাল থেকে পরীক্ষা কেন্দ্র সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১৩টিতে উপনীত হয়। যার মধ্যে কয়েকটি রয়েছে অজপাড়াগায়ে। যত্রতত্র পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করায় কেন্দ্রগুলো প্রশাসনের নজরদারিতে আনতে হিমশিম খেতে হয়। কেন্দ্রে পরীক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ থাকে সবসময়। এ সব অভিযোগ দূর করে সব কেন্দ্রে সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইউএনও।
এদিকে, ইউএনওর এমন উদ্যোগ নেওয়াকে কেন্দ্র করে অভিভাবক ও শিক্ষার্থী মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অধিকাংশেরই অভিযোগ সারাদেশে কোথাও এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে কেন আমাদের উপজেলায় এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে? পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কথা শুনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভিতি ও আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, এ কারণে পরীক্ষার ফল বিপর্যয় ঘটলে তার দায় প্রশাসনের উপর বর্তাবে।
গত সোমবার বিকেলে ইউএনও’র সাথে আলোচনা চলাকালে অনেক কেন্দ্রের সচিব ও কমিটি প্রধানরা সরাসরি এর বিরোধিতা করেছেন বলে জানা গেছে। শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গৃহীত যে কোন পদক্ষেপের সাথে আমরা আছি। তবে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিতে হবে- এ ধরনের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে তারা দ্বিমত পোষণ করেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, সুষ্ঠু পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কেন্দ্র সচিবদের নজরদারি সহজতর করতে এ ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের অন্যান্য স্থানে এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি অথচ এ উপজেলায় এ ব্যবস্থা নিলে বৈষম্য হবে এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশ ডিজিটাল হয়েছে, আমার এ উপজেলায় এটি একটি পাইলট বা অনুকরণীয় উদ্যোগও হতে পারে। সরকার এটির সুফল বুঝে সারা দেশে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতেও পারেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version