ডেস্ক রিপোর্ট: ধর্মীয় সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ। এদেশের মানুষ পূর্ণ স্বাধীনতায় স্ব স্ব ধর্ম পালন করে থাকে। তারা ঈদ পূজাসহ সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে উৎসব মুখর করে তোলে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার মহানবমী তিথিতে বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে ‘দুর্গোৎসব ও বাংলাদেশ, সম্প্রীতির সেতু বন্ধন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
তারা বলেন, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশ সব ধর্ম ও মতের মানুষের বাস্তুভিটা। এখানে অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালনের ধারাকে অব্যাহত রাখতে গণতন্ত্রের সাবলীল চর্চা করতে হবে। এজন্য সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। একটি বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা। আমরা সবাই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করছি। আমাদের সংগ্রাম চলছে ও চলবে উল্লেখ করে তারা বলেন, সমাজের একটি অপশক্তি আবারও বাংলাদেশকে পেছনে ফিরিয়ে নিতে চায়। তারা গণতন্ত্রের শত্রু, উন্নয়নের শত্রু। তাদের প্রতিহত করার অঙ্গিকার করতে হবে।
প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, তালা-কলারোয়া আসনের সংসদ সদস্য অ্যাড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, জেলা আওয়োমী লীগ সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মুনসুর আহমেদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, ৩৩ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গোলাম মহিউদ্দিন খোন্দকার, পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, জেলা মন্দির সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ প্রমুখ।
ভোরের কাগজের ড. দিলীপ কুমার দেবের সঞ্চালনায় আলোচক অতিথিবৃন্দ বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ মুক্তমনে ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করছে। সম্প্রীতি কী তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এ ক্ষেত্রে আমাদের মধ্যে একটি মেল বন্ধন সৃষ্টি করে তুলতে হবে।
সাংসদ মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে এক একজন সৈনিক। আমাদের যুদ্ধ চলছে এবং চলবে।
সাংসদ এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বলেন, জাতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিচয় দিয়েছে ৫২ তে, ৭১ এ। ৭৫ এ বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা ছিল সাম্প্রদায়িক শক্তি। এই শক্তিকে আর বাংলাদেশে মাথাচাড়া দিতে দেওয়া হবে না। ২০০৪ এর ২১ আগস্ট ঢাকায় ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাকারীদের রাজনৈতিক শক্তি দিয়ে মোকাবেলা করেছে জনগণ। অবশেষে তারা বিচারের মুখোমুখি হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক বন্ধন আরও দৃঢ় করে তুলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে দেশকে উদ্ভাসিত করতে হবে।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সমুদয় অপশক্তিকে উৎখাত করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সবাই কাজ করছি।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, সন্ত্রাস সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়তে আমরা সবাই এক কাতারে রয়েছি। পুলিশ সুপার বলেন, সাতক্ষীরার দুর্নাম ঘুচিয়ে প্রমাণ করতে হবে আমরা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়ছি। আমরা সাম্প্রদায়িক মধুর সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। এটাই বাংলাদেশ।
বিজিবি অধিনায়ক বলেন, দেশের মানুষ আনন্দমূখর পরিবেশে স্ব স্ব ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করছে কারণ আমরা সাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করি না।
পৌর মেয়র বলেন, আমরা স্ব স্ব ধর্ম পালন করি পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। আমরা এক ও অভিন্ন পথে চলছি।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সম্পাদক বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, আমরা পূর্ণ মর্যাদা ও নিরাপত্তার মধ্যে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে প্রমাণ করেছি আমরা বাংলাদেশিরা অসাম্প্রদায়িক। স্বাগত বক্তব্যে প্রেসক্লাব সভাপতি বলেন, এদেশ আমাদের সবার। আমরা সবাই মিলে দেশটিকে অসাম্প্রদায়িক হিসাবে গড়ে তুলছি।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সেতুবন্ধনে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে মিলন মেলা
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/