এম ওসমান, বেনাপোল: বেনাপোল ও পেট্রাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের শূন্য রেখায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দুই দেশের ‘জয়েন্ট রিট্রেট উৎসব’ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দু’দেশের মাঝে সৌহার্দ বাড়াতে উৎসবটি ইতোমধ্যেই বেশ সাড়া ফেলেছে। বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে পরস্পরের জাতীয় পতাকাকে সম্মান দেখাতে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে রিট্রেট উৎসবের শুরু হয় ২০১৩ সালের ৬ নভেম্বরে।
সেই থেকে প্রতিদিন মাত্র আধা ঘণ্টার এ কার্যক্রম আজ এক উৎসবে পরিণত হয়েছে। দু’দেশের বিভিন্ন এলাকার হাজারো মানুষ উপভোগ করেন এই উৎসব।
তবে জাতীয় দিবস ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অথবা বিশেষ কোন প্রতিনিধি দল সীমান্ত ও বন্দর পরিদর্শনে আসলে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় বলে জানান যশোর-৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ আরিফুল হক।
ভারতের আটারী ও পাকিস্তানের ওয়াঘা সীমান্তে চালু হওয়ার ৫৪ বছর পর বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে চালু হয় রিট্রেট কার্যক্রম। আর এটি ছিল বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রথম।
জয়েন্ট রিট্রেট কার্যক্রম বলতে বোঝায়, দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বিজিবি ও বিএসএফ বিশেষ পোশাকে একই সময়ে সকাল-সন্ধ্যায় জাতীয় পতাকা উঠানো ও নামানোর আগে বিউগলের সুরে বাজবে দু’দেশের জাতীয় সংগীত। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় আমদানি-রফতানি এবং পাসপোর্টযাত্রী চলাচল শুরু হওয়ার আগেই শান্তির পতাকা উঠিয়ে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা প্যারেড এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। পরে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রবেশ গেট খুলে দেওয়া হয়। আবার সন্ধ্যায় একই নিয়মে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য এবং পাসপোর্ট যাত্রীদের যাতায়াত শেষ হলে পতাকা নামানো ও জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। পরে দু’দেশের মধ্যে প্রবেশ গেট আবারো বন্ধ করে দেয়া হয়।
বেনাপোল চেকপোস্ট বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার হারাধন বলেন, ‘রিট্রেট কার্যক্রম’ অনুষ্ঠানটি দর্শনার্থীরা যাতে সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারেন সেজন্য বেনাপোলের শূন্যরেখায় একটি অত্যাধুনিক গ্যালারী তৈরি করা হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের জন্য আসন রয়েছে ৩০০ আর ভিআইপি আসন রয়েছে ২০টি। অপরদিকে বিএসএফও একটি গ্যালারি নির্মাণ করেছেন। যেখানে বসে এই অনুষ্ঠান সবাই উপভোগ করতে পারেন।
ভারতের পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, কোলকাতা বনগাঁসহ বিভিন্ন প্রদেশের মানুষ ও পর্যটকরা এই অনুষ্ঠান দেখতে প্রতিদিন বিকেলে ভিড় জমায়। এটি সীমান্তের একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠান। যা দু’দেশের মধ্যে সম্পৃতির বন্ধন গড়ে তুলবে।
বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে সৌহার্দ সম্প্রীতির প্রতীক ‘রিট্রেট উৎসব’
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/