Site icon suprovatsatkhira.com

প্রাইভেট না পড়ার অপরাধে ছাত্রদের ফেল করানোর অভিযোগ

গাজী আব্দুল কুদ্দুস, চুকনগর: চুকনগরে প্রাইভেট না পড়ার অপরাধে ছাত্রদের ইচ্ছাকৃতভাবে ফেল করানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দিব্যপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
গত সোমবার (৭ অক্টোবর) দিব্যপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মো. বজলুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ বছর ৮ শ্রেণির ১ম সাময়িক পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ছাত্র সংখ্যা বেশি হওয়ায় চার জন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। শিক্ষকরা হলেন- অত্র বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আব্দুস সামাদ মোড়ল, মো. আব্দুল হালিম বিশ্বাস, রোমেজী খাতুন ও বিকাশ চন্দ্র পাল। এর মধ্যে আব্দুস সামাদ মোড়লের গনিতে মোট ৮৮জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ৭৮জন ছাত্র ফেল করেছে। এছাড়া বাকী তিনজন শিক্ষকের বিষয়গুলোতে একই ফলাফল লক্ষ্য করা যায়। তাই নোটিশ দেয়ার আগামী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে একাধিক ছাত্র ও অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, গণিতের শিক্ষক আব্দুস সামাদ মোড়ল পরীক্ষার আগে ক্লাসে ঘোষণা দিয়েছিলেন আমার কাছে প্রাইভেট না পড়ে অন্য শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়লে তাদেরকে পরীক্ষায় ফেল করানো হবে। আর তিনি সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। তাছাড়া বিকাশ চন্দ্র পালের বিরুদ্ধে বাড়িতে কোচিং সেন্টার বানিয়ে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা প্রাইভেট পড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তবে, গণিতের শিক্ষক আব্দুস সামাদ মোড়ল তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক শেখ মো. বজলুর রহমান বলেন, এক ক্লাসে ছাত্র সংখ্যা ৮৮জন। তার মধ্যে যদি মাত্র ১০জন ছাত্র পাশ করে। এটা মেনে নেয়া যায় না। আর যদি এটা আমরা নিরবে সহ্য করি। তাহলে আগামীতে কোন অভিভাবক আমাদের বিদ্যালয়ে ছেলে ভর্তি করবে না। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাই নিরুপায় হয়ে বিদ্যালয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমরা উক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট প্রতাপ কুমার রায় বলেন, আমার কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রত্যাহারের জন্য ৪ শিক্ষক স্বাক্ষরিত একটি আবেদন করা হয়েছে। আমি তাদের আবেদন গ্রহণ করিনি। কারণ এটা কোন বিবেকবান মানুষ মেনে নিতে পারে না। ফলাফল দেখে আমি শুধু বিস্মিত হয়নি, বিবেকের দংশনে আহত ও হতাশ হয়েছি। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির জন্য আমরা নিরালস পরিশ্রম করে চলেছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নের জন্য একের পর এক মন্ত্রী মহোদয়ের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়েছি। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি শতকরা ১০ জন ছাত্র পাশ করে। যে ফলাফল আমাদের ছেলেমেয়েদের অন্ধকারে নিমজ্জিত করবে। এটা মেনে নেয়া যায় না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চোখের সামনে এমন একটি অপরাধ মেনে নিলে অভিভাবকরা আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাই এই সমস্ত অযোগ্য বিবেকহীন শিক্ষকদের কোনক্রমেই ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version