Site icon suprovatsatkhira.com

ভাড়া দিচ্ছেন না, বাড়িও ছাড়ছেন না, এখন উল্টো বাড়ির মালিক দাবি করছেন এক ভাড়াটিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট: জাল দলিলের জোরে ভাড়াটিয়া এখন জমি ও বাড়ির মালিকানা দাবি করে ঘর থেকে কিছুতেই নামছেন না। নানান বাহানা এবং আদালতে মামলা করে সুলতানপুর গ্রামের নাজিরা বেগম এখন বাড়ির ভাড়াও পরিশোধ করছেন না। একইভাবে বাড়ি ছেড়ে যেতেও নারাজ তিনি।
সাতক্ষীরার সুলতানপুরের সিরাজুল ইসলামের ছেলে জিয়াউল হক জানান, তার ক্রয়কৃত এই জমির সাবেক মালিক সফিউর রহমানের বাড়ি ভাড়া নেন সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসের অফিস সহকারি অহেদ মোড়ল। অহেদ মোড়ল মারা যাবার পর থেকে তার স্ত্রী নাজিরা বেগম ও দুই মেয়ে ভাড়াটিয়া হিসাবে ওই বাড়িতেই থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা ভাড়ার টাকাও পরিশোধ করে আসছিলেন।
জিয়াউল হক জানান, ২০১৫ সালের ৭ জুন তিনি ১০ শতাংশ জমি কেনার পরও তারা ভাড়ার টাকা পরিশোধ করতে থাকেন। কিছুদিন পর তারা ভাড়ার টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এ সময় তাদের ঘর ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হলেও তাতে রাজী হননি। এ নিয়ে সাতক্ষীরা থানায় অভিযোগ করা হলে স্থানীয় কাউন্সিলর ফিরোজ হোসেন ও পুলিশ সদস্যরা দুই পক্ষকে ডেকে বসান। সেসময় নাজিরা বেগম বাড়ি ছাড়তে একমাসের সময় নেন।
অভিযোগ করে জিয়াউল হক আরও বলেন, নাজিরা বেগম হঠাৎ করে সদর জজ আদালতে একটি মামলা করে দাবি করছেন যে তার প্রয়াত স্বামীকে জনৈক জোনাব আলি ৫ শতাংশ জমি মৌখিক দান করেছেন। এ মামলাটি কিছুদিন পর খারিজ হয়ে যায়। নাজিরা বেগম একই আদালতে আবারও একটি মামলা দায়ের করে দাবি করেন তার বাড়ি ও জমি দখলে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। দুই বছর ধরে চলার পর নাজিরা বেগম আশাশুনি ও কালিগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের কাগজপত্রের মাধ্যমে দুটি জাল দলিল খাড়া করে আদালতে দাখিল করেন। এই দুই দলিল চ্যালেঞ্জ করতেই নাজিরা বেগম আদালতে হাজিরা বন্ধ করে দেন। আদালত এ মামলাটিও খারিজ করে দিলে নাজিরা বেগম আবারও একই আদালতে একটি পার্টিশান মামলা করেন, যা এখনও চলমান।
জিয়াউল হক বলেন, জমির আগের মালিক সফিউর রহমান মারা গেলে তার ওয়ারেশদের কাছ থেকে তিনি ৪৪ লাখ টাকায় ১০ শতক জমিসহ আধাপাকা বাড়ি কেনেন। এ জমির নামপত্তন হয়েছে তার নামে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, জমির খাজনা হাল সন পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়েছে।
প্রথমে দানপত্র পরে জাল দলিল এবং তারও পরে পার্টিশন মামলা করে কোনো ফল না পেয়ে নাজিরা বেগম এখন জনৈক আবদুস সামাদের মাধ্যমে তার কাছে টাকা চাইছেন। তিনি জিয়াউল ও তার বোন জামাই মোকলেছুর রহমানকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে জিয়াউল সাতক্ষীরা থানায় দুটি জিডি করেন। পুলিশ বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য নাজিরা বেগমকে তার কাগজপত্র হাজির করতে বললেও তিনি তা করছেন না।
তিনি আরও বলেন, নাজিরা বেগমের স্বামী হৃদরোগে মারা গেলে সচুতুর মহিলা তৎকালিন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান চৌধুরি ও ক্ষেত্র সহকারি লিয়াকাত আলির নামে মিথ্যা মামলা করেন আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য। পরবর্তীতে মামলাটি খারিজ হয়ে হয়ে যায়। এভাবে নাজিরা বেগম ও তার দুই মেয়ে একের একের পর এক সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে।
একইভাবে নাজিরা বেগম সাতক্ষীরা সদর সাংসদ মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সম্পাদক যথাক্রমে মুনসুর আহমেদ ও মো. নজরুল ইসলামের পরামর্শও নিচ্ছেন না। উল্টো নাজিরা বেগম জিয়াউল ও তার বোন জামাইকে নানাভাবে হয়রানি করছেন। তিনি তার বাড়ি ও জমি ছাড়ছেন না, ভাড়াও দিচ্ছেন না বলে জানান জিয়াউল।
তিনি নাজিরা বেগমের হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version