Site icon suprovatsatkhira.com

সাতক্ষীরা-২: শিল্প কল-কারখানা স্থাপন ও পরিবেশবান্ধব সাতক্ষীরা উপহার দেবো

এস.এম নাহিদ হাসান:
নজরুল ইসলাম। সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। ছাত্রাবস্থায় বাবার হাত ধরেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ১৯৮৪ সালে ছিলেন আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের ট্রেজারার। ১৯৯২ সালে ফিংড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পান। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে সাতক্ষীরা সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেন। ১৯৯৭ সালে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৫৪ হাজার ভোট বেশি পেয়ে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালে পুনরায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সর্বশেষ জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গণসংযোগে।
সাতক্ষীরা-২ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশার ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম কথা বলেছেন দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরা’র সাথে।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি যখন ১৯৯৬ সালে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করি তখন সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ততোটা শক্তিশালী ছিলো না। দীর্ঘদিন ধরে সদর উপজেলাকে ঘিরে রাজনীতি করার কারণে তৃণমূল মানুষের সাথে আমার জনসম্পৃক্ততা রয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে থেকে এ এলাকায় আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার চেষ্টা করেছি। মানুষের বিপদে আপদে পাশে থেকেছি। এছড়া বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জেলার সাতটি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। আমার বিশ্বাস দল আমার উপর আস্থা রাখবে।
সাতক্ষীরা-২ আসনে আওয়ামী লীগে একাধিক ব্যক্তি মনোনয়ন প্রত্যাশায় গণসংযোগ করছেন- এটাকে ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে- এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এখানে প্রতিযোগিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আমার মত আরো অনেকে এ আসন থেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন। এটাকে কেন্দ্র করে অনেক নেতা-কর্মী তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। এটা দোষের কিছু না। কারণ নেত্রী ও দলীয় হাইকমান্ড যাকে নৌকা প্রতীক দেবে সকল নেতা-কর্মী সবকিছু ভুলে বঙ্গবন্ধুর নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করবে। নেত্রী যদি আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে সাথে নিয়ে নৌকার বিজয় ঘটিয়ে এ আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দেবো।
মানুষের বর্তমান দুর্ভোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জননেত্রী একটানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থেকে যে অঙ্গিকার করেছিলেন তা বাস্তবায়ন করেছেন। আমরা মেডিকেল কলেজ পেয়েছি, বাইপাস সড়ক পেয়েছি, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পেয়েছি, সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র, নদী খনন করেছেন, ভোমরা স্থল বন্দরকে পূর্ণাঙ্গ বন্দরে রূপ দেওয়া ও রেল লাইনের কাজ চলছে। এছাড়া শিক্ষাখাতে অবকাঠামোর উন্নয়ন ঘটেছে। তারপরও আমার এলাকায় কিছু সমস্যা রয়েছে। জনস্বার্থে সাতক্ষীরা পৌরসভার মান উন্নয়ন করার মধ্যদিয়ে পৌরবাসীর সেবার মান বাড়ানের সুযোগ রয়েছে। বর্তমান সময়ে গ্রাম অঞ্চলে অনেক রাস্তা ঘাটের কাজ হয়েছে। কিন্তু কিছু রাস্তার কাজ এখনো বাকি আছে। সেগুলো করলে এ আসনের মানুষের ভোগান্তি থাকবে না। আমাদের এখানে যে নদীগুলো আছে সেগুলো খনন করা হয়েছে। তবে সেগুলো অল্প সময়ের মধ্যে আবার ভরাট হয়ে যায়। নতুন করে বড় ধরণের প্রকল্পের মাধ্যমে এ নদীগুলো গভীরভাবে খনন করতে হবে। আমাদের সদর হাসপাতাল বেশ উন্নত। কিন্তু এখানে ডাক্তার সংকট সব সময় লেগেই থাকে। এছাড়া এখানে যেসব উন্নত মেশিন আছে তা পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবলের অভাবে সেগুলো অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। যার কারণে এ জেলার মানুষ সদর হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছে না। এগুলো নিয়ে কাজ করার সুযোগ আছে।
দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোন কাজগুলো করবেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রথমেই সাতক্ষীরা পৌরসভার মানউন্নয়নে কাজ করবো। কারণ সদর উপজেলার একটি বহৎ অংশের মানুষ পৌরসভার আওতায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে পৌরসভার সড়কগুলোর নাজুক অবস্থা। অনেক গ্রামের তুলনায় সাতক্ষীরা পৌরসভার সুযোগ সুবিধা কম। এছাড়া বিশুদ্ধ পানির সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জারিত পৌরবাসী। আমি এসব সমস্যা থেকে পৌরবাসীকে মুক্তি দিয়ে উন্নত পরিবেশবান্ধব সাতক্ষীরা উপহার দেবে। এখন আর মানুষ কারো কছে রিলিফ চায় না, নিজের জমিতে ফসল করে খেতে চায়। এখানে অল্প বৃষ্টি হলেই চারিদিক পানিতে তলিয়ে যায়। কারণ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খালগুলো ও নদনদী দীর্ঘদিন খনন না হওয়া। আমি এগুলো সঠিকভাবে খননের মধ্য দিয়ে জলবদ্ধতা দূর করবো। সাতক্ষীরায় থেকে বেকারত্ব দূর করার উদ্যোগ নেবো। সাতক্ষীরায় অনেক বিনিয়োগকারী আছেন তাদের উদ্ধুদ্ধকরণের মধ্য দিয়ে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ছোট ছোট শিল্প কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে এখানকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবো। এছাড়া এখানে অনেক সরকারি জমি রয়েছে। এসব জমি প্রভাবশালীরা দখল করে দীর্ঘদিন ভোগ করছে। প্রশাসনের সহযোগিতায় এসব জমি দখলমুক্ত করে শিল্প কল-কারখানা স্থাপন করে পিছিয়ে পড়া মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করবো- এমনটাই পরিকল্পনা আমার।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version