মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের মণিরামপুরে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার আতংকে বাড়ি ফিরতে পারছে না।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শহীদ মো. ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মামলা হয়েছে ৩৭টি, জামায়াতের আমীর মাও. লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে ১৫টি, বিএনপি নেতা ঢাকুরিয়া ইউপি’র সাবেক চেয়ারম্যান জিএম মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ৪১টি, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাও. মহিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৪টি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক ফজলুল হকের বিরুদ্ধে ৩৮টি মামলা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের এক নেতা জানান, খানপুর ইউনিয়ন জামায়াত নেতা মাও. নূর মোহাম্মদ স্ট্রোক করে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত বুধবার থানায় দায়ের করা একটি মামলায় তাকেও আসামি করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা ও সাবেক ঢাকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জিএম মিজানুর রহমান জানান, হামলা-মামলার ভয়ে উপাজেলা সদর ছেড়েছি অনেক আগে থেকেই। তারপরও ৪১টি মামলা করা হয়েছে আমার নামে।
গত বুধবার রাতে নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি অ্যাড. শহীদ মো. ইকবাল হোসেন, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাও. লিয়াকত আলীসহ বিএনপি-জামায়াতের অন্তত ৬৫ নেতাকর্মীকে আসামি করে মণিরামপুর থানায় আবারও পৃথক দু’টি মামলা করা হয়েছে। মণিরামপুর থানার উপ-পরিদর্শক তপন কুমার ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-পরিদর্শক মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে মামলা দু’টি করেন। যার মামলা নং-১৯ ও ২০। বিস্ফোরক আইনে করা এ মামলায় আরও আসামি করা হয়েছে উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল হক, মাও. মিজানুর রহমান, জামায়াতের বর্তমান উপজেলা সেক্রেটারি মাও. মহিউল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও ঢাকুরিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, রোহিতা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, থানা বিএনপির সাংগাঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মকবুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সভাপতি খাইরুল ইসলামসহ বিএনপি ও জামায়াতের বিভিন্ন পর্যায়ের ৬৫ নেতাকর্মী। এছাড়াও মামলা দু’টিতে অজ্ঞাত হিসেবে আরো প্রায় অর্ধ-শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় জামায়াতের সাবেক আমীর মিজানুর রহমানসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
একটি মামলার বাদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-পরিদর্শক মোশারফ হোসেন জানান, বুধবার সকাল ৬টার দিকে মণিরামপুর সরকারি কলেজের মসজিদের পশ্চিম পাশে নাশকতার পরিকল্পনা করাকালীন সময়ে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ১০টি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়।
অপর একটি মামলার বাদী মণিরামপুর থানার উপ-পরিদর্শক তপন কুমার রায় বলেন, আসামিরা সরকার বিরোধী কর্মকা- ঘটাতে বুধবার ভোরে হাকোবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় জড়ো হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ২-৩টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত বোমার আলামত জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ সকল মামলায় অভিযুক্তদের স্বজনরা জানান, গ্রেফতার এড়াতে বিএনপি-জামায়াতের বেশিরভাগ নেতাকর্মী এখন বাড়িঘর ছেড়েছেন।
মণিরামপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু, কোন নিরীহ-নিরাপরাধ ব্যক্তিকে পুলিশ হয়রানি বা গ্রেফতার করবে না। অপরাধ করলেই সে যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
মণিরামপুরে গ্রেফতার আতংকে বাড়ি ছাড়া বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/