আজ ১ নভেম্বর, জাতীয় যুব দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘জেগেছে যুব, গড়বে দেশ- বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।’ যুব সমাজের উদ্ভাবনী ক্ষমতা, অমিত তেজ ও সাহস, কর্মস্পৃহা ও কর্মক্ষমতা দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পৃথিবীর কাল পরিক্রমায় যুব সম্প্রদায়ই এনেছে পরিবর্তনের নতুন ধারা। সময়ের ¯্রােতধারায় আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়েছে যুবসমাজ। তাই বিশিষ্টজনেরা যুবদের মাঝেই খুঁজে পেয়েছেন অমিত সম্ভাবনার পথ। রাষ্ট্রের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে যুব সম্প্রদায়কে সম্ভাবনার ক্ষেত্র হিসেবে কাজে লাগানোর তাগিদ করেছে বোদ্ধামহল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের তথ্য প্রতিবেদনে বাংলাদেশের যুব সম্প্রদায়কে অফুরন্ত সম্ভাবনার উৎস হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যুব সমাজ যে কোন দেশের মূল্যবান সম্পদ, জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি যুব সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের উপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল। যুবসমাজের মেধা, সৃজনশীলতা, সাহস ও প্রতিভাকে কেন্দ্র করেই গড়ে ওঠে। একটি জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিমÐল। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশও যুব সমাজ জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার, নীতি নির্ধারক ও সিদ্বান্ত গ্রহণকারী। জনসংখ্যার সবচেয়ে প্রতিশ্রæতিশীল ও উৎপাদনমূখী অংশ হচ্ছে যুবগোষ্ঠী। দেশের অসংগঠিত, কর্মপ্রত্যাশী এই যুবগোষ্ঠীকে সুসংগঠিত, সুশৃখল এবং উৎপাদনমূখী শক্তিতে রুপান্তরের লক্ষ্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়াধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বেকার যুবদের উন্নয়নের মূল ধারায় ফিরিয়ে এনে দেশ গঠনে অংশগ্রহণ বাড়াতে যুবদের যুগোপোযোগী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়, প্রশিক্ষণ পরবর্তী প্রকল্প গ্রহণকারীদের মাঝে ঋণ প্রদান করা হয়। সৃষ্ঠিলগ্ন হতে অদ্যবধি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর দেশের যুবসমাজের সার্বিক কল্যাণের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে ৫৫ লাখ ১ হাজার ৫শ ৯০ জন যুব প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন যাদের অনেকেই দেশে ও বিদেশে সম্মানজনক সামাজিক অবস্থান করে নিতে স্বক্ষমতা অর্জন করেছেন। যুব ঋণ গ্রহণ করেছে ৯ লাখ ৯ হাজার ৩৩ জন যার পরিমান ১৭১৯ ৯২.৯০ লক্ষ টাকা এবং আত্মকর্মী হয়েছে ২১ হাজার ৩২ হাজার ১৬৮ জন।
যুবশক্তিকে কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যুবসম্পদে পরিণত করাই আমাদের দায়িত্ব হওয়া উচিত। নেতৃত্বের বিকাশ, মানবীয় গুণাবলি অর্জন, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, পরিবেশ দূষণ রোধ, লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরণ, দুর্নীতি প্রতিরোধ প্রক্রিয়ায় যুবকদের অংশগ্রহণ, দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ, আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতায়ন প্রভৃতি অর্জনে যুবসমাজকে নিয়ে কাজ করছে দেশের জেলা উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয় সমূহ। যুবসমাজ উন্নয়নের জন্য সামাজিক, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চাবিকাঠি। এমন প্রেক্ষাপটে যে পথে যুবসমাজের দক্ষতা ও চ্যালেঞ্জ পরিচালনা করা হবে তারই প্রভাব পড়বে বর্তমান আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর। প্রভাব পড়বে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জীবনযাপন ও কল্যাণের ওপর। সমাজের শক্তি, উপকারভোগী এবং সামাজিক পরিবর্তনের শিকার সিংহভাগই যুবসমাজ। তারা প্রতিনিয়ত ভাগ্য দ্বারাও পরিচালিত। তারুণ্যের জোয়ারে উদ্ভাসিত যুবসমাজকে সুসংগঠিতকরণের মাধ্যমে আত্মপ্রত্যয়ী যুবশক্তি গঠনে তৎপর হতে হবে আমাদের। যুবরাই পাল্টে দেবে সনাতন ধারণা। যুব সমাজের মেধা, মনন আর কর্মশৈলীতে গড়ে উঠবে স্বনির্ভর বাংলাদেশ।
