আব্বাস উদ্দীন, মণিরামপুর (যশোর): যশোরের মণিরামপুর উপজেলার সবজি’র রাজধানী খ্যাত শাহপুরের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে চাষ হয় শীতের সবজি শিম। তাই এ গ্রামকে অনেকেই শিম পল্লী হিসেবেও জানে। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। শাহপুর গ্রামের মাঠ জুড়ে চাষীরা চাষ করেছেন শিমসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। এ কারণে গ্রামটি মণিরামপুরের সবজির রাজধানী হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত।
সরেজমিনে শাহপুর গ্রামে গিয়ে কয়েকজন চাষীর সাথে কথা হয়। শিম চাষী তরিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণত জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম থেকে শিম চাষ শুরু হয়। বীজ রোপণের দেড়-দু’মাসের মাথায় ফল আসতে শুরু করে। আগে-ভাগে চাষ করতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যায়। আমি ২৫ শতক জমিতে শিম চাষ করেছি। চাষে সব মিলিয়ে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফল উঠানো শুরু করেছি, এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করেছি। প্রথম দিকে কেজি প্রতি ১২০ টাকা হারে, এখন ৫০-৬০ টাকা হারে বিক্রি করছি। গেল বারের তুলনায় এবার ফলন ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার অনেক লাভবান হবো বলে আশা করছি।
শিম চাষী মোরশেদ আলী বলেন, আমরা বিভিন্ন জাতের শিম চাষ করে থাকি। সাধারণত আমাদের এলাকায় ইন্ডিয়ান হাইব্রিড লালফুল, আইরেট, কাকরেশ, স্থানীয় বেগম জাতের শিম চাষ করা হয়।
শিম চাষী রবিউল ইসলাম বলেন, আমি একজন প্রান্তিক চাষী। অন্যের জমি লীজ নিয়ে ২০ শতক জমিতে শিম চাষ করেছি। এ আবাদ করেই সংসার চালাই। আমি ও আমরা বেঁচে থাকি।
শিম চাষী আবুল হোসেন বলেন, আমরা নিজেদের কায়দায় (প্রযুক্তি) ও বুদ্ধি দিয়ে শিম চাষ করি। কেউ আমাদের দিকে ফিরে তাকায় না। স্যারেরা ডিলারদের কাছে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকায় অধিকাংশ কৃষিজীবী মানুষ শিম চাষের সাথে জড়িত। শাহপুর গ্রামকে শিম পল্লী হিসেবেই মানুষ চেনে। চাষীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা একান্ত প্রয়োজন। এ ছাড়া বেগুন, পটল, করল্লা, বাঁধা কপি, ফুলকপি, মূলা, পালংশাক, গোলআলু, পেপে, মানকচু, ওলকচু, মুখি কচু, মেটে আলু, বরবটি, ঢেঁড়শ, মিষ্টি আলু, ঝিঙা, চিচিংগাসহ প্রায় সব ধরনের সবজি এ গ্রামের কৃষকরা চাষ করে থাকেন। এ কারণে অনেকেই এ গ্রামকে মণিরামপুরের সবজির রাজধানী হিসেবেও অনেকে চেনে।
মণিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মানিক সরকার বলেন, ভিটামিন ও খনিজ লবণ সমৃদ্ধ শিম একটি জনপ্রিয় সবজি। এই অঞ্চলের মাটি, জলবায়ু ও পরিবেশ শিম চাষের জন্য উপযোগী। কোন কর্মকর্তা ওই এলাকায় যায় না, তথ্যটি সঠিক নয়। তাদের তদারকি করা আমাদের দৈনন্দিন রুটিন ওয়ার্ক বলে তিনি দাবি করেন।
মণিরামপুরের শাহপুরের বিস্তীর্ণ মাঠ ভরে গেছে শীতের শিমে
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/