চুকনগর (খুলনা) প্রতিনিধি: চুকনগরে ঐহিত্যবাহী জেলা পরিষদের ডাক বাংলাটি এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে ডাক বাংলার মূল ভবনটি চাউল ও নারকেলের গোডাউন করা হয়েছে। মাঠটি বানানো হয়েছে তার হাঁস মুরগী ও গরু ছাগলের অভয়ারণ্য।
সরজমিনে গেলে একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, চুকনগর গ্রামের অমরেশ সাধুর ছেলে নাড়ু গোপাল সাধু নামে এক প্রভাবশালী চাউল ব্যবসায়ী দীর্ঘ ১০-১২ বছর ধরে ডাক বাংলা দখলে নিয়ে চাউল ও নারকেলের গোডাউন বানিয়েছে। সেখানে তার অনুমতি ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জানা যায়, চুকনগর শহরের যতিন কাশের রোডের পশ্চিম প্রান্তে বুড়িভদ্রা নদীর গা ঘেষে বিট্রিশ আমলে এটি টিনের ছাউনি ও নলি বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি করা হলেও ১৯৭০ সালে খুলনা জেলা পরিষদ ডাক বাংলা নামে এখানে একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবন নির্মাণের পর থেকে এটি ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিশ্রামের জন্য একটি নিরিবিলি কোলাহল মুক্ত আশ্রয়স্থল। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় এখানে এসেছিলেন। এছাড়া সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী সালাউদ্দীন ইউসুফ, তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী অ্যাড. শেখ আমজাদ হোসেন, যোগাযোগ মন্ত্রী খাঁন এ সবুর, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা এখানে এসে থেকেছেন।
তবে, এসব কথা এখন অতীত। বর্তমানে এদিকে তাকানোর সময় কারো নেই। সংস্কারের অভাবে মূল ভবনটি ধ্বসে পড়ছে। মাঠটি বানানো হয়েছে হাঁস মুরগী ও গরু ছাগলের অভয়ারণ্য। বারান্দায় নারকেলের ছাবড়া বা খোলা রাখার গোডাউন বানানো হয়েছে। নোংড়া ময়লা ও আবর্জনায় পরিপূর্ণ মাঠসহ ভবনের বারান্দা। দুটি রুম নিজের প্রয়োজনে নাড়– বাবু গোডাউন বানালেও এর পিছনে ১টি টাকাও খরচ করেনি সে। অনেকের কাছে তিনি বলেন, তিনি নাকি রুম ২টি ভাড়া নিয়েছেন। কিন্তু ভাড়ার টাকা কোথায় যায় সেটা কেউ জানে না। বিট্রিশ আমলে ভোলানাথ নামে এক ব্যক্তি এখানে কেয়ারটেকারের দায়িত্বে ছিলেন। দীর্ঘ ৩০ বছর দায়িত্ব পালন করার পর তিনি মারা গেলে তার ছেলে শংকর নাথ দায়িত্ব পান। কিন্তু তার অকাল মৃত্যুতে ২০০১ সালে শংকর নাথের স্ত্রী পুতুল রানীকে জেলা পরিষদ থেকে দায়িত্ব দেয়া হয়। বর্তমান পুতুল রানীর চাকুরী বয়স ১৮ বছর হলেও তিনি এখানে মাত্র ১৮দিনের কাজ বা দায়িত্ব পালন করেছেন কিনা সেটাই এলাকাবাসীর প্রশ্ন। বর্তমানে ডাক বাংলার গেটটি সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। চতুর পাশের প্রাচীর ভেঙে পড়েছে। এ সুযোগকেও কাজে লাগাচ্ছে নাড়– গোপালের পরিবার। তার ভাইবোন নদীর পাশ দিয়ে বসতবাড়ি বানিয়ে বসবাস করছে। চলাচলের রাস্তা বানিয়েছে ডাক বাংলার মাঠকে। এ ব্যাপারে নাড়– গোপাল বলেন, আমি আগে রুম দুটিতে নারকেল ও চাউল রাখতাম। বর্তমানে রাখি না।
চুকনগরে জেলা পরিষদের ডাক বাংলা ব্যবসায়ীর দখলে!
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/