Site icon suprovatsatkhira.com

সাতক্ষীরা-৪: মানুষের হয়রানি বন্ধ করে সুশাসন নিশ্চিত করবো

ফাহাদ হোসেন:
কাজী আলাউদ্দীন। ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে অধ্যয়নকালে ১৯৭০ সাল হতে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত সরকারি বিএল কলেজে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী ছিলেন। মাঝখানে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। অতঃপর ২০০০ সালের বন্যায় এলাকার মানুষের পাশে থেকে নিরলসভাবে কাজ করেন। প্রচুর ত্রাণ দিয়েছেন, যেটা জাতীয়ভাবে বিভিন্ন জরিপে উঠে আসে এবং তৎকালিন বিভিন্ন মহলের আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে পড়ে। বিষয়টি চোখে পড়ে বেগম খালেদা জিয়ার। তিনি তাকে ২০০১ সালের ১২ আগস্ট বিএনপির বনানী অফিসে ডেকে দলের সদস্য করে নেন। ২০০১ এর নির্বাচনে দেন দলীয় মনোনয়ন। নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য। ২০১০ সালে তিনি জেলা বিএনপির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন। বর্তমানে জেলা কমিটি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
কাজী আলাউদ্দীন দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান। নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সুপ্রভাত সাতক্ষীরা’র সাথে।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে ১ অক্টোবরের নির্বাচনে সাতক্ষীরা-৪ থেকে আমি বিএনপির ধানের শীষ মার্কায় নির্বাচন করে প্রাক্তন মন্ত্রী ডা. রুহুল হককে ৪২ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করি। সে সময় আমি তিনটা ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ করেছিলাম- একটা সখিপুরে, একটা নলতাতে ও আরেকটা কালিগঞ্জে। তখন সবচেয়ে বড় নদী কাকশিয়ালী। এই নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ করেছি। যা তৎকালিন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া হেলিকপ্টারে উযড়ে এসে উদ্বোধন করেছিলেন। আমি কাজী আলাউদ্দিন ডিগ্রী কলেজ স্থাপন ও এমপিওভুক্ত করেছি। নিজের টাকায় ১৭বিঘা জায়গা কিনে আমি এটা স্থাপন করেছিলাম। এছাড়া কাজী আলাউদ্দিন হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেছি। ১৮৫ কি.মি. বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করেছি। বিভাগে একটা ফায়ার ব্রিগেড স্টেশন বরাদ্দ ছিল। পার্লামেন্টে কথা বলে আমি সেটা কালিগঞ্জে আনতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়া বড় বড় রাস্তা যেমন, কালিগঞ্জ থেকে আশাশুনি, দেবহাটা থেকে আশাশুনিসহ অসংখ্য রাস্তা, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, গির্জা প্রতিষ্ঠা করেছি সততার সাথে। স্বাধীনতার পরে অনেকেরই কম-বেশী দুর্নাম ছিল। আমার সময়েও অনেক এমপিরা কাবিখা-টিআর, টেন্ডারবাজির সাথে জড়িত ছিল, কিন্তু আমি ছিলাম না। বেশীর ভাগ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির এমপিরা বিভিন্ন দুর্নীতির কারণে দুদকের মামলা খেয়েছিল, ওয়ারেন্টের আসামি ছিল, জেল খেটেছিল কিন্তু দুদক তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে বিন্দুমাত্র ত্রুটি বের করতে পারেনি। আমি এমপি থাকাকালিন সবচেয়ে বেশী মানুষের কাছে গিয়েছি এবং আমি এমপি না থাকা অবস্থায়ও বিগত ’০৮ সাল থেকে শ্যামনগর এবং কালিগঞ্জের ২০টা ইউনিয়ন প্রতিবছর অন্তত চার-পাঁচ বার করে গিয়েছি। ২০১৩ সালের আন্দোলনেও আমার এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখি, যার কারণে আমার নামে চারটা কেস হয়েছিল, সেই কেস এখনো সাতক্ষীরার কোর্টে ঝুলতেছে। এসব কারণে মানুষ আমাকে চায়। কালিগঞ্জ-দেবহাটা-শ্যামনগরে আমি এত বেশি কাজ করেছি, বিশেষ করে শ্যামনগরে আমি আসার আগেও উন্নয়ন হয়নি এবং আমি চলে যাওয়ার পরেও যে দুজন এসেছে তারা উন্নয়ন করাতো দূরের কথা আমার করা কাজগুলো মেরামত করতেও সক্ষম হয়নি। মানুষ বলে, স্বাধীনতার পরে শ্যামনগরে ১০ জন এবং কালিগঞ্জে ১০জন এমপি এসেছে- কাজী আলাউদ্দিন যে কাজগুলো করেছে, বাকি সাবার কাজ এক জায়গায় করলেও তার সমতুল্য হবে না। মানুষ বলে ’০৮ সালে উনি যদি স্বতন্ত্রও দাড়াতেন তাহলে আমরা উনাকেই ভোট দিতাম। দলের প্রতি আনুগত্যের কারণে আমি সেটা করিনি। এজন্য দল অবশ্যই আমাকে মনোনয়ন দেবে।
দলে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী আছে, এটাকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে দূরত্ব বা মত বিরোধ তৈরি হতে পারে এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার ২০টা ইউনিয়ন। তারা রেডি হয়ে বসে আছে। প্রতীক পাওয়ার পর আমার মানুষের কাছে যাওয়াও লাগবে না। তারা আমাকে ভোট দেবে। প্রচুর ভোটে আমাকে জয় যুক্ত করবে। কেউই বিরোধিতা করবে না। প্রতীক পাওয়ার পর সবাই একতাবদ্ধভাবে কাজ করবে। তাছাড়া আমার নামে প্রতীক আসার পর অন্য দলেও কেউ বিরোধিতা করতে পারবে না। কারণ এলাকায় যে জোয়ার চলবে, তাতেই বিরোধ ভেসে যাবে ইনশাল্লাহ। আমার বিপক্ষে হিন্দু, মুসলমান, জামাত, আওয়ামী লীগ বলে কিছু নেই। সবাই বলে আমি আসলে কোন চিন্তা ছাড়াই মানুষ আমাকে দেখেই ভোট দেবে।
বর্তমানে মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে তিনি বলেন, মানুষ মিথ্যা মামলা নিয়ে প্রচ- দুর্ভোগে আছে। এটা বন্ধ করা দরকার।
মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হলে কোন কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এলাকার মানুষের জন্য করতে চান- এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রথমে পুলিশি হয়রানি বন্ধ করে সুশাসন নিশ্চিত করবো। যেটা আমার সময়ে আমি করতে হক্ষম হয়েছিলাম। দ্বিতীয়ত, সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে আগে নজর দিব। বুড়িগোয়লিনী থেকে শুরু করে যেখানে মানুষ বেশী অবহেলিত এবং সর্বোপরি আমার এলাকার উন্নয়নের জন্য সবসময় তাদের পাশাপাশি থাকব। তাদের সাথে মতবিনিময় করব, উঠাবসা করব। সুখ-দুঃখের ভাগি হব।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version