অধিদপ্তরের ভিশন: বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গৌরব বৃদ্ধিতে সক্ষম, নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন আধুনিক জীবনমনস্ক যুবসমাজ।
অধিদপ্তরের মিশন: জীবনের সর্বক্ষেত্রে যুবদের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাদের প্রতিভার বিকাশ ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সম্প্রসারণের ধারাবাহিকতায় ব্যাপক দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, পরামর্শ এবং সহায়তার মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধানে ফলপ্রসূ উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব। মোট কথা জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করলেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা সহজ হবে।
চীনাদের একটি প্রবাদ আছে, ‘তুমি যদি কাউকে একটি মাছ খাওয়াতে চাও, তবে আগে তাকে মাছ ধরার কৌশল শেখাও’। দক্ষতা অর্জনের অন্তর্নিহিত অর্থ এ প্রবাদে আছে। দক্ষতা ছাড়া সমৃদ্ধি অসম্ভব। দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারলে বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধশালী দেশে উন্নীত হবে। ১৬ কোটি মানুষের হাত দক্ষ কর্মীর হাত হলে উন্নয়নের চাকা ঘুরবেই। কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। আমাদের রয়েছে বিশাল সম্ভাবনাময় যুবসমাজ। যুব সম্প্রদায়কে সঠিকভাবে প্রশিক্ষিত না করা গেলে সমাজে সন্ত্রাস, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, যৌতুক, নারী নির্যাতনসহ নানা ধরনের অস্থিরতা বাড়বে। চাকরির বাজারে আসা বিপুলসংখ্যক শিক্ষিত যুবক জনগোষ্ঠীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে গ্রামীণ এলাকায় উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের মোট বেকার যুব জনশক্তির সিংহভাগের বাস গ্রামাঞ্চলে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বেকারদের ৬৯.৫ শতাংশ বাস করে পল্লী এলাকায়। বাকি ৩০ দশমিক ৫ ভাগ শহরের অধিবাসী। গ্রাম ও শহর উভয় ক্ষেত্রে বেকারদের মধ্যে যেমন রয়েছে স্বল্পশিক্ষিত যুবক, তেমনই আছে উচ্চ ডিগ্রিধারী। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সারা বছর দেশে চাকরির যে ক্ষেত্র সৃষ্টি হয় বা পদ খালি হয়, তার চেয়ে প্রার্থীর সংখ্যা বহুগুণ বেশি। কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং কর্মপ্রার্থী এ দুইয়ের মধ্যকার ব্যবধান দিন দিন বেড়ে চলছে। প্রকৃতপক্ষে বেকার সমস্যা মোকাবেলা বা কর্মসংস্থানের পর্যাপ্ত সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রয়োজন সুদূরপ্রসারী ও বা¯তবভিত্তিক পরিকল্পনা গ্রহণ।
আর এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সাতক্ষীরা। জেলার যুব কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বিবরণী তুলে ধরা হলো-
প্রশিক্ষণ- দক্ষ মানব সম্পদ সৃষ্টির জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের যুব প্রশিক্ষন কেন্দ্র, জেলা কার্যালয় এবং উপজেলা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে সাধারণত দুই ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ। প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ সাধারণত যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং জেলা কার্যালয়ের মাধ্যমে আবাসিক/অনাবাসিক দুইভাবে প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের মেয়াদ ১ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত হয়ে থাকে। অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ বা ভ্রাম্যমান প্রশিক্ষণ দেশের সকল উপজেলা কার্যালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ট্রেডে প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের মেয়াদ ১ সপ্তাহ থেকে ২১ দিন পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের জন্য সরকার নির্ধারিত কিছু ফিস প্রদানের বিধান রয়েছে। কিন্তু অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের জন্য কোন ফিস প্রদান করার প্রযোজন হয় না। