ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশে খাদ্য সংকট নেই। এখন সচরাচর না খেয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে না। তবে পুষ্টিগুন সম্পন্ন খাদ্যের অভাব এবং অধিক মাত্রায় ভেজাল ও কীটনাশকযুক্ত খাদ্য খেয়ে আমরা রোগগ্রস্ত হয়ে পড়ছি। এতে শিশুরা জন্মগতভাবে নানা ব্যাধিতেও আক্রান্ত হচ্ছে। মায়েরা ভুগছে রক্ত স্বল্পতায়। প্রসবকালীন মাতৃমৃত্যুর অন্যতম কারণও হয়ে দাঁড়িয়েছে পুষ্টিহীন খাদ্য।
বুধবার সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ সাতক্ষীরা জেলা কমিটি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, সমাজে সচেতনতার অভাব এবং খাদ্য নিরাপত্তা আইনের বাস্তবায়ন না থাকায় বিপুল জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ পেতে হলে দেশে খাদ্য নীতির পাশাপাশি যুগোপযোগী খাদ্য আইন প্রণয়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। সবার মাঝে খাদ্যের বিতরণও নিশ্চিত হওয়া দরকার। এ প্রসঙ্গে তারা সমাজ থেকে দারিদ্র্য বিমোচনের কথাও তুলে ধরেন।
সাতক্ষীরার চুপড়িয়া মহিলা সমিতির সভাপতি মরিয়ম মান্নানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল হামিদ, জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক আনিসুর রহিম, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, অধ্যক্ষ মোবাশ্বেরুল হক জ্যোতি, সাতক্ষীরা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফারাহ দীবা খান সাথী, পৌর কাউন্সিলর সফিকুদ্দৌলা সাগর, টিআইবির আবদুল আহাদ, বেসরকারি সংস্থা স্বদেশ’র মাধব চন্দ্র দত্ত, আবু জাফর সিদ্দিকী, লুইস রানা গাইন প্রমুখ।
তথ্য উপাত্ত তুলে ধরে তারা বলেন, দেশের প্রায় দুই কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে রয়েছে। অতি দরিদ্র মানুষের সংখ্যাও প্রায় দুই কোটি। সব মিলিয়ে ৪ কোটি মানুষ দরিদ্র উল্লেখ করে তারা বলেন, এসব মানুষ পুষ্টিযুক্ত খাদ্য বঞ্চিত। প্রতিদিন প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন ২১২২ কিলো ক্যালরি সুষম খাদ্য। পরিসংখ্যান তুলে ধরে বক্তারা আরও বলেন, দেশের ৪৪ শতাংশ নারী রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। ৩৬.১ শতাংশ শিশু কম উচ্চতা সম্পন্ন বা খর্বকায় হয়ে পড়েছে। ৩২.৬ শতাংশ শিশু কম ওজন সম্পন্ন। এ ছাড়া ১৪.৩ শতাংশ শিশু কৃশকায় হয়ে পড়েছে। পুষ্টিযুক্ত খাবার খেলে তারা এ অবস্থার শিকার হতেন না বলে দাবি করেন তারা।
বক্তারা আরও বলেন, কীটনাশকযুক্ত শাক সবজি খেয়ে আমরা আন্ত্রিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। ভেজাল গুড়ো দুধ, ভেজাল ভোজ্য তেল এমনকি মাছে ও ফলে ব্যবহৃত বিভিন্ন কেমিক্যাল বিশেষ করে ফরমালিন জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করে আমরা নানা রোগের দিকে ঝুঁকে পড়ছি বলে উল্লেখ করেন তারা।
খাদ্য অধিকার আমাদের মৌলিক চাহিদার অন্যতম জানিয়ে বক্তারা বলেন, খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করা হলে এই সংকট থেকে উত্তরণ ঘটবে ।
খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভা বক্তারা: ভেজাল ও কীটনাশকযুক্ত খাদ্য খেয়ে রোগগ্রস্ত হয়ে পড়ছে মানুষ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/