এমএ মামুন, দেবহাটা (সদর): ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন দেবহাটার চক মোহাম্মাদালীপুর গ্রামের সৈয়দ আকবর আলী। তার মত অনেকেই অনূকুল আবহাওয়া ও উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় ড্রাগন ফল চাষে ঝুঁকছে। ড্রাগন ফলের দাম ও চাহিদা বেশি হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন তারা কৃষকেরা।
সৈয়দ আকবর আলী জানান, ড্রাগনের বিষয়ে তেমন ধারণা না থাকায় প্রথমে ধান, পাট, সরিষার চাষ করেছেন। তারপর পোকামাকড় ও রোগ বালাইয়ের কারণে এসব ফসল চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। পরে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী কুমিল্লা অঞ্চলের ভালুকা থেকে ড্রাগন ফলের চারা সংগ্রহ করে এক বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান গড়ে তুলি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে একশ টাকা মূল্যে শতাধিক ড্রাগন চারা এবং সিমেন্টের পিলার নিয়ে বাগান তৈরি করেন। ক্ষেত তৈরি, গাছ লাগানো ও পরিচর্যা করতে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়। বর্তমানে গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে গাছগুলো থেকে ২০ কেজি ফল বিক্রি করা হয়েছে। যা থেকে তিনি এ বছর বার হাজার টাকা আয় করেছেন। এ বছর ৫০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা দরে ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে। তিনি নতুন করে এ বছর ৭২টি গাছ রোপণ করেছেন।
ড্রাগন ফলের বাগান দেখতে আসা কবির হোসেন, আজিজুল হক, নাসির উদ্দীন বলেন, আমরা ড্রাগন ফল কি চিনতাম না। সৈয়দ আকবর আলীর চাষ দেখতে এসেছি। শুনেছি এই ফলে প্রচুর ভিটামিন ও পুষ্টি রয়েছে। পাকা ড্রাগন ফল খেতে নাকি খুবই সুস্বাধু।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার ইব্রাহিম খলিল বলেন, ড্রাগন ফল বিদেশী ফল। এ গাছের আদিনিবাস দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা, বিশেষ করে মেক্সিকো। এই গাছ দ্রুত বর্ধনশীল গ্রীষ্ম ম-লীয় ক্যাকটাস গাছগণের অর্ন্তভুক্ত। বর্তমানে এটি নতুন ফল হিসাবে খুবই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সৈয়দ আকবর আলীর ড্রাগন চাষ দেখে স্থানীয় আরো অনেকে এ ফল চাষে এগিয়ে আসছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জসিমউদ্দীন বলেন, এশিয়া মহাদেশের চায়না, মালয়েশিয়া ও শ্রীলংকায় এ ফল ব্যাপক চাষ হচ্ছে। বাংলাদেশের আবহাওয়া ড্রাগন ফল চাষ উপযোগী। প্রচ- খরায় সেচ ও জৈব সার দেয়া ছাড়া ড্রাগন চাষে কোনো বাড়তি খরচ নেই। রোগবালাই মুক্ত ড্রাগন গাছ একবার লাগালে শুধু পরিচর্যা করলে ৩০ থেকে ৪০ বছর একনাগাড়ে ফল দেয়। এ ফল চাষ অত্যন্ত লাভজনক।
দেবহাটায় সম্ভাবনাময় ড্রাগন ফল চাষে সফলতার হাতছানি
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/