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। জেলা কার্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ তথ্য ট্রেড ভিত্তিক নিম্মোক্ত ভাবে তুলে ধরা হলো। শুরু থেকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে পোষাক তৈরী ২ হাজার ২শ ৫ জন, মৎস্য চাষ ৪ হাজার ২৯ জন, মডার্ণ অফিস ম্যানেজমেন্ট ৪শ ৯৬ জন, কম্পিউটার বেসিক ১ হাজার ৭শ জন, ইলেকট্রনিক্স এন্ড হার্ডওয়্যারিং ৭শ ৪৭ জন, রেফ্রিজারেশন এন্ড এসি ৬শ ১০ জন, মোবাইল সার্ভিসিং এন্ড রিপেয়ারিং ৪০ জন, ফ্রিল্যান্সিং/আউটসোসিং ১শ ৩৯ জন।
যুব ঋণ প্রদান- ঋণ গ্রহীতার অবশ্যই প্রকল্প থাকতে হবে। এবং তার নিজস্ব কিছু বিনিয়োগ থাকতে হবে। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে সাধারনত দুই ধরণের ঋণ প্রদান করা হয়। একক ঋণ এবং গ্রæপ ভিত্তিক ঋণ (পরিবার ভিত্তিক ঋণ)। একক ঋণ ২৪টি কিস্তির মাধ্যমে ২ বছরে পরিশোধযোগ্য, গ্রæপ ভিত্তিক ঋণ সাপ্তাহিক ৫২টি কিস্তির মাধ্যমে ১ বছরে পরিশোধযোগ্য। জেলার ৭টি উপজেলার ঋণ কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরা হলো। সেপ্টেম্বর/১৮ পর্যন্ত ঋণ কার্যক্রম (ক) আত্মকর্মসংস্থান ভিত্তিক ঋণ কর্মসূচি- বিতরণ এবং আদায় চলমান অর্থবছরে ৯৫ জনকে ৬৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে আদায়ের হার ৯৮%। (খ) পরিবার ভিত্তিক ঋণ কর্মসূচি: বিতরণ এবং আদায় অর্থবছরে ১০০ জনকে১৪ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে আদায়ের হার ৯৯%।
আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি- যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অন্যতম লক্ষ্য আত্মকর্মী সৃষ্টি করা। অধিদপ্তরের কোন কর্মকর্তা/কর্মচারীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রচেষ্টায় ঋণ গ্রহণ ছাড়া যদি কোন যুবক প্রকল্প গ্রহণের মাসে কমপক্ষে ছয় হাজার টাকা আয় করে তিনিই আত্মকর্মী। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রশিক্ষণ এবং ঋণ প্রদানের মাধ্যমে আত্মকর্মী সৃষ্টি করে যাচ্ছে। সারা দেশে হাজার হাজার আত্মকর্মী সৃষ্টির মাধ্যমে বেকারত্ব হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিবছর সারা দেশ থেকে ১০ জন সফল আত্মকর্মীকে জাতীয় যুব পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ যাবৎ সাতক্ষীরা থেকে ৩ জন সফল যুবক জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন
ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি- বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছিল ঘরে ঘরে বেকার যুবদের চাকুরী প্রদান। অর্থাৎ ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি। ৩ মাস প্রশিক্ষণ শেষে ২ বছরের জন্য অস্থায়ী কর্মে সংযুক্তি প্রদান। জেলার ৭টি উপজেলায় ১৪ হাজার ৬শ ৮১ জনকে ৩ মাসের প্রশিক্ষণ এবং ১২ হাজার ৪শ ২৯ জনকে অস্থায়ী সংযুক্তি প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শ্যামনগর উপজেলায় এ কর্মসূচি শেষ হয়েছে। বাকী ৬টি উপজেলায় এ কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
অনলাইন সেবা প্রদান- যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর সাতক্ষীরা জেলা থেকে ৪টি বিষয়ের উপর অনলাইন সেবা প্রদান করা হয়। ক) বিভিন্ন ট্রেডে অনলাইন ভর্তির আবেদন গ্রহণ করা হয়। ফলে দেশের যে কোন স্থান থেকে একজন যুব/যুব নারী অনলাইনে এই ঠিকানায় (িি.িধষষভড়ৎসং.মড়া.নফ) যে কোন ট্রেডে ভর্তির আবেদন করতে পারে। খ) অনলাইনে একজন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যুব/যুব নারী (িি.িফুফ.মড়া.নফ) এই ঠিকানায় যুব ঋণের আবেদন করতে পারে। ফলে তাকে আর কষ্ট করে অফিসে আসতে হয় না। গ) বেকার যুবদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিতরনণকৃত ঋণের কিস্তি ডাচবাংলা মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যমে আদায় করা হয়। ঘ) সকল উপজেলা কার্যালয়ের ঋণ রিপোর্ট উপজেলা থেকে (িি.িফুফ.মড়া.নফ) ওয়েব সাইটে প্রেরণ করা হয় ।
