আরিফুল ইসলাম রোহিত: ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় অদম্য বাংলাদেশ’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সাতক্ষীরায় তিন দিনব্যাপী উন্নয়ন মেলার সমাপ্তি হয়েছে।
শনিবার (৬ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় মেলার সমাপনী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন শুধুমাত্র এই তিন দিনের মেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। মানুষের মাঝে আজ সবই দৃশ্যমান। কিন্তু আমরা এতই অকৃতজ্ঞ জাতি যে আমাদের কোনো ভালো কাজের কথা মনে থাকে না। আমরা সময়ের ব্যবধানে সবই ভুলে যাই। আর এজন্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উন্নয়ন মেলার যাত্রা শুরু করেছেন।
সাংসদ রবি আরও বলেন, এই সাতক্ষীরা একসময় রাস্তাকাটা, হরতাল আর মিছিলের শহর নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু আজ সেসব বদলে গেছে। প্রায়ই দেখা যায়, যারা সরকারের কাছ থেকে সুবিধা নেয় তারাই আবার সরকারেরই বিরোধিতা করে। এত অকৃতজ্ঞতা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা আমাদের এতো উন্নয়ন করে দিয়েছেন যে তা বলে শেষ করা যাবে না।
মুক্তিযোদ্ধা রবি পদ্মা সেতু তৈরির ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার অদম্য সাহসের কথা তুলে ধরে বলেন, বিশ্ব ব্যাংক যখন পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল করে দিয়েছিল তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে পদ্মা সেতু তৈরি করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন। আর সেসময় অনেকেই তাকে অবহেলা করেছিলো। কিন্তু সেই পদ্মা সেতু আজ শেষ হওয়ার পথে। এমন সাহসিকতার জন্যেই তাকে এই দেশের উন্নয়নের জন্য আবারও প্রয়োজন। আসলে শেখ হাসিনার সাহসিকতা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে।
এমপি রবি শেখ হাসিনার সার্বিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এমন একজন প্রধানমন্ত্রী আমরা পেয়েছি যিনি শুধু চ্যালেঞ্জ নিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করেননি, তৈরি হয়েছে পায়রা সমুদ্র বন্দর। যা এই দক্ষিণাঞ্চলের জন্য অত্যন্ত সুখকর বিষয়। এছাড়া তিনি কমিউনিটি ক্লিনিক সক্রিয় করেছেন, কতগুলো গণমাধ্যম চালু করেছেন, পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, কর্ণফুলী ট্যানেল চালু করা হয়েছে। হাজার হাজার মেগা প্রকল্প শুধু শেখ হাসিনার সরকারই করতে পেরেছে। কারণ তিনি চ্যালেঞ্জ নিতে জানেন। তিনি এই দেশকে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে চান। আর এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই তার এত উন্নয়ন।
মীর মোস্তাক আহমেদ রবি শেখ হাসিনার মার্কা নৌকায় ভোট দিয়ে এই উন্নয়নের ধারাবহিকতা বজায় রাখতে আহবান জানিয়ে বলেন, উন্নয়নের ধারাবহিকতা না থাকলে এই দেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়া সম্ভব নয়। তাই আসুন সকল ভেদাভেদ ভুলে নৌকা প্রতীকে আবারও ভোট দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে বিজয়ী করি।
সাতক্ষীরা স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন আয়োজিত ৪র্থ জাতীয় উন্নয়ন মেলা ২০১৮ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহসীন আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কাজী আব্দুল মান্নান।
স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক শাহ আব্দুল সাদী ও সহকারী কমিশনার আসফিয়া সিরাতের পরিচালনায় সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তহমিনা ইসলাম, সাতক্ষীরা সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী জি.এম আজিজুর রহমান, জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম আব্দুল্লাহ আল-মামুন, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দেবাশিস সরদার, জেলর আবু জাহেদ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা জ্যো¯œা আরা, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল কাদের প্রমুখ।
আলোচনা শেষে উন্নয়ন মেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত চিত্রাংকন, রচনা ও সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে প্রধান অতিথি পুরস্কার ও সনদ বিতরণ করেন। এছাড়া মেলায় সেবাদানকারী সেরা ১০টি স্টলকেও পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয়।
সাতক্ষীরায় উন্নয়ন মেলার সমাপনী উপলক্ষ্যে আলোচনা : শেখ হাসিনার সাহসিকতা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে: এমপি রবি
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/