মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: ১৯৭১ সালের ২৩ অক্টোবর যশোরের মণিরামপুরে পাকহানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকারদের হাতে পাঁচ সূর্য সন্তান নির্মমভাবে শহীদ হন। দীর্ঘ ৪৭ বছর পেরিয়ে গেলেও স্বাধীনতা পরবর্তী কোন সরকার এসকল শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি, বরং প্রতি বছর এদিনটিতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা মাজার জিয়ারতের মধ্যদিয়ে তাদেরকে স্মরণ করেন। শহীদ এ পাঁচ সূর্য সন্তানা হচ্ছেন-মুশফিকুর রহমান তোজো, সিরাজুল ইসলাম শান্তি, ফজলুর রহমান ফজলু, আহসান উদ্দীন খান মানিক ও আসাদুজ্জামান আসাদ।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধচলাকালীন সময় ২৩ অক্টোবর সকালে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রত্নেস্বরপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র এই পাঁচ যুবক। কিন্তু সেদিন স্থানীয় রাজাকার কমান্ডার মালেক ডাক্তারের নেতৃত্বে মেহের জল্লাদ, ইসাহাকসহ বেশ কয়েকজন রাজাকার তাদের আশ্রয়স্থল চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাদেরকে আটক করে। এর পর তাদেরকে চোখ বেঁধে চিনাটোলা বাজারের পূর্বপাশে হরিহরনদীর তীরে আনা হয়। তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয় ওই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত। ওই নির্যাতনের প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে শ্যামাপদ নাথ (৭৮) জানান, ওই দিন রাত আটটার দিকে চোখ বাঁধা অবস্থায় মুক্তিসেনা আসাদ, তোজো, শান্তি, মানিক ও ফজলুকে চিনাটোলা বাজারের কাছে হরিহরনদীর ব্রিজের পাশে আনা হয়। এর পরপরই তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় সৈয়দ মাহমুদপুর গ্রাম সংলগ্ন হরিহর নদীর তীরবর্তী স্থানে। তার কিছুক্ষণ পর রাজাকার কমান্ডারের বাঁশি বেঁজে উঠার সাথে সাথে গর্জে ওঠে রাইফেল। মুহূর্তের মধ্যে পাঁচ তরতাজা যুবকের নিথরদেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরদিন সকালে স্থানীয়রা তাদেরকে সেখানেই সমাহিত করেন।
মণিরামপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার হেরমত আলী জানান, চিনাটোলা বাজারের পাশে হরিহরনদীর তীরে ৫ শহীদদের স্মৃতি ও বধ্যভূমি সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে জানান।
মহান মুক্তিযুদ্ধে মণিরামপুরের পাঁচ সূর্য সন্তানের শাহাদত বার্ষিকী আজ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/