যুব সংগঠন রেজিষ্ট্রেশন প্রদান- সমাজে বিক্ষিপ্ত যুব সমাজকে সংগঠিত করে তাদের মধ্যে কর্মস্পৃহা সৃষ্টির জন্য যুব সংগঠন তৈরী করা এবং তাদের রেজিষ্ট্রেশন প্রদান করা হয়। যাতে সংগঠিত যুব সমাজ সমাজের কুসংস্কার, অসামাজিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলে পারে।
জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর সভা সেমিনার আয়োজন- যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সময় জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর সভা সেমিনার আয়োজনকরে থাকে। যেমন- সন্ত্রাস জঙ্গীবাদ ও মাদকের বিরুদ্ধে সেমিনার। নারীর ক্ষমতায়ন এর উপর সেমিনার। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কেন্দ্রীয় পর্যায়, জেলা পর্যায়, উপজেলা পর্যায় সময়ে সময়ে এই ধরনের সভা সেমিনারে আয়োজন করে থাকে ।
আলোচনার শেষে এসে আমরা বলতে পারি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখে ছিলেন বৈষম্যহীন, সুখী সমৃদ্ধ, ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়ার তার সে স্বপ্ন আজ বাস্তবে রুপ লাভ করতে যাচ্ছে, তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের মাধ্যমে। প্রযুক্তিগত জ্ঞান সমৃদ্ধ দক্ষ জনশক্তিরাই হয়ে উঠতে পারে দেশের উন্নয়নের মূখ্য চালিকা শক্তি যা এই দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে রুপায়িত করবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হলো একটি দৃষ্টিভঙ্গি। দৃষ্টিভঙ্গি এই অর্থে যে, ডিজিটাল কর্মকাÐের যে সামাজিক প্রভাব তাকে শুধু গাণিতিক তথ্যচিত্র দিয়ে পরিমাপ করা যায় না এবং দেখা দরকার এর গুণগত পরিবর্তন ও সম্ভাবনার দিক। প্রকৃতপক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশ হচ্ছে সুখী সমৃদ্ধ, শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ এবং যার মুখ্য চালিকা শক্তি হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও আমাদের যুব সমাজ। বিগত ১২ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণায় বলেছিলেন যে, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে ২০২১ সালে বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিণত হবে।’ মূলত একটি উন্নত দেশ, একটি ডিজিটাল সমাজ, ডিজিটাল যুগের জনগোষ্ঠী, রূপান্তরিত উৎপাদন ব্যবস্থা, নতুন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি সব মিলিয়ে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনি। তা আজ বাস্তবে রুপ নিতে যাচ্ছে ইতোমধ্যে আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৭শ ৫১ ডলারে হয়েছে, আমাদের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বিদেশ থেকে এখন আমাদের খাদ্য আমদানি করতে হয় না, জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন সূচকে আমরা ৩ ধাপ এগিয়েছি। এবারের প্রতিবেদনে ১৮৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে ১৩৬ তম অবস্থানে, ২০১৭ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৩৯-এ। সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতিসংঘের ই-গর্ভনমন্টে জরিপে ১৫০তম স্থান থেকে ১১৫ তম অবস্থান র্অজন করেছে। তথ্য প্রযুক্তির ক্রমাগত এই সফলতার ফলস্বরূপ বাংলাদেশ বিশ্বে আইসিটি সেক্টররে সম্মান জনক পুরস্কার ‘ওর্য়াল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমশেন সোসাইটিসহ’ নানা আর্ন্তজাতিক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছে। এত অল্প সময়ে তথ্য প্রযুক্তির সকল ক্ষেত্রে যে অভাবনীয় সাফাল্য অর্জন করেছে তা সত্যই প্রশংসার দাবীদার। সাফাল্যের এই ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি এর সুফল ছড়িয়ে দিতে হবে সমাজের সকল স্তরে তবেই না বাস্তবায়ন হবে বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প- ২০২১, তথা স্বাধীনতার মহান স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা। লেখক: সহকারি পরিচালক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সাতক্ষীরা।
জাতীয় যুব দিবস ২০১৮: জেগেছে যুব গড়বে দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/